আমার এলোমেলো দিন

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

যেদিন মনে অনেক বেশিই আনন্দ থাকে সেদিন মনে হয় দিনটাকে একটু আলাদাভাবে উদযাপন করি। যথারীতি একথা ভেবেই শুরু হলো আমার এলোমেলো দিন।

প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে হালকা ফ্রেশ হয়ে সর্বপ্রথম ভিডিও কল করি আমার দাদাকে । কারণ দাদার মহানুভবতা আমাকে প্রেরণা যোগায়। এজন্য দাদাকে দেখে আমার সকাল হয়। আজকেও যথারিতী তাই হয়েছে। প্রথমে দাদাকে কল করলাম কথা বললাম কেমন আছে ,কি করছো, ঔষধ খেয়েছে কিনা ইত্যাদি। এরপর শুরু হলো আমার এলোমেলো দিন।

20230224_101222.jpg

এলোমেলো দিনের প্রথম ছবি । দাদার সাথে কথা বলা শেষ করে ছাদে বসে রোদ পোহাচ্ছি আর একাধারে ছবি তুলছি, ভিডিও করছি।

20230224_101152.jpg

এভাবেই চলতে থাকল কিছুক্ষণ তারপর ছাদে প্রচুর রোদ থাকায় চলে আসলাম রুমে । রুমে এসে কম্পিউটার নিয়ে বসলাম ভাবলাম একটু ভিডিও এডিট করব কিন্ত দুর্ভাগ্যবসোতো সেটা হলো না । তখন কিছু খেয়ে নিলাম। খাওয়ার পর নিজের ইউটিউব চ্যানেল এর জন্য ভিডিও ছাড়লাম । এরপর ভাবলাম পরীক্ষা চলছে তাহলে একটু পড়া উচিত।

তখনি বাসার পোলাপান সব এখানে ওখানে ঘুরতে চলে গেল। শুরু হলো মন খারাপ হওয়া । কি করি এই ভেবে মনে পড়ল আমার কাছে যে টাকা নাই আছে মাত্র 10 টাকা । তখন সব চিন্তাগুলো নিমেশেই ধুলোয় মিশে গেল।

মনে মনে প্রচন্ড রাগ হচ্ছিল। আর ভগবানকে বলতে ইচ্ছা হচ্ছিল। আজ গরিব বলে তুমি আমার সাথে এমন খেলা খেলছ।

অবশেষে একটা কথা মাথায় আসল । মা যে আমার জন্য কাকার কাছে টাকা পাঠিয়েছিল। তখন ফোন করলাম কাকাকে । সে বলল আয় টাকা দিচ্ছি।

তখনই মনে পড়ল আমি মা এবং দাদার অনুমতি না নিয়ে কোথাও যাই না। মা এর অনুমতি তো 100% পাব এটা আমি জানতাম কিন্ত ভয়ে ছিলাম দাদা অনুমতি দেবে কিনা।

কল করলাম দাদাকে কলটা কেটে দিল। মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল তাহলে কি আমার যাওয়া হবে না। আর দাদা একবার কল কাটলে আমি দ্বিতীয়বার দাদাকে কল করি না কারণ আমি জানি দাদা নিতান্তই ব্যস্ত না থাকলে আমার ফোন কখনোই কাটে না। এরপর দাদাকে কিছু ম্যাসেজ করলাম নো রিপ্লাই। মনটা শেষ।

ম্যাসেজ দিতেই থাকলাম কারণ পরীক্ষা চলছে আমার এজন্য দাদাকে না বলে গেলে দাদা কিছু বলতে পারে। রিপ্লাই এর অপেক্ষা করতে লাগলাম অনেকক্ষণ কিন্ত কোনো রিপ্লাই নাই।

শুরু হলো রাগের পালা এ দাদা যা বলে বলুক আমি বাড়ি যাব তো যাবই। যদি কিছু বলে তখন বলল আপনি তো ফোন ধরেন নি দোষ তো আপনার।

এই ভেবে স্নান করে পূজো দিয়ে বাসা থেকে বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

বাড়ি যেতেই প্রথমে নদী । ফোনটা বের করে প্রিয় নদীর ছবিটা তুলে নিলাম।

20230224_144331.jpg

20230224_173448.jpg

তারপর বাড়ির দিকে যেতে যেতে একটু ক্লান্ত হয়ে বাড়ির কাছে একটা দেকানের বেঞ্চ এ শুয়ে মৃদু হাওয়া খাচ্ছিলাম আর পাগলের মত একাধারে বিভিন্ন ধরনের ছবি তুলছিলাম।

20230224_145955.jpg

20230224_145907.jpg

20230224_150034.jpg

ছবি তোলার মাঝে দাদা ফোন দিল। বলছে কেমন আছিস, কোথায় তুই। আমি বললাম আপনাকে কল ম্যাসেজ দুটোই করে কোনো রিপ্লাই না পেয়ে বাড়ি চলে আসছি। দাদার প্রথম কথা ছিল ভালো কাজ করেছিস। কারণ দাদা জানে আমি একা থাকতে একটু বেশিই ভয় পাই এজন্য সবাই আমায় ছেড়ে চলে যায়। দাদা তখন অনেক কথা বলল শুনলাম ।

এরপর বাড়ি গেলাম। বাড়ি গিয়ে আমার প্রিয় মুরগির মাংস খেলাম। কি সুস্বাদু খেতে । এটা ভেবে জিভে জল চলে আসছে। ইচ্ছামত খেলাম।

20230224_161256.jpg

ধানক্ষেতটা একটু দেখলাম।

20230224_153152.jpg

এরপর প্রানপ্রিয় ভাগনী যে কিনা আমার কাছেই আসতে চায় না কারণ খুব কমই দেখা হয় তার সাথে একারণে আমার কাছে আসতে চায় না তাই তাকে কলার লোভ দেখিয়ে ওর থেকে বিনিময় ভালোবাসা নিলাম।

20230224_170826.jpg

সবার থেকে ভালোবাসা নিয়ে বাসায় আসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তখনই দেখা হলো আমার প্রিয় কাকা যাকে আমি দোস্ত বলে ডাকি।
তাকে বললাম আয় একটা ছেলফি উঠি কিন্ত সে রাজি হলো না এর পিছনে অনেক বড় একটা কাহিনী লুকিয়ে আছে । কোনো একদিন সময় করে বলব। সে মোটেও ক্যামেরার সামনেই আসবে না তাই জোর করে তার সাথে যে ছবিটা উঠলাম।

20230224_171318.jpg

দিনাটার মধ্যে ভালো লাগা খারাপ লাগা সবকিছুই ছিল। এই সবকিছু নিয়েই ফিরে আসলাম নিজের গন্তব্যে।

পোস্টটি কেমন হয়েছে পড়ে জানাবেন। আর সবাই পরিবারকে নিয়ে সুখে থাকবেন।