লেভেল ওয়ান হতে আমার অর্জন - By @didar001
হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন । আমিও অনেক ভালো আছি । সবার জন্য দোয়া এবং ভালোবাসা নিয়ে আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" এর এবিবি স্কুলের লেভেল ওয়ানের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতেছি। এই লিখিত পরীক্ষায় আমি লেভেল ওয়ানের ক্লাস করে কি কি শিখেছি সেই বিষয় গুলো সম্পর্কে আমি আমার নিজের মত করে আপনাদের কাছে তুলে ধরবো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে এবং যারা আমার মত নতুন তারা এই পোস্ট থেকে কিছুটা ধারনা পাবেন।
আমার বাংলা ব্লগের এবিবি স্কুলের লেভেল ওয়ানের আমাদের ক্লাস করিয়েছেন আমার বাংলা ব্লগের সম্মানীত মডারেটর @kingporos এবং @rupok ভাই।উনাদের ক্লাস করে আমি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি যেমন; স্টিমিট কী,ব্লকচেইন কী এবং কিভাবে নিয়ন্ত্রন হয়?,স্পামিং,এবিউজ,রি-রাইটি কী , এবং কিভাবে স্টিমিটে কাজ করতে হবে ইত্যাদি সম্পর্কে দিক নির্দেশনা পেয়েছি।
যাই হোক কথা না বাড়িয়ে চলে যাই আজকের লিখিত পরীক্ষায়।
প্রথমে আমি আপনাদেরকে ব্লকচেইন সম্পর্কে আমার নিজের ভাষায় মতামত শেয়ার করবো তারপর ধারাবাহিক ভাবে প্রতিটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা আমি লেভেল ওয়ানের ক্লাসে শিখেছি।
০১ঃ ব্লকচেইন কী?
- উত্তরঃ এক কথায় বলতে গেলে ব্লক চেইন হলো অনেক গুলো ব্লক বা ট্রানজেকশনের সমন্বয়ে তৈরি হওয়া রেকর্ড বা চেইন যা ব্লকচেইন নামে পরিচিত। অর্থাৎ আমরা যে স্টিমিটে পোস্ট , লাইক ,কমেন্ট করি বা ট্রান্সফার করি এই কাজগুলো হচ্ছে এক একটা ব্লক বা ট্রানজেকশন আর এই ব্লক বা ট্রানজেকশন গুলো যখন অনেকগুলা একসাথে একত্রে জমা হয়ে একটা চেইন তৈরি করে তখন সেটাকে ব্লকচেইন বলা হয়ে থাকে।অর্থাৎ ট্রানজেকশন গুলো সব একটি লেজারে রেকর্ড হয় আর যে লেজারে রেকর্ড হয় সেটাই হচ্ছে ব্লকচেইন। স্টিমিটে প্রতি ৩ সেকেন্ডে প্রায় ৪০ টার মত ট্রানজেকশন হয়ে থাকে। ব্লক চেইন কোনো একক মালিকের অধিনে থেকে নিয়ন্ত্রন হয়না বরং প্রতিটা কম্পিউটার বা ইউজার এর নিয়ন্ত্রক । অর্থাৎ ব্লকচেইন এক জায়গা থেকে বা কেন্দ্রিয় কোনো অংশ থেকে নিয়ন্ত্রন হয়না এটা সম্পূর্ন বিকেন্দ্রিকরণ ভাবে নিয়ন্ত্রন হয়। যার কারনে এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ একটা ব্যবস্থা ।
০২ঃ স্টিমিট কী?
- উত্তরঃ স্টিমিট হলো ব্লগ লিখে আর্নিং করার একটা মাধ্যম । যেখানে আমার সময় এবং পোস্টের জন্য আমাকে পেমেন্ট করা হয় এরকম একটি প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে স্টিমিট । স্টিমিটে কিভাবে পোস্ট করা হয়, কিভাবে আপভোট দেওয়া হয় এগুলো আমরা সবাই জানি তাই এগুলো নিয়ে বিস্তারিত কিছু বললাম না।
০৩ঃ কোন ধরনের এক্টিভিটিজ স্পামিং বলে গণ্য হয় ?
- উত্তরঃ স্পামিং হলো অবাঞ্চিত বা অযাচিত এবং অপ্রাসঙ্গিক কোনো কিছু বার বার করা। অর্থাৎ কাউকে তার অনুমতি ব্যাতিত কোন কিছু বার বার প্রেরন করা অথবা তাকে তার না চাইতেও বার বার মেনশন করা এই কাজগুলো স্পামিং । এ ছাড়াও আরো কয়েক ধরনের স্পামিং রয়েছে যেমন; ১ঃ কোনো ব্যাক্তিকে পোস্টের মধ্যে বারবার অপ্রাসঙ্গিক ভাবে মেনশন দেওয়া । ২ঃ একই ঘটনাকে বার বার ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বর্ণনা করে পোস্ট করা । ৩ঃ পোস্ট রিলেটেড ট্যাগ ইউজ না করে অপ্রাসঙ্গিক ট্যাগ ইউজ করাও এক ধরনের স্পামিং। ৪ঃ প্রতিটা পোস্টে প্রায় একই ধরনের কমেন্ট করা অর্থাৎ পোস্ট রিলেটেড কমেন্ট না করে বার বার ভিন্ন ভিন্ন প্রতিটা পোস্টে একই ধরনের কমেন্ট করা । এটাও এক ধরনের স্পামিং বলে গণ্য হবে। এছাড়াও আমার বাংলা ব্লগ এর নিয়ম অনুযায়ি কিছু স্প্যামিং যেমন; বার বার ম্যাক্রো পোস্ট করা হলে এবং চব্বিশ ঘন্টায় ৩ টির বেশি পোস্ট করা হলে সেটাও স্পামিং বলে গণ্য হবে।
০৪ঃ ফটো কঁপিরাইট সম্পর্কে আপনি কি ধারণা অর্জন করেছেন?
- উত্তরঃ কপিরাইট মানে হলো কারো উদ্ভাবিত পোড়াক্ট অর্থাৎ কারো ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রক্ষা করার একটি বিশেষ আইন। আর তাই যে ফটোতে কপিরাইট করা আছে সে ফটো স্টিমিটে ব্যাবহার করা যাবেনা।
কপিরাইট করা ফটো যদি ব্যাবহার করতে হয় তাহলে সেটার অথেনটিক মালিকের অনুমতি নিয়ে বা তাকে মেনশন করে করা যাবে কিন্তু এটা আর্থিক বেনিফিটের জন্য করা যাবেনা। স্টিমিট যেহেতু আর্নিং সাইট সেহেতু কপিরাইট করা কোনো কিছু অথেন্টিক মালিকের অনুমতি নিয়েও ব্যাবহার করা যাবেনা। অর্থাৎ একেবারে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ।
কিন্তু আমাদের অনেক পোস্টের জন্য অনেক সময় পোস্ট রিলেটেড ফটোর দরকার পরে সেক্ষেত্রে কপিরাইট ফ্রি কিছু ওয়েব সাইট রয়েছে যেখান থেকে ফটো সংগ্রহ করে ইউজ করা যাবে তবে সেক্ষেত্রেও ফটোর সোর্স পোস্টের মধ্যে উল্লেখ করে দিতে হবে । আমি তিনটি ওয়েব সাইটের নাম বলছি যেখান থেকে কপিরাইট ফ্রি ফটো সংগ্রহ করা যাবে
১ঃ https://pixabay.com
২ঃhttps://www.pexels.com
৩ঃhttps://www.freeimages.com
আপনারা গুগলে কপিরাইট ফ্রি ইমেজের জন্য সার্চ করলে আরো এরকম ওয়েবসাইট পেতে পারেন যেখান থেকে কপিরাইট ফ্রি ফটো সংগ্রহ করা যাবে।
০৫ঃ পোস্ট করার সময় ট্যাগ কেন ব্যবহার করতে হয় এবং কিসের ভিত্তিতে ট্যাগ নির্বাচন করতে হয় ?
- উত্তরঃ ট্যাগ হলো পোস্ট রিলেটেড কিছু সার্চ করার কী-ওয়ার্ড । অর্থাৎ যেসব কী-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে সেই কী-ওয়ার্ড রিলেটেড পোস্ট গুলো খুজে পাওয়া যায় এরকম কী-ওয়ার্ড গুলাই হলো এক একটা ট্যাগ। ট্যাগ ব্যাবহার করতে হয় যাতে কেউ ট্যাগ রিলেটেড পোস্ট সার্চ করে খুজে পায়। পোস্টের মধ্যে ট্যাগ ইউজ করতে হলে আমাদেরকে একটু সচেতন হতে হবে কারন যেই বিষয়ের উপর পোস্ট সেই বিষয় সম্পর্কিত ট্যাগ ইউজ না করে আমরা যদি অপ্রাসঙ্গিক কোনো ট্যাগ ইউজ করি তাহলে সেটা একদিকে যেমন স্প্যামিং এর আওতায় চলে আসবে আবার অন্য দিকে আপনার পোস্টও ট্রেন্ডিং এ থাকবেনা।
আপনার পোস্ট যদি ট্রাভেল সম্পর্কিত হয়ে থাকে তাহলে আপনি travel, tour, visit , nature ইত্যাদি এরকম ট্যাগ ইউজ করতে পারেন এতে করে কেউ এই কী-ওয়ার্ড গুলো দিয়ে সার্চ করলে আপনার পোস্টটা ট্রেন্ডিয়ে চলে আসবে।
০৬ঃ আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কি কি বিষয়ের উপর পোস্ট লেখা নিষিদ্ধ?
- উত্তরঃ আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে অনেক গুলো বিষয়ের উপর পোস্ট করা বা লিখালিখি করার উপর নিষধ করা হয়েছে। যেমন; রাজনৈতিক কোনো ব্যাক্তি বা দল নিয়ে পোস্ট করা নিষিদ্ধ, ধর্মীয় উস্কানিমূলক পোস্ট করা নিষিদ্ধ, শিশু শ্রম , নারী বিদ্বেষমূলক পোস্ট করা নিষিদ্ধ , সমাজের বর্ণবৈষম্য বা জাতি বিদ্বেষ ছড়ায় এমন কোনো পোস্ট করা নিষিদ্ধ, অপরাধ সমর্থন করে এমন কিছু পোস্ট করা নিষিদ্ধ , মিথ্যা গুজব ছড়ায় এমন কোনো পোস্ট করা নিষিদ্ধ, পর্নগ্রাফি, অশ্লিল পোস্ট করা নিষিদ্ধ, NSFW ট্যাগ ব্যাতিত যৌনতা ,পশুপাখি হত্যাজনিত পোস্ট করা নিষিদ্ধ।
০৭ঃ প্লাগারিজম সম্পর্কে আপনি কি জানেন?
- উত্তরঃ প্লাগারিজম হচ্ছে হুবহু বা আংশিক পরিবর্তন করে কারো লিখা নিজের নামে চালিয়ে দেওয়াকে প্লাগারিজম বলে । স্টিমিটে প্লাগারিজম করা মারাত্নক অপরাধ। তবে কারো লিখা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লিখতে চাইলে সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৭০ পার্সেন্ট লিখা নিজের হতে হবে বাকি ৩০ পার্সেন্ট লিখা নিতে পারলেও সেটা হবে যথাযত নিয়ম মেনে এবং সোর্স উল্লেখ করার মাধ্যমে।
০৮ঃ re-write আর্টিকেল কাকে বলে?
- উত্তরঃ রি-রাইট আর্টিকেল হলো আমরা যখন কোনো বিষয় সম্পর্কে লিখালিখি করতে চাই তখন আমাদের অনেক তথ্য দরকার হয় । আমরা যখন বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সেসব তথ্য সংগ্রহ করে সেই বিষয়টাকে নিজের মত করে লিখি তখন সেটাকে রি-রাইট বলা হয়। রি-রাইট করার ক্ষেত্রে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ লিখা নিজের থেকে হতে হবে এবং তথ্যগুলোর সোর্স উল্লেখ করে দিতে হবে । তথ্যগুলো পোস্টের মধ্যে ইনভার্টেড কমার ভিতরে রাখতে হবে।
০৯ঃ ব্লগ লেখার সময় re-write আর্টিকেলে কি কি বিষয় উল্লেখ করতে হবে?
- উত্তরঃ ব্লগ লিখার সময় রি-রাইট আর্টিকেলে যেসব বিষয় উল্লেখ করতে হয় তা হলো_ সংগৃহীত তথ্যগুলোর সোর্স উল্লেখ করতে হবে এবং তথ্য গুলোকে ইনভার্টেড কমার ভিতর রাখতে হবে। আর যে বিষয়ে লিখা হচ্ছে সেই বিষয়ে ৭৫ থেকে ৮০ পার্সেন্ট লিখা নিজের থেকে হতে হবে । আর কোনো ওয়েব সাইট থেকে পোস্টের জন্য ইমেজ সংগ্রহ করা হলে সেটা কপিরাইট ফ্রি হতে হবে এবং ইমেজের সোর্স ও উল্লেখ করতে হবে।
১০ঃ একটি পোস্ট কখন ম্যাক্রো পোস্ট হিসেবে গণ্য করা হয়?
- উত্তরঃ একটি মাত্র ছবি দিয়ে পোস্ট করা হলে বা ১০০ ওয়ার্ডের কম লিখে পোস্ট করা হলে সেটা ম্যাক্রো পোস্ট হিসেবে গণ্য করা হবে । আমার বাংলা ব্লগে ম্যাক্রো পোস্ট করা হলে সেটা কিউরেশনের জন্য বিবেচিত হবেনা।
১১ঃ প্রতি ২৪ ঘন্টায় একজন ব্লগার সর্বোচ্চ কতটি পোস্ট করতে পারবে ? [আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে]
- উত্তরঃ প্রতি ২৪ ঘণ্টায় একজন ব্লগার সর্বোচ্চ তিনটি পোস্ট করতে পারবে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে। এর বেশি করা হলে সেটাকে কমিউনিটির নিয়ম অনুযায়ি স্পামিং বলে গণ্য করা হবে।
এই ছিল লেভেল ওয়ানের ক্লাস থেকে আমার অর্জন । আমি ক্লাস করে এইসব বিষয় সম্পর্কে ধারনা লাভ করেছি ।
ধন্যবাদ সবাইকে.........
@didar001
আমি দিদারুল আলম,একজন স্বাধীনচেতা ও ভ্রমন পিপাসু মানুষ। নিজেকে মুসলিম এবং বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। নতুন নতুন জায়গায় ভ্রমন করতে পছন্দ করি, নতুন নতুন মানুষের সাথে মিশতে পছন্দ করি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যাক্তি হিসেবে খুবই লাজুক এবং অল্পতে সুখে থাকা মানুষ।
লেভেল ওয়ান আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবিবি স্কুল বেশ সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। বিশেষ করে দাদার মাধ্যমে প্রতিটা ইউজার নিজের মত করে কাজ করতে পারতেছে। আগে আমরা কাজ করার জন্য অন্যের কাছে শিখতে হতো, অন্যের দ্বারস্থ হতে হতো। আজকে এবিবি স্কুলের মাধ্যমে প্রতিটা ইউজার বেশ সুন্দরভাবে নিজের কাজ নিজে করতে পারতেছে। আপনি বেশ সুন্দরভাবে গুছিয়ে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। শুভেচ্ছা রইল।
হ্যা ভাই আমার বাংলা ব্লগের এই উদ্যোগটা সত্যিই অসাধারন । কেননা নতুন কেউ স্টিমিটে আসলে অনেক কিছুই জানেনা বা কিভাবে কি করলে ভালো হবে সেই বিষয়ে গাইড লাইন ঠিক মত কারো কাছ থেকে নিতে পারেনা । এই ক্ষেত্রে এবিবি স্কুলের মাধ্যমে নতুন ইউজাররা একেবারে প্রথম থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে সব বিষয়ে সঠিক গাইড লাইন পাচ্ছে এবং নিজেকে স্টিমিটে একজন দক্ষ ইউজার হিসেবে গড়ে তুলতে পারতেছে।
লেভেল ওয়ান সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা অর্জন করেছেন এবং খুব ভালোভাবে এই পরীক্ষাটি দিয়েছেন। আশা করছি ভালো কিছু হবে ধন্যবাদ।
ইনশা আল্লাহ আশা করি ভালো কিছু হবে । দোয়া করবেন ভাই।
জি ঠিক আছে।