অনুগল্প :- ভালোবাসার আবেগ ।
হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা ,
আসসালামু আলাইকুম আপনাদের সবাইকে, কি অবস্থা সবার? নিশ্চয়ই সবাই ভালো আছেন। সবার ভালো এবং সুস্থ থাকার কামনা রাখি। আলহামদুলিল্লাহ আমি নিজেও ভালো আছি। আজকে আবারো নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে চলে আসলাম। লেখালেখি করতে এবং পড়তে আমার কাছে ভীষণ ভালই লাগে। তাই জন্য আমি নিজেও চেষ্টা করে একটু লেখালেখি করতে। লেখালেখি করার ইচ্ছা অনিচ্ছা পুরোটাই নির্ভর করে ব্যক্তিত্ব মানসিকতার উপর। লেখালেখি করতে পারাটাও একটা অন্যতম গুণ। লেখালেখি করতে করতেই মূলত লেখালেখির ক্ষেত্রে পারদর্শী হয়ে ওঠা যায়। লেখালেখি করার কিছু প্রচেষ্টা থেকে আজকে আপনাদের মাঝে খুব সুন্দর একটি গল্প নিয়ে আসলাম। গল্প লিখতে এবং পড়তে দুটোই আমার কাছে ভালো লাগে। আশা করি আমার আজকের গল্পটা আপনাদের ভালো লাগবে।
চলুন তাহলে শুরু করা যাক আমার গল্পটি :-
ভালোবাসার আবেগ
আবেগ বলতে আমরা কি বুঝি? নিশ্চয়ই, কোন কিছু চাওয়া বা পাওয়া জন্য অফুরন্ত ইচ্ছা শক্তি। আবেগ এমন একটা জিনিস যা কোন বাধা বিপত্তি মানতে রাজি নয়। আবেগপ্রবণ জিনিসটি একজন মানুষকে প্রতি মুহূর্তেই কি জিনিসের প্রতি মোহ করে রাখে। সেই রকম এক বাস্তব সত্য হলো ভালোবাসার আবেগ।
নাম তার নীলা। দশম শ্রেণীতে পড়ে সে। পারিপার্শির সবকিছুই বোঝার মোটামুটি জ্ঞান তার হয়েছে। আবেগপ্রবণতা থেকে ভালো লাগা খারাপ লাগাও কাজ করে তার ভেতরে। যেহেতু সে বিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রী তাই তার বন্ধুবান্ধব থাকাটাই স্বাভাবিক। সময়টা শীতকালের আগমনী সময়। বিদ্যালয়ে ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে বান্ধবীদের সাথে গল্প করতে করতেই ফিরছিল সে। গল্পের রসিকতার মাঝেই হঠাৎ করে সে অট্টহাসি দিয়ে উঠলো। দুর্ভাগ্যবশত সেই মূহুর্তে তাদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল কয়েকজন লোক। তাদের মধ্যে থেকে একজন বলে উঠলো " রাস্তাঘাটে এত উচ্চস্বরে হাঁসতে নেই, এতে অন্যেরা খারাফ ভাবে "। নীলা নতস্বরে তাকে বললো 'আমি দুঃখিত, এটা আমি ঠিক করিনি'। লোকটি মৃদু হেঁসে বললো , খুব ভালো।
অপরিচিত এই লোকটিকে নীলা আগে কখনো দেখেছে বলে মনে হয়নি তার। সে আড়াল চোখে লোকটিকে চেয়ে দেখলো। লোকটির গায়ে ছিল কালো রঙের একটি টি-শার্ট পরা। লোকটি দেখতে ছিল বেশ সুদর্শন। নীলা বাড়ি ফেরার পর প্রতি মুহূর্তেই ঘটে যাওয়া ঘটনাটি এবং সেই লোকটিকে বারবার স্মরণ করতে লাগলো। তার মধ্যে কেমন জানি একটা কৌতুহল কাজ করতে ছিল। পরদিন নিলা যখন স্কুলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলো দেখলো কেউ একজন দূরে দাঁড়িয়ে আছে। কাছে গিয়ে সে দেখলো গতদিনের তার কৌতূহলের সেই লোকটা দাঁড়িয়ে আছে।
সে কিছুটা পথ এগিয়ে যাওয়ার পর তার মনে হলো কেউ তাকে পেছন থেকে ডাকছে। পেছন তাকাতেই সে লোকটি বলল একটু থামো। তখন সে লোকটি তাকে বলল, তোমার নাম কি নিলা? নিলা উত্তর দিল, হ্যাঁ। সে তখন বলল আমার নাম, রূপ। তখন নীলা তাকে জিজ্ঞেস করল আপনি আমার নাম কীভাবে জানেন! রূপ বলল আমি তোমাকে প্রায় এই পথে দেখি। তাই তোমার নাম জানি। সেই দিনের পর থেকে প্রতিনিয়তই তাদের দুজনের মধ্যে বেশ যোগাযোগ হয়। দুজনের মধ্যে খুব ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি হয়।
রূপ ছিল ভার্সিটির স্টুডেন্ট। এছাড়াও সে একটা ছোটখাটো জব করতো। ব্যস্ত সময় পার করেও ঠিক দুজনের যোগাযোগটা ঠিক ছিল। ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্কটা গড়ে উঠলো ভালোবাসার। সময় পেরিয়ে নীলা তখন উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করল। কিন্তু সময়ের সাথে তার পারিপার্শ্বিক চিন্তাভাবনাও প্রসারিত হতে লাগলো। তারমধ্যে রূপের প্রতি প্রবল আবেগ কাজ করতে লাগলো। রূপকে আপন করে কাছে পাওয়ার আবেগে সে প্রতি মূহুর্তেই ডুবে থাকতো। দিনে দিনে তা আরো বেশি আকার ধারণ করলো। অনেক ভেবে চিন্তে সে তার পরিবারের সাথে রূপকে পরিচয় করিয়ে দিল। তার ধারণা ছিল পরিবার তার মতামতে সায় দিবে। কিন্তু হাজারো চেষ্টার পর তার পরিবার কিছুতেই তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি।
কিন্তু রূপের প্রতি নীলার এতটাই আবেগ ছিল সে রূপকে ছাড়া আর অন্য কিছু কল্পনাও করতে পারে না। ভালোবাসার আবেগের তাড়নায় যে দিন দিন হতাশ হতে থাকে। কিছু সময় কাটার পর দুজনেই সিদ্ধান্ত নিলো তারা পরিবারের অজান্তে বিয়ে করে নিবে। দুজনেই বুঝতে পারছে বিষয়টা কোনোভাবেই যৌক্তিক কিংবা কাম্য নয়। তবে এছাড়া অন্য উপায়ও তাদের ছিলো না। অবশেষে শত চিন্তা ভাবনা করে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলো। কিন্তু নীলার একটু ভুলের কারণে তার পরিবার তা বুজতে পারে। তাদের এমন সিদ্ধান্তে তারা বিচলিত হয়ে পড়ে। কিন্তু দুজনের এমন বোঝাপড়া দেখে তারা তাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। দুই পরিবার থেকেই তাদের বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়।
( বাস্তবতার ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই অনেক সম্পর্কই এভাবে পূর্ণতা পায় আবার কোনো সম্পর্ক কিছু পিছুটানেই ভেঙে যায়। তবে ভালো লাগা ভালোবাসার যে আবেগ তা চিরকাল রয়ে যায়। )
আমার পরিচয়
আসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও ভালো আছি।শুরুতে সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমি নিগার সুলতানা জেবিন, আমার Steemit ব্যবহারকারী আইডি - @nigarjebin। আমি ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেছি। বর্তমানে ফেনী শহরেই অবস্থান করছি। আমি ফেনীতে পড়াশোনা করেছি এবং বড় হয়েছি।আমি ভ্রমণ করতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসি। নৃত্য নতুন জায়গা ভ্রমন করতে আমার খুব ভালো লাগে। আমি লেখালেখি এবং বিভিন্ন কারুকাজ করতে ও খুবই পছন্দ করি। আর আমার অন্যতম শখ হলো রান্না করা । প্রতিদিন নতুন কোনো না কোনো রেসিপি বানাতে আমি আনন্দ পাই।
ধন্যবাদ আমার পোস্টটা ভিজিট করার জন্য |
---|
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.