কচুর সুস্বাদু মজাদার ডাল রেসিপি
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি রেসিপি পোষ্ট নিয়ে। আজ আমি আপনাদের মাঝে খুবই মজাদার একটি রেসিপি উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আর এই মজার রেসিপি হচ্ছে, কচুর সুস্বাদু মজাদার ডাল রেসিপি। যদিও বা আমি এই সুস্বাদু মজাদার রেসিপি অনেক অনেক দিন আগে তৈরি করেছিলাম। কিন্তু সময় ও সুযোগের অভাবে শেয়ার করতে পারিনি। যাই হোক এবার আমি রেসিপি স্বাদের কথায় আসি। এই কচুর ডালের এতটাই স্বাদ যা এখনো আমার মুখে লেগে রয়েছে।
বিশেষ করে এই রেসিপিতে ধনিয়া পাতা যোগ করার কারণে স্বাদ অনেকটাই বেড়ে যায়। ঠান্ডা ঠান্ডা কচুর ডালের সাথে গরম গরম ভাত সাথে এক টুকরো লেবু। তাহলে সেই খাবারটা বেশ জমে ওঠে। আমি যেদিন এই সুস্বাদু মজাদার কচুর ডাল রেসিপি তৈরি করেছিলাম, সেদিন আমি পুরো এক প্লেট ভাত সাবার করে দিয়েছিলাম।
যাইহোক বন্ধুরা, আমি কিভাবে এই সুস্বাদু মজাদার রেসিপি তৈরি করেছিলাম, তার প্রতিটি ধাপ খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনারা আমার রন্ধন প্রণালী অনুযায়ী একদিন বাসায় রান্না করে খাবেন, ইনশাআল্লাহ অনেক অনেক ভালো লাগবে। তাহলে বন্ধুরা আর কথা না বাড়িয়ে চলুন, আমার রন্ধন প্রণালীর ধাপগুলো দেখে নেয়া যাক।
ক্রমিক নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | কচু | ১০০০ গ্রাম |
২ | মাছ | ৭৫০ গ্রাম |
৩ | ধনিয়া পাতা | পরিমাণ মতো |
৪ | পেঁয়াজ | ৬-৭ টি |
৫ | কাঁচা মরিচ | ৮-১০ টি |
৬ | শুকনা মরিচ গুঁড়া | ২ চা চামচ |
৭ | হলুদ গুঁড়া | ২ চা চামচ |
৮ | জিরা গুড়া | ২ চা চামচ |
৯ | আদা বাটা | ১ চা চামচ |
১০ | রসুন বাটা | ১ চা চামচ |
১১ | গরম মসলা বাটা | পরিমাণ মতো |
১২ | সাদা এলাচ | ২-৩ টি |
১৩ | তেজপাতা | ২-৩ টি |
১৪ | সয়াবিন তেল | পরিমান মত |
১৫ | লবণ | স্বাদমতো |
" ধাপ : ১ "
১। প্রথমে কচুগুলোকে সিদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর কচুগুলোর ছাল ছাড়িয়ে ডলে ভর্তার মত করে নিতে হবে।
" ধাপ : ২ "
২। এবার পেঁয়াজ গুলোর খোসা ছাড়িয়ে, কুচি করে কেটে নিতে হবে।
" ধাপ : ৩ "
৩। এবার কাঁচা মরিচ গুলোর বোঁটা ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে নিতে হবে। উপরে দেয়া চিত্রের মত করে।
" ধাপ : ৪ "
৪। এবার রসুনগুলোর ছাল ছাড়িয়ে থেঁতো করে নিতে হবে।
" ধাপ : ৫ "
৫।এবার মাছগুলো আলাদাভাবে কষিয়ে নিয়েছি, কচুর ডালে দেয়ার জন্য।
" ধাপ : ৬ "
৬। এবার একটি পাত্রে পানি ঢেলে নিয়ে, পাত্রটি চুলায় বসিয়ে দিতে হবে। পানি গরম হয়ে আসলে, ভর্তার মতো করে নেয়া কচুগুলো গরম পানিতে ছেড়ে দিয়ে চামোচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে নিতে হবে।
" ধাপ : ৭ "
৭। এবার চামচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে নেয়ার পর, হলুদ গুঁড়া, শুকনা মরিচ গুড়া এবং জিরা গুড়া পাত্রে ছেরে দিয়ে চামোচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নিতে হবে। তারপর পরিমাণ মতো রসুন বাটা পাত্রে ছেড়ে দিতে হবে।
" ধাপ : ৮ "
৮। এবার রসুন বাটা দেয়ার পর, গরম মশলা বাটা এবং আদা বাটা পাত্রে ছেড়ে দিয়ে চামোচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নিতে হবে।
" ধাপ : ৯ "
৯। এবার চামচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে নেয়ার পর, কিছুক্ষণ জাল করে চুলা থেকে পাত্রটি নামিয়ে ফেলতে হবে। তারপর চুলায় কড়াই বসিয়ে দিতে হবে। কড়াই গরম হয়ে আসলে, পরিমাণ মত সয়াবিন তেল করাইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ১০ "
১০। এবার সয়াবিন তেল গরম হয়ে আসলে, তেজপাতা, এলাচ, পেঁয়াজ কুঁচি ও রসুন থেঁতো কড়াইতে ছেড়ে দিতে হবে।
" ধাপ : ১১ "
১১। এবার তেজপাতা, এলাচ, পেঁয়াজ কুঁচি ও রসুন থেঁতো কড়াইতে ছেড়ে দেয়ার পর, বাদামী রং করে ভেজে নিতে হবে। তারপর জাল দিয়ে নামিয়ে রাখা কচুর ডাল, কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ১২ "
১২। এবার কচুর ডাল ঢেলে দেয়ার পর, কষিয়ে নেয়া মাছ গুলো কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ১৩ "
১৩। এবার কষানো মাছ ঢেলে দেয়ার পর, টুকরো করে নেয়া কাঁচামরিচ গুলো কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ধাপ : ১৪ "
১৪। কচুর ডাল চুলা থেকে নামানোর আগে, কেটে নেয়া ধনিয়া পাতা গুলো কচুর ডালের উপরে ছড়িয়ে দিতে হবে।
" ধাপ : ১৫ "
১৫। এবার ধনিয়া পাতা গুলো কচুর ডালের উপরে ছড়িয়ে দেয়ার পর, ৩-৪ মিনিট জাল দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
তারপর পরিবেশনের জন্য আলাদা একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে, মনের মত সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
কচুর ডাল রেসিপি দারুন হয়েছে। মাছ দিয়ে এভাবে কচুর ডাল রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে। রমজান মাসে এত লোভনীয় খাবার শেয়ার করা কিন্তু ভারী অন্যায় 😅। রান্নার প্রণালী অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
এইভাবে কচুর ডাল রান্না করা যায় আমি তো জানতাম না। প্রথমে তো ভেবেছিলাম কি থেকে কি রান্না করে ফেলতেছে হয়তো। কিন্তু আপনি কি চমৎকার ভাবে রেসিপিটি তৈরি করলেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই লোভনীয় হয়েছে। আর আমি এর আগে কখনো এভাবে কচুর ডাল রান্না করে খাইনি। আপনার তৈরি করা এই রেসিপিটি আমি আজকে প্রথম দেখলাম। দেখেও ভালো লাগলো কারণ নতুন একটি রেসিপি শিখতে পারলাম। নিত্য নতুন এরকম ইউনিক রেসিপি দেখলে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
আপু, কচুর ডাল খেতে এতটাই মজা, যে একবার খাবে সে আবারো খেতে চাইবে। তাই একদিন বাসায় ট্রাই করে দেখবেন ইনশাআল্লাহ অবশ্যই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ
যদিও আমি এমন রেসিপি কখনো খাইনি তবে আপনার রেসিপিটি দেখে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু হয়েছে। রোজা রেখে জিভে জল চলে এলো আপনার এই রেসিপিটি দেখে। এমন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যাঁ ভাই, কচুর ডাল রেসিপিটি খেতে খুবই মজার হয়। তাই একদিন বাসায় তৈরি করে খাবেন। আমার মনে হয় অবশ্যই ভালো লাগবে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কচুর ডাল রেসিপি খুব ভাল লাগলো। আসলে এই কচু চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করা হয়েছে।কখনও ডাল রান্না করা হয়নি। আবার সাথে মাছ। দারুন রেসিপি। একের ভেতর দুই। দারুন মজার রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপু, কচুর ডাল রেসিপি না খেয়ে থাকলে, একদিন আমার রেসিপি অনুসারে তৈরি করে খাবেন, ইনশাআল্লাহ অবশ্যই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ
কচুর ডাল আগে কখনো খাই নি।অনেক ইউনিক একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাইয়া। রেসিপিটি দেখতে অনেক আকর্ষণীয় লাগছে। আমি অবশ্যই বাসায় একদিন রেসিপিটি ট্রাই করবো। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।
আপু আমাদের এদিকে সকলেই কচুর ডালের রেসিপি সম্পর্কে জানে। তবে আপনারা অনেকেই এই রেসিপি সম্পর্কে জানেন না জেনে একটু অবাকই হলাম। যাই হোক আপু, একদিন তৈরি করে খাবেন দুর্দান্ত এই রেসিপি, ইনশাল্লাহ অবশ্যই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ
আহা ভাই রোজার মধ্যে কি লোভনীয় খাবার দেখালেন 😋 সত্যিই ভীষণ সুস্বাদু খাবার এটি। আমি খেয়েছিলাম অনেক দিন আগে, আজ আবারো দেখে লোভ সামলাতে পারছিনা।
অনেক ধন্যবাদ ভাই চমৎকার রেসিপিটি ধাপে ধাপে দেখানোর জন্য।
যাক ভাই, আপনি তাহলে কচুর ডালের রেসিপি খেয়েছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। কচুর ডালের রেসিপি খেতে সত্যিই খুব মজার হয়। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অনেক মজার একটি রেসিপি শেয়ার করেছেন ভাইয়া দেখে তো লোভ লেগে গেছে। এই রেসিপি ছোট বেলায় অনেক খেয়েছি মায়ের হাতের তৈরি করা। গ্রামে কিন্তু তখন অনেক বেশি কচু পাওয়া যেত বাড়ির পাশের ক্ষেতের জায়গাতে। সেই কচুর মুখী দিয়ে অনেক মজার করে মা ডাল তৈরি করতেন। আজ আপনি সে কথা মনে করে দিলেন কচুর ডালে রেসিপিটি শেয়ার। অসাধারণ লেগেছে আমার কাছে আমার অনেক প্রিয় একটি রেসিপি ছিল।
আমার তৈরি রেসিপি দেখে আপনার মায়ের হাতের কচুর ডাল রেসিপির কথা মনে পড়ে গেছে, এই কথাটি জেনে খুবই ভালো লাগলো। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কচুর ডাল রেসিপি টি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। এভাবে কচুর ডাল রান্না করে খেলে অনেক মজা লাগে। আপনার কচুর ডালের রান্নার সাথে আমাদের কচুর ডাল রান্নার মিল আছে দেখছি। কচুর ডাল আমার অনেক প্রিয় একটি খাবার। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
সত্যিই আপু, কচুর ডালের রেসিপি খেতে খুব খুব সুস্বাদু হয়। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বাহ্! কচু সিদ্ধ করার পর ভর্তা করে ডাল দিয়ে মজাদার একটি রেসিপি তৈরি করেছেন ভাই। আমার তো দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। এভাবে কখনও খাওয়া হয়নি। রেসিপিটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে খেতে ইয়াম্মি হয়েছে। রেসিপির পরিবেশনা তো এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। ধাপে ধাপে এত লোভনীয় একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।