কুঁড়িদের সঠিক পরিচর্চা করে এবং জীবনের মূল্যবান শিক্ষা দিয়ে আদর্শ মানুষ করে গড়ে তুলুন।
প্রিয় বন্ধুরা,
সকলকে আজ সহ আগামী দিনগুলি ভালো কাটার শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আজকের লেখা শুরু করছি।
আমাদের সকলের বাড়িতেই কম বেশি গাছ দেখা যায়, কারোর বাড়িতে বিভিন্ন ফুলের গাছ, কারোর বাড়িতে ফল এবং সবজির গাছ চোখে পড়ে।
যখন দিনের পর দিন আমরা এই গাছগুলোর সঠিক পরিচর্চা করি;
ফলস্বরূপ আমরা ফুল, ফল এবং সবজির দেখা পাই।
জীবনটাও কিন্তু এই গাছেদের মতন, শৈশব থেকে যেভাবে আমরা শিশুদের গড়ে তুলি, বড়ো হয়ে সেই পরিচর্চা অনুযায়ী আমরা ফল পাই।
আমি প্রতিদিন নব প্রজন্মের কথা বলি, কিন্তু আজকের আমার এই লেখা সেই সকল মা, বাবার উদ্দেশ্যে যারা মনে করেন নিজের সন্তানকে সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে তাদের ইচ্ছে পূরণ করে গড়ে তোলার মধ্যে তাদের স্বার্থকতা।
যারা এই অন্ধ ভালোবাসা দেখিয়ে নিজেদের ছেলে মেয়েদের বড়ো করে তুলেছেন, বা তুলছেন তাদেরকে বলতে চাই, কোনো গাছে যদি অতিরিক্ত জল এবং সার দেওয়া হয়, সেই গাছ সঠিকভাবে বেড়ে তো ওঠেই না, বরঞ্চ তার মরে যাবার সুযোগ বেড়ে যায় অনেকগুণ।
তার মানে দাড়ালো, কোনো কিছুই অতিরিক্ত সুফল বয়ে আনে না, ঠিক তেমনি অন্ধ ভালোবাসার জোয়ারে বয়ে গিয়ে একটি শিশুকে যখন তাদের মা, বাবা বড়ো করে তোলেন;
তখন সেই শিশুর দোষ, অপরাধ তাদের চোখে পড়ে না।
এর ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেই শিশু কখনোই বড়ো হয়ে আদর্শ মানুষ হিসেবে সমজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
বরঞ্চ ছোটো সেই চারা রুপি গাছটি যখন বৃক্ষে রূপান্তরিত হয় তখন সমাজের ব্যাধি ছড়ানো ছাড়া কোনো উপকারেই আসে না।
ঠিক সেই কারণে আজও বহু অপরাধ, বহু গর্হিত কর্ম করতে দেখা যায় কিছু মানুষকে।
কথায় আছে অপরাধ কেউ করে অভাবে আর কেউ করে স্বভাবে।
আজকে আমি অভাবের কথা নয়, স্বভাবের কথা বলছি। লোভ, ক্রোধ, অহঙ্কার, মোহ এইগুলো পরিত্যাগের শিক্ষা যদি শৈশব থেকে ছেলে মেয়েদের না শিখিয়ে বড়ো করা হয় তাহলে পরিণতির জন্য অন্য কেউ নয় সেই সকল মা, বাবারাই দায়ী থাকেন।
অনেক পিতা, মাতা ছেলেবেলা থেকেই তাদের সন্তানদের বুঝিয়ে দেন তাদের আর্থিক অবস্থান, এবং শাসন নয়, আস্কারা দিয়ে গড়ে তোলেন তাদের শৈশব।
কাজেই বড়ো হবার পর এই সকল ছেলে মেয়েরা কখনোই লোভ, অহঙ্কার, ক্রোধ, মোহ সংবরণ করতে পারে তো নাই, বরঞ্চ নিজেদের ইচ্ছে পূরণের জন্য প্রবঞ্চকতাই এদের হাতিয়ার হয়।
মানুষের উপকার অস্বীকার তো করেই, পাশাপশি আর্থিক দম্ভ এদেরকে একের পর অপরাধে সামিল করে।
এদের মধ্যে কৃতজ্ঞতা বোধ কখনোই কাজ করে না, এবং একটা সময় যখন এরা স্বর্বসান্ত হয়ে যায়, তখন নিজের কর্মের হিসেব করতে বসলেও অনেক দেরি হয়ে যায় সেটা সংশোধন করতে।
তাই সকল পিতা মাতার উদ্দেশ্যে আমার আজকের এই বার্তা, জেনে রাখুন আজকে আপনি যে গাছ বুণবেন, আগামীতে সেই অনুসারে ফল আপনাদের পেতে হবে।
কাজেই শাসনের মধ্যেও ভালোবাসা থাকে তাই, সময় সময় গাছকে ছাটার প্রয়োজন পড়ে। ভালোবাসা দেওয়াটা অন্যায় নয়, কিন্তু সন্তানের অন্যায়কে মুখ বুজে ছেলে মানুষী বলে সহ্য করাটা ততোধিক অপরাধ।
আজ এই পর্যন্তই এসে আমার লেখায় ইতি টানলাম, মনটা বিশেষ ভালো নয়, কারণ বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে আমার আজকের এই লেখা।
অনেক সময় অন্যের অন্যায় দেখেও কিছু না বলতে পারার জ্বালা তাড়িয়ে বেড়ায় নিজেকে।
ভালো থাকুন আর ভালোভাবে মানুষ করবার চেষ্টা করুন আগামী প্রজন্মকে।
স্যার আপনার লেখার সাথে বাস্তব জগৎ এ অনেকটা মিল আছে।কারণ আমার অনেক ছাএ ছাএীর মায়েরা আছে যারা ঠিক এরকম কাজ করছে,তার ফলে বাচ্চাটার ভবিষ্যৎ টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সঠিক কথা বলেছেন ম্যাডাম, এরা নিজেদের বিপদ নিজেরাই বৃদ্ধি করছে।
আমারা ছোটো বেলা থেকে জানি শাসন করা তার ই সাজে ভালোবাসা যে। কিন্তু এখনকার দিনে বাবা মায়েরা প্রকৃত শাসনের মানে বোঝে না বলেই আমার মনে হয়। তারা মনে করে বাচ্চাদের সব আবদার পূরন করলেই ভালোবাসা হয়।
আগের আর এখনকার সময়ের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য ম্যাডাম, এখন ভালোবাসা মানে ভুল চাপা দিয়ে সকল আবদার মেটানো।
আমিও নিজের বেশ কিছু কাছের মানুষের ক্ষেত্রে এই ধরনের বিষয়গুলো দেখি, যেটা সত্যি অসহনীয়, একটা শিশুর সমগ্র ভবিষ্যত্ নষ্ট হচ্ছে দেখে।