আমার বোনের বিয়ে। পর্ব:- ৫
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
বোনের বিদায় পরে সবার মন যেহেতু অনেক বেশি খারাপ ছিল তাই সবাই চেষ্টা করলাম তাড়াতাড়ি রাতের খাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়তে। রাতে ঘুমের পর পরের দিন একটা নতুন সকাল নতুন আমেজ। একদিকে ঘরটা একটু ফাঁকা ফাঁকা লাগছে কারণ বোন যেহেতু বাড়িতে নেই আবার অন্যদিকে বোনের আজকে বৌভাত তাই বাড়িতে অনেক কাজ। বিকালে বৌভাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তত্ত্ব সাজাতে হবে তাড়াতাড়ি সাজগোজ করে তাড়াতাড়ি বোনের শ্বশুরবাড়িতে যেতে হবে সবমিলিয়ে অনেক বেশি তাড়াহুড়ো বাড়িতে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই হাতমুখ ধুয়ে একবারেই স্নান করে নিলাম। কারণ এত মানুষ রয়েছে বাড়িতে, দেরি করলেই বাথরুমের জন্য লাইন পড়ে যাবে। আর যত তাড়াতাড়ি নিজের কাজ সেরে নেওয়া যায় তত তাড়াতাড়ি অন্যান্য সব কাজও করে নেওয়া যাবে। তাই ঝটপট স্নান সেরে সকালের খাবার খেয়ে নিলাম। আমার পরপরই আমার একমাত্র বৌদি সেও ঝটপট স্নান করে আমার সাথেই একসাথে খেয়ে নিল। তারপর ননদ বৌদি দুজন মিলে বাড়ির কিছু মানুষকে ডেকে দিলাম যারা বিনা কাজে বসেই ছিল। তারপর সবাই মিলে বসে গেলাম তত্ত্ব সাজাতে।
তত্ত্ব সাজাতেই মোটামুটি দু-তিন ঘন্টা লেগে গেল। বিয়ে বাড়িতে সবাই মিলে একসাথে গল্প করতে করতে তত্ত্ব সাজাতে অনেক বেশি মজা লাগে। মনেই হয় না কোনো কাজ করছি আর কাজ ভাগাভাগি করে নিলে দেখতে দেখতে কাজ হয়ে যায়। তত্ত্ব সাজিয়ে সুন্দর করে তত্ত্বগুলো গুছিয়ে রেখে চলে আসলাম আমরা অর্থাৎ মেয়েরা সাজুগুজু করতে। মেয়েদের তো সাজগোজ করতে একটু বেশি সময় লাগে তাই আমরা তাড়াতাড়ি সাজগোজের জিনিস নিয়ে বসে পড়েছিলাম। আর একা সাজগোজ করলে তো হয় না বাড়িতে ছোট ছোট অনেক বোন আছে তাদেরকেও সাজিয়ে দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে সাজগোজ করতে অনেক সময় লেগে যায়। আমরা সাজগোজ করছি এমন সময় আমার বোন শ্বশুরবাড়ি থেকে ভিডিও কল করেছে দেখার জন্য যে আমরা কতদূর রেডি হয়েছি আর কখন আসছি। বোনের যেন আর অপেক্ষার সময় কাটছে না আমরা কখন আসব সেই প্রতীক্ষায় রয়েছে। সেও ওদিকে সাজগোজ করছিল আর আমরা এদিকে সাজগোজ করছিলাম। একটুক্ষণ কথা বলেই ফোনটা রেখে তাড়াতাড়ি সাজগোজ সম্পন্ন করে নিলাম। আমার মাসি বাড়ির কাছেই ছিল বোনের শ্বশুরবাড়ি।
হেটে হেঁটেই চলে যাওয়া যায় কিন্তু বৌদি যেহেতু শাড়ি পড়েছে এবং আমি অনেক বেশি ভারী লেহেঙ্গা পড়েছি তাই আমাদের দ্বারা হেঁটে হেঁটে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। আর লেহেঙ্গার ঝুল যেহেতু অনেক নিচু অব্দি হয় তাই যদি হেটে যাই তাহলে রাস্তা পুরো আমার লেহেঙ্গাতেই পরিষ্কার হয়ে যেত। তাই বৌদিকে দাদা বাইকে করে নিয়ে গেল এবং বৌদিকে রেখে আবার আমাকে নিয়ে গেল বোনের বাড়িতে। আসলে বৌভাতের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল বোনের বাড়ির সামনে একটি অনেক বড় ফাঁকা মাঠের মধ্যে। আমরা অনুষ্ঠান বাড়ির মধ্যে ঢুকতেই সামনে দেখতে পেলাম সুন্দর একটি গণেশ ঠাকুরের মূর্তি রয়েছে। ভেতরে চারিপাশ জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্টল। এবং তার একদিকে রয়েছে অর্থাৎ এক কর্নারে রয়েছে বর বউয়ের বসার জন্য স্টেজ এবং অন্যদিকে গানের আসর বসানো হয়েছে। আমরা অনুষ্ঠান বাড়িতে ঢুকেই সোজা চলে গেলাম বোনের সাথে দেখা করতে। বোন আমাদের দেখে অনেক বেশি খুশি হলো, একসাথে বেশ কয়েকটা ছবিও তুলে নিলাম। ধীরে ধীরে আত্মীয় স্বজন আসছে বোনের সাথে দেখা করতে তাই বেশি সময় না নিয়ে আমরা বোনের সাথে কিছু ছবি তুলেই স্টেট থেকে নিচে নেমে চলে এলাম অন্যদের সাথে দেখা করতে।
পরিচিত আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে গল্প টল্প করে স্টল গুলো ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম কি কি খাবার সেখানে রয়েছে, যেই চোখে পড়ল আমার প্রিয় আইসক্রিমের স্টল ওমনি সোজা চলে গেলাম আইসক্রিম আনতে। আইসক্রিম নিয়ে খেতে খেতেও বেশ কয়েকটা সেলফি আমরা নিজেরা তুলে নিলাম। অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি এবং ছোট ছোট কিছু ভিডিও ক্লিপ নিয়ে যেখানে গান হচ্ছিল সেই গানের সামনে বসার জন্য অনেকগুলো চেয়ার পাতানো ছিল, সেখানে গিয়ে বসে পড়লাম। সত্যি কথা বলতে এত ভারি লেহেঙ্গা পড়ে বেশি হাঁটাহাঁটি করতে অনেকটাই কষ্ট হচ্ছিল আমার। তবুও একমাত্র বোনের বিয়ে বলে কথা সাজগোজের অভাব করলে চলবে না। সুন্দর করে সাজতে হবে এবং অনেক বেশি মজা করতে হবে এটাই আমার লক্ষ্য ছিল, কারণ আর কোনো বোন নেই বাকি যার বিয়ে হয়নি। আছে কিছু দাদারা যাদের বিয়ে হয়নি কিন্তু তাদের বিয়ের কথা বললেই শুধু বলে বিয়ে করবে না আমার বরকে দেখে নাকি শিক্ষা হয়ে গেছে। ওরা বোঝে না আমার বরকে আমি কত বেশি ভালোবাসি আর কত ভালো রাখার চেষ্টা করি। আমি ওদের বললাম সুন্দর একটা মেয়ে খুঁজে দেবো যে তোদের ও অনেক বেশি ভালবাসবে আর অনেক বেশি কেয়ার করবে। তবুও তারা আমার পেছনে লাগার একটুও সুযোগ মিস করতে চায় না। আর সব সময় আমাকে রাগানোর চেষ্টা করে। আর বলে তোকে আর তোর বরকে দেখে শিক্ষা হয়ে গেছে, বিয়ে করব না।
ক্যামেরা পরিচিতি : Realme
ক্যামেরা মডেল : realme narzo 60 pro
ক্যামেরা লেংথ : 26 mm
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।







বোনের বিবাহ উপলক্ষে অনেক সুন্দর আপনি সময় পার করেছেন। ভালো লেগেছে আপনাদের সুন্দর আনন্দঘন মুহূর্তের কিছু চিত্রপট দেখতে পেরে। এখানে খেয়াল করে দেখলাম আমাদের কমিউনিটির আরো একজন শ্রদ্ধেয় ইউজার নিলয় মজুমদার দাদা রয়েছেন। সব মিলে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে।
আপনার বিয়ে বাড়িতে কাটানো মুহূর্তটি পড়ে বেশ ভালো লেগেছে। দেখতে দেখতে আপনি ৫ম পর্ব শেয়ার করলেন। তবে বৌভাতের বিষয়টির বেশ ভালো লেগেছে। পরিবারের সবাই মিলে তত্ত্ব সাজিয়ে নিয়ে গেলেন এবং সুন্দরভাবে বৌভাতের দিন সবাই মিলে আনন্দ করলেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মুহুর্তটি সবার সাথে শেয়ার করার জন্য।