বাংলাদেশের মৎস্য পরিচিতি (চতুর্থ পর্ব)। 10% for shy-fox
আসসালামু-আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভাল আছেন। বিভিন্ন ধরনের মাছের সম্ভাব নিয়ে আবারো হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সামনে। আগের তিনটি পর্বে মোট ২১ প্রজাতির মাছের বর্ণনা দিয়েছিলাম। এবারের পর্বে আরো থাকছে নতুন সাতটি মাছ। মাছগুলো বিভিন্ন এলাকার মানুষের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত হতে পারে। এদের মধ্যে কিছু মাছ হয়তো সব এলাকাতে দেখাও যায় না। বিভিন্ন বাজার থেকে সংগ্রহ করা এই মাছ গুলো এখন অনেকটাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যাই হোক কথা না বাড়িয়ে আসুন জেনে নেয়া যাক এ পর্বের মাছগুলো সম্পর্কে।
২২। চাপিলা
দেখতে অনেকটা ইলিশ মাছের বাচ্চা বা জাটকা ইলিশের মতো দেখতে হলেও এটা কিন্তু ইলিশ না। রূপালী বর্ণের এই মাছগুলোর নাম চাপিলা। এগুলো দৈর্ঘ্যে তিন চার ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই মাছগুলো পুরোপুরি নদীর মাছ। পুকুরে এগুলো চাষ হয় না। বিলুপ্তপ্রায় মাছ গুলির নামের মধ্যে এগুলোর নাম বেশ উপরের দিকে।
২৩। চাঁদা
রূপচাঁদা মাছ আমরা সবাই কমবেশি চিনি। দেখতে হুবহু রূপচাঁদার মত এই মাছগুলোর সঙ্গে পার্থক্য শুধুমাত্র আকৃতিতে। রূপচাঁদা মাছ আকারে বেশ বড় হয় আর এগুলো আকৃতিতে খুবই ছোট। এগুলো পুরোপুরি মিঠা পানির মাছ। বাংলাদেশের নদী নালা, খাল বিল, পুকুর ডোবা প্রায় সর্বত্রই এই মাছগুলো দেখা যায়। তবে আকৃতিতে ছোট এবং কাটা থাকায় মানুষের খাদ্য তালিকায় এ মাছের স্থান নিচের দিকে। মাছগুলো দৈর্ঘ্যে হাফ ইঞ্চি থেকে দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে আর দেহ স্বচ্ছ কাচের মত।
২৪। রিঠা
ক্যাটফিশ জাতীয় এই মাছগুলোর সঙ্গে অনেক মাছেরই মিল আছে। তবে সবচাইতে বেশি মিল বিদেশি মাগুর আর আইর মাছের সঙ্গে। তবে এই মাছ আইর মাছের তুলনায় আকৃতিতে একটু ছোট হয়ে থাকে। রিঠা মাছ খুবই সুস্বাদু একটি মাছ এবং কাটা খুবই কম। এ মাছগুলো মূলত নদীতে বসবাস করে।
২৫। টেংরা মাছ
এটি বাংলাদেশের বহুল পরিচিত একটি মাছ। বাংলাদেশের নদী নানা, খাল বিল, পুকুর ডোবা প্রায় সর্বত্রই টেংরা মাছ পাওয়া যায়। আমাদের দেশে সাধারণত তিন ধরনের টেংরা পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে খাটো টেংরা বা গুইটা টেংরা, একটা সাধারণ টেংরা আর অন্যটা আইর ট্যাংরা। টেংরা মাছের ফুলকার দুপাশে দুটো কাটা থাকে যার খোচা খুবই যন্ত্রণাদায়ক।
২৬। শোল মাছ
এটি মূলত একই রাক্ষুসে মাছ। সাধারণত খাল বিলেই এই মাছটি বেশি পাওয়া যায়। টাকি, শোল এবং গজার মূলত একই প্রজাতির তিনটি মাছ এবং দেখতেও প্রায় হুবহু একই রকম। শুধু পার্থক্য হচ্ছে টাকি মাছ একটু ছোট আকৃতির আর শোল মাছ তার চাইতে আরো বড় হয়ে থাকে। এই মাছের পেটের দুপাশে কালো বর্ণের ছোপ ছোপ দাগ থাকে। মাছগুলো সাধারণত বর্ষাকালে বংশবৃদ্ধি করে।
২৭। সরপুটি/পুটি কার্প
দেশি পুটির একটি প্রজাতি এই সরপুটি মাছ। দেশি পুটির তুলনায় এ মাছগুলো আকৃতিতে অনেকে বড় হয়ে থাকে। একটি মাছ সর্বোচ্চ প্রায় আধা কেজি পর্যন্ত হতে পারে। সংকর জাতের এই মাছগুলো সাধারণত পুকুর বা হ্যাচারিতে চাষ করা হয়।
২৮। রয়না/মেনি মাছ
এই মাছগুলো বাংলাদেশের অনেক জায়গা থেকেই ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে আর বাকি জায়গাগুলোতেও বিলুপ্ত হবার পথে। দেখতে তেলাপিয়া মাছের মত এ মাছগুলো ঝাক বেঁধে চলাফেরা করে এবং আকৃতিতে বেশ ছোট। কোথাও এই মাছগুলোকে বলা হয় রয়না আবার কোথাও বা মেনি মাছ। লাল লাল পাখনা আর বড় বড় চোখ বিশিষ্ট এই মাছগুলো খেতে খুবই সুস্বাদু।
আজকের মত এ পর্যন্তই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
Location | Tepakhola, Faridpur |
ভাই বরাবরের মতো আজকে চার নাম্বার পর্বেও বেশ কিছু মাছের ফটোগ্রাফ দেখলাম ৷ এর মধ্যে প্রায় মাছ চিনি ৷ তবে শুধু নামের ক্ষেত্রে পার্থক্য ৷ যা হোক অনেক ভালো লাগলো ৷ এর পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য। নতুন মাছ খুঁজে পাওয়া এখন অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। আশা করি খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হব।
রয়না বা মেনি মাছ আমাদের অঞ্চলে ঢেরাই মাছ নামে পরিচিত। ছোটবেলায় গ্রামের বাড়িতে গেলে দেখতাম নদীতে এই মাছগুলো খুবই পাওয়া যেত। তবে বর্তমানে নদীর এই মাছগুলো দেখতেই পাওয়া যায় না। কিছুদিন আগে একবার আব্বু কিনে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু সেগুলোর কালার দেখেই বোঝা যাচ্ছিল চাষ করা মাছ। খেতে খুবই খারাপ লেগেছিল। মাছ পরিচিতির এবারের পর্বটি দেখে ভালো লাগলো ভাইয়া। ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর হয়েছে।
রয়না মাছ যে আপনাদের এলাকায় ঢেরাই মাছ নামে পরিচিত তা এই প্রথম শুনলাম। আমাদের এলাকাতেও ছোটবেলায় এই মাছ প্রচুর দেখা যেত। এখন বহু বছর বাদে দেখতে পেয়ে এই ছবিগুলো তুলেছিলাম। ধন্যবাদ আপু
আপনি অনেকগুলো মাছের ফটোগ্রাফি এবং বর্ণনা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।মাছগুলোর সাথে পরিচিত হয়ে খুবই ভালো লাগলো। মাছগুলোর মধ্যে টেংরা মাছ আমার অনেক প্রিয়। আমি টেংরা মাছ খেতে অনেক বেশি পছন্দ করি। রিঠা মাছ আমি কখনো খাইনি।
রিঠা মাছ খুবই সুস্বাদু মাছ। তবে সব জায়গায় পাওয়া যায় না। আর টেংরা মাছ আপনার মত আমার ততটা পছন্দের নয়। আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার মৎস্য পরিচিতি পোস্ট আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। পোষ্টের মাধ্যমে অনেক মাছ দেখতে ও চিনতে পেরেছি। তবে ক্যাটফিশ মাছ এর আগে দেখিনি। সরপুটি মাছের ফটোগ্রাফি এবং টেংরা মাছের ফটোগ্রাফি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আমার মৎস্য পরিচিতির এই সিরিজটা আপনার ভালো লাগে শুনে খুবই উৎসাহিত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য।
একটু আগে রয়না মাছের একটা রেসিপি দেখলাম। তবে রয়না মাছটা আমি চিনি না। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখে আমি এটা চিনতে পেরেছি। এ ধরনের মাছ আমাদের এখানেও কমবেশি পাওয়া যায়। যাই হোক ভাইয়া বেশ কিছু মাছের ফটোগ্রাফি এবং পরিচিতি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। তার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমার পোষ্টের মাধ্যমে আপনি একটি মাছের নাম জানতে পেরেছেন জেনে সত্যিই আনন্দিত হলাম। সময় নিয়ে আমার পোস্টটি দেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এ ধরনের মাছগুলো আমাদের এলাকায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। আমাদের গ্রামে এত পরিমান পুকুর আছে যে আর এত মাছ চাষ হয় তা বলার কথা নেই। আপনার শেয়ার করা মাছের মধ্যে টেংরা মাছটি সব থেকে বেশি সুস্বাদু লাগে খেতে। এ মাছটির দামও কিন্তু অনেক বেশি। বাংলাদেশের মৎস্য এখন বিরাট ভাবে অর্থনৈতিক গুরুত্ব ভূমিকা পালন করছে। চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
যাক তাহলে অন্তত আপনাদের এলাকায় মানুষের মাছের চাহিদা ঠিকমতো পূরণ হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেই নদীর মাছগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। আমার পোস্টে সবসময় মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার বাংলাদেশের মৎস্য পরিচিতির চতুর্থ পর্ব পড়ে অনেক ভাল লাগলো। এখানে ক্যাটফিশ জাতীয় এই মাছগুলো ছাড়া আর বাকি সবগুলো মাছই আমার পরিচিত। আশা করি পঞ্চম পর্বে নতুন মাছ দেখতে পারবো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
চেষ্টা করব খুব শীঘ্রই নতুন নতুন মাছ নিয়ে পঞ্চম পর্ব আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে। দারুন দারুন মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।