ভালবাসুন নিজেকে
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভাল আছি।
আজ বাড়ি চলে আসলাম। বাবা-মা আর পরিবারের সবার সাথে কিছু দিন কাটানোর সুযোগ পেয়েছি। প্রতি বছর যেন বার বার এমন সুযোগ আমাদের সবার আসে এই কামনা করি। যাই হোক আজকের আর্টিকেলের মূল আলোচনায় চলে যাই।
আজকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে কথা বলব। নিজেকে ভালবাসুন। আমরা জীবনে অনেকবার শুনে থাকি নিজেকে ভালবাসার কথা। সব কিছুর আগে নিজেকে ভালবাসতে হবে এমন সব কথা আজকাল মোটিভেশনাল স্পিচে ভাল জায়গা করে নিয়েছে। তবে অনেক সময় আমরা বুঝিনা নিজেকে আসলে কিভাবে ভালবাসব। আমিও হয়ত বুঝেছিলাম না, কিংবা অবচেতন মনে বুঝেছিলাম।
কিছুদিন আগে আমার এক বান্ধবী আমাদের অন্য এক বান্ধবীর (একা) কথা বলছিল। আমার চেয়ে প্রথমোক্ত বান্ধবীই তার বেশি নিকটস্থ, তাই সে তার খবর আরো বেশি জানে। তার মাধ্যমেই জানতে পারলাম একার বাবার ক্যান্সার হয়েছে, ওর বড় বোনেরও শারীরিক সমস্যা আছে এবং সেটাও খুব সহজ কোন অসুখ না। এটুকু জেনেই আমি অবাক হয়েছি কারণ একাকে দেখে কখনোই ওর পারিবারিক ট্র্যাজেডির কথা আন্দাজ করা যায়না। সবে বিয়ে হয়েছে তবু কতই বা বয়স হবে। কিন্তু এই টুকু বয়সেই সে নিজেকে ভালবাসতে শিখেছে। তার ভাষ্যমতে তাদের তো চিকিৎসা চলছে। এর বাইরে তাদের কিছুই করার নেই। তাই সৃষ্টিকর্তাকে ডাকা আর চিকিৎসা করানোই তাদের একমাত্র অবলম্বন। খারাপ তো লাগেই কিন্তু তাদের জন্য টেনশন করে নিজেদের জীবন বিপন্ন করতে কেউই রাজি বা হয়ত অভ্যস্ত না ঐ পরিবারে।
ব্যাপারটা হয়ত আমাদের অনেকের কাছে হৃদয়বিদারক বা নিষ্ঠুর মনে হবে। কিন্তু আমার কাছে ব্যাপারটা ঠিক স্বাভাবিক না হলেও এটা কর্তব্যের মধ্যে পরে। শুধু তার বাবার কথাই যদি ধরি, সে ক্যান্সার পেসেন্ট এবং ইন্ডিয়াতে চিকিৎসা চলছে। ব্যাপারটা অবশ্যই ব্যয়বহুল। এখন যদি টেনশন করে অন্য একজন পরিবারের সদস্য অসুস্থ হয় তাকে কে দেখবে? তাই নিজেদের ঠিক রাখা একটা দায়িত্বের মধ্যেই পরেছে ওদের জন্য। একাকে সব সময় দেখি ঠিকভাবে খাচ্ছে, ঘুমাচ্ছে, পড়ছে। আনুষঙ্গিক যা যা করার দরকার সব একদম সময়মত করছে এবং এত দিনেও ওর নিজের প্রতি কোন অবহেলা দেখিনি। এটার নামই সম্ভবত নিজেকে ভালবাসা।
২/৩ দিন আগে আমার প্রথমোক্ত বান্ধবী আমাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক ধরিয়ে দিল। তার মা খুব টেনশন করে এবং প্রায়ই অসুস্থ হয়ে যায়। আমার বাসাতেও একই সমস্যা। টেনশন থেকে অসুস্থ হয়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় রাতেই আম্মুর শরীর খারাপ লাগে আর ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমার কাছে ব্যাপারটা যে কি কষ্টের বলে বোঝাতে পারব না।
যাই হোক, যেটা বলছিলাম। সে আমাকে বলল যে, আসলে তার আম্মু যে এমন অসুস্থ হয় এজন্য তার অনেক টেনশন লাগে। আর টেনশন আসলে তখনই লাগে যখন আমরা বুঝি ঐ মানুষটা নিজের জন্য নিজে যথেষ্ট না, নিজের যত্ন সে নিবেনা, নিজের সব কিছুতেই অবহেলা করে। কিন্তু তার আম্মুর যদি সব কিছুর আগে নিজের দিকে একটু নজর দিত তাহলে হয়ত তার জন্য তার মেয়ে এইভাবে কষ্ট পেত না। সেই দিনই আমি ভেবে রেখেছি বাসায় গিয়ে সুযোগ বুঝে আম্মুকে বিষয়টা নিয়ে বোঝাবো। ইনশাআল্লাহ কাজ হবে। আসলে সব বাবা মায়েরই উচিত নিজেকে ভালবেসে এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে সে নিজের জন্য নিজেই যথেষ্ট হয়। তার অসুস্থতা, নিজের প্রতি অবহেলা বা তার সুস্থতার জন্য টেনশন করে যেন কেউ এতটা কষ্ট না পায় যেমনটা আমরা এখন পাচ্ছি।
তাই আমার অনুরোধ যারা বাবা মা আছেন/ যারা এখনো জীবনের সেই ধাপে পৌঁছাননি তারা নিজের যত্ন নিন, নিজের প্রতি কোন রকম অবহেলা করবেন না আর অবশ্যই নিজেকে ভালবাসুন যেন আপনার প্রিয়জনেরা ভাল থাকতে পারে।
ধন্যবাদ সবাইকে,
@kitki
খুব সুন্দর একটি বিষয় আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আসলে হৃদয়বিদারক ঘটনা হলেও সত্য, তাই আমাদের উচিত আমাদের নিজেদের ভালো রাখার জন্য কিছু টপিকস মেনে চলা। আপনার আম্মার অসুস্থতার বিষয় জেনে খুব খারাপ লাগল। আপনি বোঝানোর চেষ্টা করবেন যেন টেনশন না করে আর মানুষকে উৎসাহ প্রদান করা সবচেয়ে জ্ঞানীর কাজ। চেষ্টা করবেন যেন আপনার পরিবারের লোকজন সুস্থ থাকে সে বিষয়টা মাথায় রাখতে।
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় বলেছেন। আমি নিজেও এ কথাটা খুব বিশ্বাস করি গো নিজেকে সবার প্রথমে হোক ভালোবাসা উচিত। কেননা আমরা যদি নিজেকে না ভালোবাসি তাহলে আমাদের জন্য অনেক বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং অন্যরা কষ্ট পায়। আপনার বান্ধবীর মায়ের নিজের প্রতি যত্ন নেওয়া উচিত ছিল তা না হলে আজকে ওনার মেয়ে কষ্ট পেত না। যদিও ওর বাবা অসুস্থ। এত সুন্দর একটা বিষয় তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
কথাগুলো বেশ ভালো লাগলো,আসলেই নিজেকে আগে ভালোবাসলে পরে অন্যকে ভালোবাসা যায়।আপনার ফ্রেন্ড এর কথা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে,আসলে নিজে ভালো থাকলে অন্যকে ভালো রাখা যায়।চিকিৎসা আর যত্ন এর বাহিরে কি আর করা যায়।চিন্তা করলে তো আর ভালো হয়ে যাবে না।ধন্যবাদ
আসলে আপু নিজেকে যে ভালোবাসতে না পারে, সে কখনও অন্যকে ভালোবাসতে পারে না। আর সবার আগে নিজেকে ভালোবাসতে হবে এবং নিজেকে খেয়াল রাখতে হবে।