বঙ্গবাজার ট্রাজেডি 🥺
"আমার বাংলা ব্লগে আপনাদের সকলকে জানাই আমার সালাম"
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে শুরু করছি আমার আজকের এই ব্লগ।আশা করি আমি আমার দক্ষতার মাধ্যমে আপনাদের সকলের নিকট ভালো কিছু উপস্থাপন করতে সক্ষম হবো,এবং আপনাদের ও ভালো লাগবে।
আজ সোনার বাংলা সার্কাস ব্যান্ড এর সেই লিরিক্স গুলো চোখের সামনে ভাসছে। মনে হচ্ছে এই দিনগুলোর জন্যই হয়তো এই গানটি লিখে রেখেছেন। গানের লাইনগুলো ঠিক এমন ছিল...
তারই শিখায় পুড়ছো তুমি নিজে"
মানবসভ্যতা উন্নয়নের জন্য যে আগুন এর আবিষ্কার হলো ঠিক সেই আগুনেই পুড়ে যাচ্ছে মানবসভ্যতা। কালকে বঙ্গবাজারের আগুন যেনো ঠিক তারই প্রতিচ্ছবি।
কাল বঙ্গ বাজারের ওই দাউদাউ করে জ্বলে ওঠা আগুন দেখে ভীষন খারাপ লেগেছিল। আগুন জ্বলছে আর আগুনের সাথে জ্বলে যাচ্ছে কতগুলো মানুষের স্বপ্ন। এ যেনো আরেক বিভীষিকাময় অধ্যায় এর গল্প। সকালের ঘুম থেকে উঠে এমন দৃশ্যে চারদিকে শোকের মাতম উঠবে এমনটা কল্পনাও করি নাই। আর দেশের এমন পরিস্থিতিতে এমন একটা ঘটনা মনকে এখনো পীড়া দিয়ে চলছে। সত্যি বলতে ভীষন খারাপ লাগছে ওই মানুষগুলোর জন্য। এই মুহূর্তে মহান রাব্বুল আলামীন ওই মানুষগুলোকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দিক।
যাইহোক একটা পরিসংখ্যানে দেখলাম প্রায় পাঁচ হাজার ব্যাবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই দুর্ঘটনায়। এবং ক্ষতির পরিমাণ দাড়িয়েছে আনুমানিক ৭০০ কোটি টাকা। বর্তমানে এমনিতেই যে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে তারউপর এতবড় ক্ষতি দেশের জন্য কিংবা দেশের মানুষের জন্য কখনোই মঙ্গল জনক নয়। এমনিতেই কেউ কোথাও ভালো নেই,দেশটা ভালো নেই,দেশের মানুটোগুলো ভালো ন তার উপর এত বড় ধাক্কা। ভাবতেই বুকটা কেপে উঠছে। এত বড় লোকসানে শুধু যে ব্যাবসায়ী কিংবা দোকান মালিকদের ক্ষতি হয়েছে এমনটা কিন্তু না। এই মার্কেটকে ঘিরে যাদের জীবিকা চলত তারাও কিন্তু বিপদের সম্মুখে পড়েছে। এই ধরেন এই মার্কেটে প্রায় তিন হাজার এর মত দোকান ছিল এখানে যে কর্মচারীরা কাজ করতো এরা এখন একদম বেকার। আর দেশের পরিস্থিতিতে চাকরির যে সংকট এই পরিবার গুলোও অনেকটা বিপদে পড়ে গেলো। এমনকি এই মার্কেট থেকে যে ব্যাবসা হতো,লেনদেন হত তার কিছুটা অংশ হলেও সরকারি কোষাগারে যেতো সেটাও এখন বন্ধ। যে ব্যাবসায়ীরা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ব্যাবসায় নেমেছে তারা তো এখন জীবন্ত লাশ। এই মানুগুলা কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবে। এদের তো পুরো মেরুদন্ডই ভেঙ্গে গেলো।
যাইহোক এই ক্ষতির জন্য কিন্তু অনেকটা তারা নিজেরাই দায়ী। এই দায় তারা কিন্তু কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না। যতদূর শুনলাম এই পুরো মার্কেট টিকে ঝুঁকি পূর্ণ ঘোষণা করার পরেও দীর্ঘদিন যাবৎ তারা এভাবেই চলে আসছে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়াই। ভবিষ্যতে যে এমন কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন চিন্তা তারা মাথাতেও আনে নাই। আসলে আমাদের দেশের মানুষের চিন্তাভাবনা অনেক বাজে। তারা অনেকটা অলস টাইপের কিংবা দায়িত্বজ্ঞানহীন। তারা হয়তো ভেবেছিল ঠিকই তো আছে। সবকিছু তো চলছে এখানে ঝুঁকির কি আছে। আমরা সবসময় বর্তমানকে কে নিয়ে ভাবি। ভবিষ্যত নিয়ে কখনোই ভাবি না বা ভাবার দরকার ও মনে করি না। এর আগেই যদি ব্যাবসায়ীরা উদ্যোগ নিয়ে কিছু টাকা পয়সা খরচ করে এই জটিলতা গুলো ঠিক করে নিত আজ এই পরিস্থিতির স্বীকার হতে হতো না।
আর সর্বোপরি মানুষকে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হয়। কিন্তু আমরা যেই আর সেই। আমরা সেই আগের মতই রয়ে গেছি এখনো। শুধু মুখে বড়ো বড়ো বুলি। আমাদের দেশে এমন অগ্নিকাণ্ড নতুন নয় এর আগেও বহুবার এমনটা হয়েছে এবং ঢাকার যে কন্ডিশন সামনেও এমন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু তারপরের অগ্নিনির্বাপক ব্যাবস্থায় আমাদের কোনো উন্নতি নাই। যেখানে বিশ্বের সব উন্নয়শীল দেশেই ফায়ার ব্রিগেড নতুন নতুন আধুনিক অগ্নিনির্বাপক হাতিয়ার রাখছে। সেখানে বাংলাদেশ সেই মান্দাত্তা আমলেই পড়ে আছে। অথচ অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতিই হয় উদ্ধার কাজে দেরি হওয়ার ফলে। কিন্তু তাতেও আমাদের কোনো টনক নড়ে না। এখন আগুন লাগার পরে কানাঘুষা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা নিয়ে। আসলে এগুলা নিয়ে বলার কিছুই নাই।
যাইহোক এমন দুর্ঘটনা যেনো আর দেখতে না হয় এমনটাই প্রার্থনা করি। এমনিতেই দেশের মানুষগুলো ভালো না,এই দেশটা ভালো নাই।
এক সময় যে আগুন আবিষ্কারের জন্য মানুষকে পরিশ্রম করতে হয়েছে সেই আগুন আজ অনেক মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিল। বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা দেখে সত্যিই খারাপ লেগেছে। বিশেষ করে অসহায় সেই মানুষ গুলোর হাহাকার দেখে হৃদয় কেঁদে উঠেছে। আল্লাহ সবাইকে ধৈর্য ধরে সবকিছু সামলে নেওয়ার তৌফিক দান করুক এই প্রত্যাশাই করি।
কিন্তু এতকিছুর পরেও তো তাদের দাম্ভিকতা কমছে না আপু হাহা। আর এই ঘটনার পিছনে তাদের দোষই বেশি। আমার যা মনে হয়।
বঙ্গবাজারের এমন নির্মম ট্রাজেডি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইল। এইভাবে হাজার হাজার মানুষের স্বপ্ন পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। এমন দুদিন পোহাতে হবে তারা কেউই জানতো না। ৭০০ কোটি টাকা কে দেবে এই ক্ষতিপূরণ। তাদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারবো না আমরা।
হুম আপু।
আর ক্ষতি পূরণ দেওয়ার মতো কেউ নেই। তাদের নিজেদের পথ নিজেদেরকেই বের করে খুঁজে নিতে হবে। এক আল্লাহ ছাড়া কেউ নাই সাহায্য করার।
বঙ্গবাজারে ঈদের আগে আগুন,অনেক ব্যবসায়ীকে পথে বসিয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার সেলসম্যান। ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি শুধু একটা সংখ্যা। কতজনের স্বপ্ন পুড়িয়েছে এই আগুন সে খবর আমাদের কারো জানা নেই। আমাদের মার্কেট গুলো আগুন নেভানোতে অনেক দূর্বল। আর এটা ভোরের দিকে হওয়ায় কিছুই বাচানো গেলনা। সহমর্মিতা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য। তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
এই 700 কোটি টাকা শুধুই একটি সংখ্যা আপু। যাইহোক আল্লাহ এই মানুষগুলোকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দিক।