বাংলাদেশের মৎস্য পরিচিতি (তৃতীয় পর্ব )। 10% shy-fox.
আসসালামু-আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভাল আছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতের মৎস্য নিয়ে আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে। আমার স্টিমিট বন্ধুদেরকে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়াই আমার এই পোষ্টের উদ্দেশ্য। এদেশের মিঠাপানিতে একসময় আড়াইশো প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব থাকলেও ইতিমধ্যে বেশিরভাগই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আরো কিছু প্রজাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে। হয়তো আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই মাছগুলো আর দেখতে পাবে না। এদেশে মাছ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়। যার ফলশ্রুতিতে বেশ কিছু মিশ্র জাতের মাছের আবিষ্কার হয়েছে। মানুষের আমিষের চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ করে থাকে এই মৎস সম্পদ। আসুন তবে কথা না বাড়িয়ে আজকের মাছগুলো দেখে নেয়া যাক।
১৫। আইর
আইর মাছ বাংলাদেশের নদীর মাছ। ক্যাটফিশ জাতীয় এই মাছগুলো খেতে খুবই সুস্বাদু। এক সময়ে বাংলাদেশের বড় বড় নদীগুলোতে বিশাল আকৃতির সব আইর মাছ পাওয়া যেত। এখন বড় আইর দেখা ভাগ্যের ব্যাপার। এ মাছ ওজনে প্রায় ৪০-৫০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
১৬। বোয়াল
বাংলাদেশে রাক্ষুসে প্রজাতির যত মাছ আছে তার মধ্যে বোয়াল অন্যতম। পুকুরে বা নদীতে বড় বোয়াল মাছ থাকলে অন্যান্য ছোট মাছ খেয়ে সাবার করে দেয়। এ মাছের বিশাল মুখের ভেতরে থাকে ছোট ছোট অজস্র দাঁতের সাড়ি। বড় বোয়াল মাছ আকৃতিতে ৪-৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
১৭। বাইম
দেখতে অনেকটা সাপের মতো ইল জাতীয় এই মাছগুলো নদী এবং পুকুর উভয় জায়গাতেই পাওয়া যায়। এরা সাধারণত পানির তলদেশে কাঁদার মধ্যে থাকে। এই মাছগুলো দৈর্ঘ্যে এক থেকে দুই ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
১৮। রুই
রুই বাংলাদেশের সর্বত্র সুপরিচিত একটি মাছ। এই মাছগুলো ওজনে প্রায় ২০-৩০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। নদী এবং পুকুর উভয় জায়গাতেই রুই মাছ পাওয়া যায়। বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা মাছগুলোর মধ্যে রুই মাছ অন্যতম।
১৯। দেশি পুটি/ চিতপুটি
পুটি মাছ চেনে না এমন বাঙালি খুব কম আছে। পুটি মাছের বেশ কয়েকটি প্রজাতি থাকলেও আমাদের দেশী পুটি মাছ গুলো আকৃতিতে খুবই ছোট যা চিতপুটি নামে পরিচিত। বাংলাদেশের পুকুরে, খালে, বিলে, নদীতে সর্বত্র এই পুটি মাছ পাওয়া যায়। এরা সাধারণত ঝাক বেঁধে চলাফেরা করে।
২০। বাতাসি
বাতাসি নদীর মাছ। সাধারণত পুকুর এগুলো পাওয়া যায় না। পাতলা ছিপছিপে সুন্দর চেহারার এই মাছগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু। বাংলাদেশের বিলুপ্তপ্রায় মাছগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। হয়তো আর কয়েক বছরের মধ্যে পুরোপুরি ভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
২১। কাতল
কাতল পুকুর এবং নদী উভয় জায়গাতেই পাওয়া যায়। এরাও পানির নিচের স্তরে অবস্থান করে। দেহের তুলনায় এ মাছের মাথা আকৃতিতে অনেক বড় হয়। এই মাছগুলো ওজনে প্রায় 35-40 কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
আজকের মত এ পর্যন্তই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
Photographer | @ferdous3486 |
---|---|
Device | Samsung M21 |
Location | Tepakhola, Faridpur |
বাংলাদেশের অনেক প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। যাক আপনার পোস্টের মাধ্যমে বেশ কিছু মাছ দেখতে পেলাম, আমি মোটামুটি সবগুলো মাছ চিনতে পেরেছি। আইর মাছ আমার ভীষণ ভালো লাগে, এর স্বাদটা কিন্তু দারুন। ধন্যবাদ ভাই মাছগুলো নিয়ে দারুন একটি পোস্ট আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।
আইর মাছ বাজারে উঠলেও সবার পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। কারণ এর দাম অনেক। চেষ্টা করব মোটামুটি সবগুলো প্রজাতির নমুনা উপস্থাপন করতে।
আপনি একদম ঠিক কথাই বলেছেন ভাই,মানুষের আমিষের চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ করে থাকে এই মৎস সম্পদ। তবে ছোটবেলায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দেখেছিলাম সেগুলো এখন আর খুঁজেই পাইনা। আপনার পোষ্টে আইর মাছ, বাইম মাছ, বাতাসি মাছ আমার খুবই প্রিয়। আর টাটকা টাটকা প্রিয় মাছগুলোকে দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো। বাংলাদেশের মৎস্য পরিচিতি নিয়ে খুব সুন্দর একটি পোষ্ট উপস্থাপন করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এই মাছগুলো হয়তো আমাদের বেশির ভাগ মানুষেরই চেনা। তবে আমি নিশ্চিত আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এগুলো আর দেখতে পাবে না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এক সময় আমাদেরকে বলা হতো মাছে ভাতে বাঙালি এর মানে ভাতের সাথে মাছ না হলে যেন আমাদের খাবারটা পরিপূর্ণ হতো না। এখন অবশ্য এর চিত্রটা সম্পূর্ণই ভিন্ন মাছের দাম দিন দিন বৃদ্ধি হচ্ছে নদী-নালা খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে ভরাট করা হচ্ছে যার কারণে মাছের উৎপাদন কমে গেছে।। বিশেষ করে নদীতে এমন কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছ ধরা হচ্ছে যার কারণে অনেক মাছ ই আমাদের দেশে এখন বিলুপ্ত ।
আপনার ফটোগ্রাফির মধ্যে থেকে আইর মাছ এবং বোয়াল মাছ আমার সব থেকে বেশি ফেভারি
জি ভাই মাছের বিলুপ্তির কারণ সম্পর্কে আপনি বেশি ধারণা রাখেন বোঝা যাচ্ছে। আসলেই চাষ করা মাছ ছাড়া এক সময় হয়তো প্রাকৃতিক মাছ আর দেখা যাবে না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
এমন অনেক মাছ ছিল যেগুলো ছোট তে দেখেছি কিন্তু এখন নাই। আপনি ঠিকই বলেছেন অনেক মাছই অনেক বিলুপ্ত প্রায়।আপনার এই উদ্যোগটি দারুন হয়েছে।বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এই মাছ গুলো সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ ভাইয়া এই সিরিজটির জন্য।
আমার নিজের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার হয়েছে। ছোটবেলায় এমন অসংখ্য মাছ দেখেছি যা এখন আর মোটেই দেখা যায় না। এজন্যই চেষ্টা করছি বিলুপ্ত প্রায় মাছগুলোর সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দিতে। ধন্যবাদ ভাই
আপনার এর আগেও দুটি পর্ব দেখেছিলাম ৷ তবে একটা কথা ঠিক বলেছেন ৷ যে এক সময় আড়াশো প্রজাতির মাছ থাকলে ও কালের ক্রমে আর দেখে মেলে না ৷ এখন তো বাইম মাছ মাছ চোখেই পড়ে না ৷
অনেক ভালো লাগলো বেশ কিছু মাছ দেখে ৷
উৎসাহ দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সেইসঙ্গে আমার আগের পোস্টগুলো দেখার জন্য কৃতজ্ঞতা বোধ করছি।
এতো প্রজাতির মাছ বাংলাদেশে পাওয়া যেতো তা আজকে জানতে পেলাম, তার কারন বাজারে গেলে খুব বেশি মাছ চোখে পড়ে না। সচারাচর যে মাছ গুলো খাই তাই দেখতে পাই।আজকের পোস্টের মাছ গুলো সবগুলোই চিনি এই মাছ গুলো খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি দামীও বটে।অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনি যতটা চেনেন হয়তো আপনার ছেলে মেয়েরা ততটুকুও চেনে না। বাংলাদেশের হাওর অঞ্চলে এখনো কিছু প্রজাতির মাছ টিকে থাকলেও নদী বা খাল বিলের মাছের প্রজাতিগুলো প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।
আমি মাছ তেমন একটা চিনি না। আপনার আগের পর্বগুলো দেখলে হয়তো অনেক মাছ চিনতে পারতাম। আজকের যে মাছগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন সেই মাছগুলো রেগুলারই খাওয়া হয় বাসায় । ঠিক বলেছেন বাতাসি মাছটা এখন তেমন একটা পাওয়া যায় না। কিন্তু খুবই সুস্বাদু একটি মাছ। ভালো লাগলো। মাছ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
আগের পর্বগুলো দেখার অনুরোধ রইলো। আশা করি এক থেকে দেড়শো মাছের প্রজাতির নমুনা আপনাদেরকে দেখাতে পারবো। ধন্যবাদ আপু।
ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন বাংলাদেশ থেকে অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আপনার প্রথম ফটোগ্রাফির আইর মাছটাও বিলুপ্তির পথে। আর নদীর মাছ বাতাসি আমি এই প্রথম দেখলাম। আমাদের দিকে এই মাছটা নাই। ধন্যবাদ ভাইয়া।
হ্যাঁ এমন কিছু কিছু মাছ আছে যা সব জায়গায় পাওয়া যায় না। এলাকা ভেদে কিছু কিছু মাছের বৈচিত্র থাকে। আপনার এলাকার হয়তো এমন কিছু মাছ আছে যা আমার এলাকায় পাওয়া যায় না। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।