প্রথমবার জন্মদিন পালন (১০% @shy-fox এর জন্য বরাদ্দ।)
নমস্কার, আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন। সবাইকে অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমি গতকাল ভেরিফায়েড ট্যাগ পেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে ভেরিফায়েড ট্যাগ পেয়ে। তবে আরো ভালো লাগছে এই জন্য যে গত পরশুদিন আমার জন্মদিন ছিল। জন্মদিনের পরে এমন গিফট কার না ভালো লাগে। ধন্যবাদ @abb-school, @shy-fox এবং @amarbanglablog কে।
জন্মদিন আমার কাছে কোনদিনই স্পেশাল ছিল না। অন্য সব সাধারণ দিনের মতোই ছিল। এই দিনটা কখনো স্পেশালভাবে কাটাইনি। এ বছর জন্মদিনের দিন সকালবেলায় কোনো মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অবশ্য সেটা আমার বউয়ের ইচ্ছাতেই। তার আগে আমি কখনো জন্মদিনে কোথাও পুজো দিতে যায়নি। তবে অনেককেই দেখেছি জন্মদিনের দিন কোন মন্দিরে গিয়ে পুজো দিতে। সেই মতো পরশুদিন সকালবেলা (২৬ অক্টোবর) অর্থাৎ জন্মদিনের দিন আমি এবং আমার স্ত্রী গেছিলাম বহরমপুরের এক বিখ্যাত কালী মন্দির বিষ্ণুপুর কালি বাড়িতে। আমি হাতে গোনা কয়েকবারই এই মন্দিরে পুজো দিয়েছি, তবে জন্মদিনের এই প্রথম। সকাল বেলা স্নান করে গাড়ি নিয়ে দুজনে চলে গেলাম পুজো দিতে। যাওয়ার পথে কিছু কাঁচা মিষ্টি কিনে নিলাম একটা মিষ্টির দোকান থেকে। তারপর ফলের দোকান থেকে পাঁচ রকম ফল এবং মন্দিরের পাশের দোকান থেকে ধূপকাঠি ও মোমবাতি কিনে মন্দিরে প্রবেশ করি। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমরা পুজো দিলাম। তারপর মন্দির থেকে বেরিয়ে আমার স্ত্রীর ইচ্ছেতেই মন্দিরের পাশে বসে থাকা কয়েকজন বয়স্ক মহিলা এবং একজন বৃদ্ধকে সাধ্যমত মিষ্টি খাইয়ে ফিরে আসছিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
হঠাৎ মনে পড়লো পাশের একটি শিব মন্দিরে আমার স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়নি কখনো। তারপর গাড়ি ঘুরিয়ে চললাম কাশিমবাজার পাতালেশ্বর শিব মন্দিরের উদ্দেশ্যে। পথেই দেখালাম কাশিমবাজারস্থিত ওয়ারেন হেস্টিংসের সমাধি। যা ব্রিটিশ সিমেন্ট্রী নামে পরিচিত। বাইরে থেকেই দেখালাম, যদিও ভেতরে প্রবেশ করিনি।
এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম কাশিমবাজার পাতালেশ্বর শিব মন্দিরে। এই মন্দিরের পেছনে রয়েছে কাটিগঙ্গা, যা আদতে একটি অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ। বর্তমানে এর অনেক অংশ মজে গিয়ে বিলের আকার ধারণ করেছে। ইংরেজ আমলে এটি ছিল গঙ্গার মূল স্রোত এবং কাশিমবাজার তখন ছিল বন্দর শহর তথা বাণিজ্য নগরী। এখানে মহাদেব কে দর্শন করে মন্দিরের আশেপাশে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। এই মন্দিরের পরিবেশ বেশ শান্ত ও সুন্দর। ফেরার পথে মন্দিরের সামনে বসে থাকা কয়েকজন বয়স্ক মহিলাদের সাধ্যমত কিছু দান করলাম। এরপর রওনা করলাম বাড়ির দিকে।
এরপর স্ত্রীর অনুরোধে আমাকে থামতে হল একটি বেকারীর সামনে। এখানে নানা রকম কেক, পেস্ট্রি, আইসক্রিম, চকলেট ও নানারকম বেকারীর আইটেম পাওয়া যায়। আমি ভাই ফোঁটাই দিদিদের দেওয়ার জন্য তিনটে ক্যাডবেরি সেলিব্রেশন ব্যাক কিনলাম আর আমার জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমার স্ত্রী কিনলো একটি বড় কেক। তারপর বাড়ি ফিরে এলাম।
আমাদের বংশের নিয়ম অনুযায়ী আমাদের জন্মদিন পালন নিষেধ। তাই জন্মদিনের দিন জন্মদিন উপলক্ষ্যে কোন কিছু করা হয় না। পায়েস পর্যন্ত খাওয়ানো হয় না। তাই একদিন পরে গতকালকে আমার বার্থডে সেলিব্রেশন হয়েছিল আমার স্ত্রীর উদ্যোগে।
গতকাল সন্ধ্যায় আমার পরিবারের সাথে ছিল আমার ছোট পিসি, বড়ো মামা, ছোট মা (ভিক্ষা মা) ও তার দুই মেয়ে (আমার দিদিরা), আমার বান্ধবী কাম দিদি চুমকি, আমার প্রাণের প্রিয় ভাইপো অভিক। সবার সাথে জন্মদিনের আনন্দ ভাগ করে নিলাম। একদিন পরে হল আমার জন্মদিন পালন। তবুও জীবনে প্রথমবার আমি আমার জন্মদিনের কেক কাটলাম। তারপর সবাইকে কেক, মিষ্টি, পায়েস খাওয়ানো হয়। প্রথমবার এমনভাবে জন্মদিন পালন করে খুবই ভালো লেগেছে। তবে এটা আমার কল্পনার অতীত ছিল, আমি ভাবিনি এমনভাবে কখনো জন্মদিন পালন করতে পারব। যদিও এর সবটাই আমার স্ত্রীর কৃতিত্ব। সে নিজে হাতে আমার জন্য পায়েস রান্নাও করেছিল।
**সকলে ভালো থাকবেন। আর সবাইকে ভালো রাখবেন। **