বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যর এক অনন্য নিদর্শন রামসাগর দিঘী। 🌊🌊🌊

in Steem For Traditionlast year

হ্যালো বন্ধুরা।



সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি।




আশা করি আপনারা যে যেখানে রয়েছেন সবাই সুস্থ,সুন্দর রয়েছেন আর Steem For Tradition এর সাথেই রয়েছেন।



আজকে আমি আপনাদের সাথে আমাদের দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি স্থান রামসাগর এর কিছু তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।



পরিচিতি
রামসাগর দিঘী দিনাজপুর জেলা সহর থেকে প্রায় ৯ কিমি দূরে তাজপুর নামক গ্রামে অবস্থিত। এটি লম্বায় প্রায় ১ কিমি এর বেশি এবং চওড়ায় ৩৫০ মিটারের বেশি। এই দিঘীর দুপাশে প্রায় ১০০+ প্রজাতির গাছ রয়েছে। অনেক বিল্পত প্রজাতির গাছের দেখা মিলবে এই দীঘীর পাড়ে। তবে সবচেয়ে বেশী রয়েছে আম ও লিচুর গাছ। এই দীঘীর গভীরতা প্রায় ১০ মিটার। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হয় দীঘীটিতে। তবে সবচেয়ে বেশি পাওয়া জায় রুই মাছ। এই দিঘীর মাছ খুবই সুস্বাদু। একবার এখানকার মাছ খাও্যার ভাগ্য হয়েছিল আমার।

1 copy.jpg



ইতিহাস

সাগরের কথা শুনলেই আমরা বড় বড় ঢেউ আর বাতাসের শব্দ শুনতে পাই কিন্তু উত্তরের কক্সবাজার খ্যাত এই দীঘীটির এত বিশাল ঢেউ না থাকলেও ছোট ছোট ঢেও আর বাতাস আপনার পারন শিতল করতে যথেষ্ট। দিনাজপুরের অন্যতম রাজা ছিলেন প্রাননাথ। ১৭৫০ সাল থেকে ১৭৫৫ এই ৫ বছর ধরে প্রায় ১৫ লাখ শ্রমিক কাজ করেছিল দীঘীটি খনন করতে। এই পুকুরের একটি বিশেষত্ব হলো এর পানি কখনোই শুকায় না। এই পুকুরের নামকরন নিয়ে সঠিক কন তথ্য নপাওয়া জায় না। যা শোনা জায় তা হলো লোকমুখের প্রচলিত কাহিনি।

4 copy.jpg



নামকরনের কাহিনি

রাজা প্রাননাথের সময় একবার অনাবৃষ্টি ও ক্ষরা দেখা দেয়। সে সময় পানির অভাবে হাজার হাজার প্রজার জীবনে নেমে আসে সীমাহীন কস্ট এছাড়াও পানির অভাবে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে দুরভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়। রাজা স্বপ্নে দেখলেন এই সমস্যা থেকে উত্তরনের জন্য তাকে একটি দীঘী খনন করতে হবে। এরপর রাজা হাজার হাজার শ্রমিক লাগিয়ে মাত্র ১৫ দিনের মাথায় দীঘীটি খনন করে ফেললেন। এবার দীঘী খনন শেষ হলেও দীঘিটিতে কোন পানি ঊতছিল না। এবার রাজাকে আবার স্বপ্নে দেখানো হলো তার ছেলেকে দীঘীর মাঝে বলি দিলেই ্দীঘীটি পানি পূর্ণ হবে।

2 copy.jpg



স্বপ্ন অনুযায়ী রাজা দীঘীর মাঝে একটা ছোট মন্দির নির্মাণ করলেন এবং পুকুর পাড় ধরে সিড়ি বানালেন। রাজা তার ছেলে প্রাণ্নাথকে তার স্বপ্নের কথা শোনালেন। ছেলে প্রজাদের কষ্ট দেখে আর বাবার সবপ্নের কথা বিবেচনা করে বলি হতে রাজি হলেন। কেউ কেউ বলে হাইর পিঠে আবার কেও বলে ঘোড়ার পিঠে করে প্রাননাথ মন্দিরের দিকে অগ্রসর হবার পর মন্দিরের কাছাকাছি আসা মাত্রই মাটি থেকে পানি ঊঠতে শুড়ু করে এবং কিছুসময়ের মাঝেই দীঘী পানি পূর্ণ হয়ে জায় এবং ছেলে প্রান্নাথ দীঘীতে তলিয়ে জায় এবং ছেলের মুকূট পানিতে ভাসতে থাকে। সেই ত্থেকেই এর নামকরন করা হয় রামসাগর।

6.jpg



আরো যা রয়েছে

রামসাগরের পশ্চিম পাড়ে একটি মিনি চিড়িয়াখানা রয়েছে। এখানে অজগর ,হরিন, বিভিন্ন পাখি, বানর রয়েছে। এছাড়াও বাচ্চাদের আনন্দ দেয়ার জন্য রয়েছে ছোট একটি শিশু পার্ক। এছাড়াও একটি সুন্দর মসজিদ রয়্যেছে। দূর থেকে আসা পর্যটকদের পিকনিকের রান্না ও খাওয়ার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি স্থান। রাতের বেলায় চাদের আলো আর দীঘীর পানি মিলে এক অন্য রকম পরিবেশের সূচনা হয় এটি উপভোগ করার জন্য রয়েছে একটি বাংলো।

8.jpg

9.jpg

10 copy.jpg



আমার অভিজ্ঞতা
রামসাগর দীঘি দেখতে আমি অনেক বার গিয়েছি। আনু মানিক ৮/১০ বার তো হবেই। ২০০৮ সালে প্রথম আমি রামসাগর দেখতে গিয়েছিলাম। দিনাজপুরে বাড়ি অথচ রামসাগর দেখেনি এমন মানুষ খুজে পাওয়া কঠিন। রামসাগরের যে ব্যপারটি আমাকে বিশেষ ভাবে টানে তা হলো এর নির্মল প্রকৃতি। পুকুরের চারপাশের সবুজ গাছপালা আর পুকুরের পরিষ্কার জল সব কিছু জেন মিলে মিশে একাকার। পুকুর পাড়ে বসে প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আমি প্রয়ই ছুটে যাই এখানে। এই জায়গাটির প্রধান বৈশিষ্ট হলো এখানে অন্যন্য জায়গার মতো এত কৃত্তিমতার ছোয়া লাগেনি। প্রক্রতিতির ডাক সোনার জন্য আমি যত বার গিয়েছি ততবারই এখান থেকে সুন্দর অভিজ্ঞতা নিয়ে এসছি।

7.jpg



28.jpg

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি।🌸🌸🌸

Sort:  
 last year 

রামসাগর দিঘি আমি অনেক কয়বার গেছিলাম, আমি যখন দিনাজপুরে ছিলাম তখন আমি প্রায় শুক্রবার করে যেতাম।আর এখন আমি বাসায় থাকার কারনে রামসাগর যাওয়া হয় না। তবে আমরা কয়জন বন্ধু মিলে যেতে চাইছিলাম, দেখি যাইতে পারি কি না। আপনার পোস্ট খুব সুন্দর হয়েছে ভাই, আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটা পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য

 last year 

রাম সাগর দিঘি দেখতে আমি অনেক আগে গিয়েছিলাম, তবে সেটা ভালোভাবে মনে নেই কবে গিয়েছিলাম, ভাইয়ার সাথে দিনাজপুর আরছিলাম ঘুরতে তখন ভাইয়া নিয়ে গিয়েছিল দেখাতে, দেখে অনেক ভালো লাগছে। আপনি অনেক সুন্দর উপস্থাপন করছেন ভাই অনেক ভালো লাগলো, সময় করে যাবো একদিন রামসাগর দিঘি আবারো দেখতে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে

Loading...
 last year 

রামসাগর নিয়ে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন। এটি দিনাজপুরের ঐতিহ্য বাহী ভ্রমন স্থান। এই ভ্রমন স্থানে আমি অনেক আগে গেছিলাম। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে সেয়ার করেছে।সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখেছেন। ধন্যবাদ।

 last year 

আমাদের দিনাজপুর জেলার রামসাগর নিয়ে সুন্দর একটি উপস্থাপনা। আমি প্রায় ১০-১১ বছর আগে এই রামসাগরে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম। তখন এই চিরিয়াখানা ছিল না। ছবিগুলো অসাধারণ হয়েছে।

 last year 

রামসাগর আমাদের বাসা থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রামসাগর ১৭৫৫ সালে এর শুভ উদ্বোধন হয় আমার জানা মতে। আমি ২ বছর আগেই এই রামসাগর ঘুরতে গেছিলাম । অনেক পর্যটন এই রামসাগরে ঘুরতে আসে। আপনার পোস্ট পড়ে ভাল লাগল
এবং বেশ সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন।

 last year (edited)

রামসাগর যাওয়ার বেশ কয়েকবার সুযোগ হয়েছিল।অনেক সুন্দর একটি জায়গা। নতুন কেউ দিনাজপুরে যদি আসে সে অবশ্যই রামসাগরে যেতে চায়। কারণ রামসাগর ঘিরে রয়েছে অনেক ইতিহাস। তাছাড়া রামসাগরের আয়তন বিশাল হওয়ার কারণে অনেকে দেখতে আসে এখানে। ভালো লিখেছেন শুভকামনা রইল

 last year 

দিনাজপরের ঐতিহ্যবাহী জায়গা রামসাগর। রামসাগর একবার গেছিলাম। পুরো রামসাগর হেঁটে হেঁটে ঘুরছি। আপনি সুন্দর করে উপাস্থপনা করেছেন ভাই। ধন্যবাদ

 last year 

আমি যখন মহিলা সরকারি কলেজে পড়তাম তখন বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম। রামসাগর জায়গাটি ছায়া নিবিড় ও প্রাকৃতিক দৃশ্যর মানুষ যায়।সেখানে একটি বড় পুকুর ও আছে। অনেকে সেখানে পিকনিক খেতে ও যায়।

 last year 

রামসাগর স্থাপিত হয় ১৭৫৫ সালে এটা কিন্তু আমার জানা ছিল না আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম। রামসাগর ২ বছর আগে আমি আর আমার স্ত্রী সহ ঘুরতে গেছিলাম । আমাদের বাসা থেকে রামসাগর প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে হবে। আপনার পোস্ট পড়ে সবকিছুই জানা হয়ে গেল আর বেশ সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.11
JST 0.031
BTC 67731.65
ETH 3780.34
USDT 1.00
SBD 3.51