★ গল্প, তবে বাস্তব ★

ঈশ্বর সব কিছুর
আত্মা তৈরী করে তাদের আয়ু নির্ধারণ করে দিলেন।

মানুষ ভাগে পেল 20 বছর।

কিন্তু লোভী মানুষের এতে হলো না। তারা বলতে লাগল, আমরা হলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব। আমরাই পৃথিবীর শাসক। আর আমাদেরই আয়ু মাত্র 20 বছর!

নাহ্। এটা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। কিছু একটা করতেই হবে।

মানুষের আত্মারা সবাই
যেয়ে ঈশ্বরকে বলল তাদের আয়ু বাড়িয়ে দিতে।

কিন্তু কোন মতেই কিছু হল না। মানুষরা অনেক কান্না-কাটি করার পড় ঈশ্বর তাদের একটা পথ বলে দিল, যদি তোমরা কারো কাছ থেকে আয়ু ধার করে আনতে পার। তবেই
তা তোমাদের আয়ুর সাথে যোগ করে দেওয়া হবে।

তো আর কি করা, মানুষেরা একদিন বেড়িয়ে পড়ল স্বর্গের রাস্তায়। চলতে চলতে দেখে এক জায়গায় কিছু গরুর আত্মা বসে আছে।

তো তারা তাদের
কাছে যেয়ে জিজ্ঞাসা করল, আচ্ছা তোমরা পৃথিবীতে যেয়ে কতদিন বাঁচবে?

গরুঃ 25 বছর। কেন?

মানুষঃ 25 বছর! আর
আমরা মানুষরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব হয়ে বাঁচবো মাত্র 20 বছর? বলতো এটা কি ঠিক?

গরুঃ তো আমরা কি করতে পারি?

মানুষঃ আরে গরু, তোমরা অতদিন বেঁচে কি করবা? পৃথিবীতে যত দিন বাঁচবা ততই তো তোমাদের কষ্ট বেশি হবে। আমরা তোমাদের দিয়ে হাল চাষ করাব,
গাড়ি টানাবো আরও কত কাজ করাব। তাই বলছি, আমাদের কিছু আয়ু দিয়ে দাও।

গরু মানুষকে 10 বছর আয়ু দিয়ে দিল।

মানুষরা আবার পথ চলতে লাগলো। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলো কিছু গাধার আত্মা দাড়িয়ে রইছে।

মানুষ তাদের
কাছে যেয়ে জিজ্ঞাসা করল, পৃথিবীতে তোমাদের আয়ু কতদিন?

তারা বলল, 40 বছর।

মানুষরা তো অবাক।

মানুষরা গাধাকে ও কাজের ভয়, কষ্টের কথা বলে তাদের থেকে 15 বছর আয়ু ধার নেয়।

কিন্তু লোভী মানুষ এতেও সন্তুষ্ট হয়না। তারা আবারও চলতে থাকে।

এবার তারাা কিছু শকুনের আত্মাকে পায় এবং জিজ্ঞাসা করে, তোমরা কত দিন বাঁচবে?

তারা বলে, 200 বছর।

মানুষরা হতবাক হয়ে যায়।

মানুষঃ আমরা মানুষ হয়ে অতদিন বাঁচবো না। তোমরা অতদিন বেঁচে কি করবে? আমরা মানুষরা গরু, ছাগল ইত্যাদি খেয়ে ফেলব। চিকিৎসা করে পশু-পাখির রোগ সারাবো। তোমরা তো তখন
না খেতে পেয়ে মরবে। তাই কিছু আয়ু আমাদের দিয়ে দাও।

শকুন বলে, আচ্ছা তোমাদের যত আয়ু লাগে আমাদের কাছ থেকে নিও।

মানুষ খুশি মনে পৃথিবীতে চলে আসে।

কিন্তু ধার করলে তো ধার শোধ করতে হয়।

তাই মানুষ পৃথিবীতে এসে 20 বছর মানুষের মতই বাঁচে। পড়াশোনা এবং বাপের হোটেল। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ হোটেল।

তারপরই বউ-বাচ্চার জন্য 30-45 বছর গাধার মত খাঁটে। তাদের সখ-আহ্লাদ, সংসার, বাচ্চা-কাচ্চা মানুষ করে।

তাদের মানুষ করে অবসর নিয়ে 45- সারা জীবন শকুনের মত বেঁচে থাকে। সন্তানদের দয়ার উপর চলতে হয় তাদের। শকুন যেমন খাবারের জন্য বসে থাকে। তেমনি মানুষও সন্তানের দয়ার আশায় বসে থাকে। এমনকি তাদের আশ্রয় হয় বৃদ্ধাশ্রমে।