১ম পর্ব| ব্যবসার অভিজ্ঞতা by @bull1(10% shy-fox এর জন্যে)
৮ই নভেম্বর‚২০২২‚ মঙ্গলবার
পোস্টের নাম | ব্যবসার অভিজ্ঞতা |
স্থান | চন্দননগর |
পোস্টদাতা | @bull1 |
কেমন আছেন সবাই? আমি @bull আজ আপনাদের কাছে আমার ব্যবসার কিছু ভালো আর খারাপ অনুভূতি শেয়ার করছি। অভিজ্ঞতা ধরলে এটা নিছকই অভিজ্ঞতা আবার অভিজ্ঞতালব্ধ শিক্ষা ধরলে তা অবশ্যই শিক্ষা।
প্রথমে বলব ব্যবসার উদ্যোগ নিয়ে। আমার দেখা অনেকেই ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাহস করে উঠতে পারে না। আমিও তেমনই ছিলাম। তাছাড়া কি নিয়ে ব্যবসা করব তা নিয়েও দ্বিধান্বিত ছিলাম। ঠিক বুঝে উঠতে পারতাম না যে কি করা উচিত। এমন সময় ঘটনাচক্রে এক গোশালায় গেলাম। সে এমন গোশালা যে আমাদের পাশের গ্রামের এক কোনে থাকলেও কেউ তার সম্পর্কে জানতই না। আমি নিজেই সেদিন প্রথম শুনলাম। ওদিকে অনেকে গরু পোষে তা জানতাম। অনেকেরই ব্যক্তিগত গোশালা থাকাটাও স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু এইভাবে রীতিমতো বানিজ্যিক গোশালা আমাদের এলাকায় আছে আমরা কেউই জানতাম না।
কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম যে সেই গোশালার ক্রেতারা কেউই স্থানীয় না। কলকাতা - যাদবপুর - বালীগঞ্জের অভিজাত এলাকা থেকে বাসিন্দারা রীতিমতো গাড়ি পাঠিয়ে দেয় এই গোশালা থেকে দুধ - মাখন - ঘি নিয়ে যাওয়ার জন্যে।
কিন্তু কেন? কারণ সেখানে যা পাওয়া যায় তার সবই ১০০% খাঁটি জিনিস। তাই জায়গামতো সব বিক্রি হয়ে যায়।
আর সেখান থেকেই আমি আমার ব্যবসার আইডিয়া পেয়েছিলাম। যে আমি ১০০% খাঁটি মশলা বিক্রি করব। আর সাথে বিক্রি করব ড্রাই ফ্রুটস। আর সেটাই আমি করছি।
এবার আসি অন্য একটা প্রসঙ্গে। বিশ্বাস করে ঠকে যাওয়া।
একটা কথা খুব করে প্রচলিত আছে যে বাঙালির দ্বারা নাকি শেয়ারে ব্যবসা হয় না। কথাটা কতটা জাতিবিদ্বেষমূলক তা আমি জানিনা কিন্তু আসলেই আমি শেয়ারে ব্যবসা করতে পারিনি। আমার সেই প্রথম উদ্যোগ খুব বাজে ভাবে ব্যর্থ হয়েছিল আমার ব্যবসার পার্টনারের জন্যে।
মসলা বা ড্রাই ফ্রুটস - এসব নিয়ে আমার তেমন কোনো ধারণা ছিলো না। কারণ আমি রান্নাঘরে একদমই যাইনা আর আমাদের খাদ্যাভ্যাস এর জন্যে ড্রাই ফ্রুটসও তেমন খাওয়া হয় না। তাই এই বিষয়ে মোটামুটি কিছু জানে‚ এমন একজনের সাথে জোট বাঁধলাম ব্যবসার জন্যে। যে টাকা আমি দেব‚ ও কেনাকাটাটা দেখবে। বিক্রি দুজন মিলে করব। বেশ চলছি ব্যবসা। আমার ধারণা ছিলো না যে এই জিনিসের পাইকারি দাম কেমন বা লাভ কেমন হয়। তাই হাতে যা আসছিল তা নিয়েই খুশি ছিলাম।
কিন্তু সমস্যা হল আমি নিজেই যেদিন পাইকারি দোকানে চলে গেলাম খেয়ালের বশে। আর গিয়েই তো আমার মাথায় হাত। এত দিন ধরে যা কিছু কেনা হয়েছে‚ তার দাম পাইকারি দামের থেকে যথেষ্ট বেশী। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তো মাত্রাতিরিক্ত বেশী। যেমন পোস্তর দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত বেশী দেখানো হয়েছে। খেজুরের দাম প্রতি প্যাকেটে ১০% এরও বেশী ধরা হয়েছে। এছাড়া অন্য সব জিনিসের দামও আমায় বেশী দেখিয়ে সব টাকা সে লুটে নিয়েছে। অর্থাৎ সোজা ভাষায় আমার অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে আমায় লুট করা হয়েছে।
সেদিনই ওর সাথে শেয়ারে ব্যবসা বন্ধ করে দিলাম আমার হাতে টাকা নেই এই অজুহাতে। হিসাব করে ওর যা প্রাপ্য হয় তা মিটিয়ে দিলাম। তারপর নিজের হাতেই শুরু করলাম সবকিছু করা। টাকাপয়সার বিষয়ে আর কাউকে বিশ্বাস করলাম না।
এই ঘটনা আমার জন্যে খুব বড় শিক্ষা ছিল একটা।
( চলবে)
আমার কথা -
আমি @bull1 পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় থাকি। বয়স ২৮ বছর। ছাত্রজীবনে ইতিহাসে আর অঙ্কে গ্র্যাজুয়েট কমপ্লিট করেছি। এখন শিক্ষকতা করি। আর টুকটাক লেখালেখি করার অভ্যাস আছে। |
---|