আনমনা বর্ষা বেলায়।
পৃথিবী থেকে মুছে গেছে অনেক বড় বড় সভ্যতার নাম। শহরের প্রধান নামকরা ব্যক্তিটিও চলে গেছে তার মৃত্যু নামের সাথে সাথে। শুধু রয়ে গেছে চির পুরাতন, চির নতুন বৃষ্টি। শিশু যেমন প্রতিদিন নতুন হয়েও আমাদের কাছে চিরপুরাতন তেমনি বর্ষার মেঘও।
বর্ষার মেঘকে কেন আমি চির পুরাতন, চির নতুন বলছি জানেন? আসলে বর্ষার মেঘ সেই আদিম কালেও যা ছিল, মধ্যযুগেও তাই, আর এই বর্তমানেও তার রূপ সৌন্দর্য একই আছে এই জন্য বর্ষার মেঘ চির পুরাতন। এই চির পুরাতন জিনিসটি আবার আমাদের সামনে প্রতিদিন নতুন রূপে প্রকাশ হয়, প্রতিটি মেঘকেই আমাদের আলাদা মনে হয় মনে হয় নতুন মেঘ তাই সে চির নতুন।
বর্ষার চির নতুন মেঘ গুলো হঠাৎ যেন আমাদের মাঝে আসে। আমাদের চারপাশের চিরচেনা প্রকৃতিটাকে নতুন করে দিয়ে যায়। সব কিছুকে নতুন ঝা চকচকে লাগে। সকলের মনে উদাসী ভাবের সঞ্চার ঘটায়। মানুষ তার প্রতিদিনের কাজ থেকে বিদায় নিতে চায়। মুক্ত করতে চায় নিজেকে। সেই মেঘের সাথে মন যেন চলে যায় বহুদূরে কোনো অজানা স্বর্গে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'নববর্ষা' প্রবন্ধে তাই বলেছেন,
বর্ষার মেঘ সুখী মানুষকেও আনমনা করে তোলে।
জীবনের গতি প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছে নতুন নতুন গন্তব্যে। তার মাঝেই হঠাৎ বর্ষার বৃষ্টি আমাদের কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে, ' থামো, অপেক্ষা করো, এবার একটু চিন্তা করো। তুমি কে? কোথা থেকে এসেছো? আবার কোথায় ছুটে চলেছো?'
এতোসব প্রশ্নের মুখে আমাদের জীবন সত্যি থমকে দাঁড়ায়। ছুটে যেতে চায় কোনো এক অজানায়, অচেনায়, বাঁধ ভাঙতে চায়, নিজেকে বিলীন করে দিতে চায় এক পরমাত্মার সাথে।
এই সেই মেঘ, যা অতীতেও মানুষকে ভাবিয়ে তুলতো আনমনা করতো সেই মেঘই যেন আবার নতুন রূপে আমাদের মাঝে আজও আসে, জীবনকে বদলে দিতে চায়, জীবনকে একটুখানি দৈনন্দিন গতি থেকে মুক্তি দেয়। মানুষকে আহ্বান জানায় শান্তির দিকে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথার্থই বলেছেন,
কালীদাসের উজ্জয়ীনির প্রাসাদ চূড়ায় যে মেঘ প্রিয়র কাছে শোক বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল সেই মেঘ আবার এসেছে।
মেঘের রূপ একই। তাকে আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারিনা বলেই সে পুরাতন হয় না। সে আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত এক নতুন জগতের দিকেই ধাবিত করে।
বর্ষার মেঘ এবং বৃষ্টি নিয়ে আমরা সবসময় আনন্দ, আহ্লাদ করে থাকি। বৃষ্টির সময় কেউ বই পড়ে, কেউ চায়ের কাপে ডুবে যায় আবার কেউবা বৃষ্টিতে ভিজে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে চায়। আমরা কি কখনও কেউ ভেবেছিলাম বৃষ্টি চিরকাল একই থাকে, একই রূপ নিয়ে আসে তবুও কেন আমরা তাকে নতুন করে বরণ করি প্রতিবছর?
ধন্যবাদ সকলকে।
আনমনে বর্ষা বেলায় বর্ষা নিয়ে আপনি সুন্দর একটি কনটেন্ট লিখেছেন আপু। পৃথিবীর সব কিছুই সৃষ্টি হয় দিন দিন পুরাতন হয়ে গেছে। বর্ষার এই রূপ প্রাচীনকাল, বর্তমানকাল এবং ভবিষ্যতেও একই বিদ্যমান থাকবে। বর্ষাকাল নিয়ে আপনার ভাবনা গুলো অনেক গভীর এবং ভাবার্থ পূর্ণ ছিল। সুন্দর লিখেছেন আপু। শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
বর্ষার মৌসুমে রূপ ও বৈচিত্রময় বিষয় নিয়ে অনেক ভালো লিখেছেন। আসলেই এই বর্ষার সময়ে মেঘের চির চেনা মুখগুলো বিষয়টি ভালো ফুটিয়ে তুলেছেন। এবার বৃষ্টির আধিক্য একদমই কম আমাদের দিকে এখন পর্যন্ত তেমন একটা বৃষ্টির আধিক্য দেখা যায়নি ইনশাল্লাহ আল্লাহর রহমতে বৃষ্টির দেখা পাবো সেটাই কামনা করি।
ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই পাবেন।
মেঘদূত' কাব্যের বিশেষ কিছু লেখেন আপনি শেয়ার করেছেন এবং তার মধ্য দিয়ে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। অবশ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেঘদূত' কাব্যের কিছু অংশ কেন্দ্র করে এ সমস্ত কথাগুলো বলেছিলেন। ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর একটি পোস্ট পড়তে পেরে।
দুঃখিত ভাইয়া রবীন্দ্রনাথের মেঘদূত না।মেঘদূত কালিদাসের। আর রবীন্দ্রনাথের নববর্ষা।ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর একটি বিষয় আনমনা বর্ষা নিয়ে আপনি আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। সুন্দরভাবে সবকিছুকে গুছিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল
ধন্যবাদ ভাইয়া।
শুনেছি ভালোবাসা কখনো পুরনো হয় না। ঠিক তেমনি হয়তো বৃষ্টি আমাদের একটি ভালোবাসার জায়গায় রয়েছে। তাই তাকেও আমরা কখনই পুরাতন ভাবতে পারিনা। পুরাতন হলেও তাকে আমরা সবসময় নতুন ভাবে গ্রহণ করি, খুব সুন্দর লিখেছেন।
একদম ঠিক বলেছেন আপু। ভালোবাসার জিনিস কখনোই পুরাতন হয় না।