পরিকল্পিত প্রতিশোধ (চতুর্থ পর্ব)।

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পূর্ববর্তী পর্বের লিংক

আর তুমি যদি বেশি ঝামেলা করো তাহলে তোমার আম্মুকেও আমরা একটি জায়গায় আমরা আটকে রেখেছি। বেশি যন্ত্রণা করলে তোমার আম্মুকে আমার লোকজন মেরে ফেলবে। রাফি প্রচন্ড ভয় পেলো। সে তার মাকে অনেক ভালোবাসে। তার মায়ের ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ সে করতে পারবে না। রাফি মাথা জেরে সম্মতি জানালো। তখন সুজন রাফির মুখের টেপ খুলে দিলো। রাফি তাকে বলল আপনি যা বলবেন আমি তাই শুনবো। কিন্তু প্লিজ আমার মায়ের কোন ক্ষতি করবেন না।

Polish_20220721_200541525.jpg

সুজন তখন তাকে বলল তুমি যদি ভদ্র হয়ে থাকো তাহলে তার কোন ক্ষতি হবে না। তখন রাফি তাকে আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো। সুজনের বন্ধু যে গাড়ি চালাচ্ছিল সে বলল ওর হাতটাও খুলে। ও আর কোনো সমস্যা করবে না। তখন সুজন তার হাতটাও খুলে দিলো। দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকায় রাফির প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছিল। সুজন রাফির জন্য চিকেন বিরিয়ানি এনেছে। রাফিক ক্ষুধার্তের মত বিরিয়ানি খেতে লাগলো। সুজনের দৃশ্যটা দেখে বাচ্চাটার জন্য বেশ খারাপ লাগলো। কিন্তু পরক্ষণেই তার মনে পড়ে গেল রাফির বাবা তাদের জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছে। যার ফলে তাকে শিক্ষা দেয়ার জন্য সুজনকে কঠোর হতে হবে।

সুজন চিন্তা করতে লাগলো একসময় তাদেরও একটা সুখী পরিবার ছিলো। মা বাবা ভাই মিলে সবাই একসাথে বেশ ভালোই ছিল তারা। সুজনরা যে এলাকায় ছিলো রাফির বাবা সেই এলাকার নেতা ছিলো। রাফির বাবার ছত্রছায়ায় এলাকায় মাদক ব্যবসা হতো। সুজনের বড় ভাই আসলাম সেই মাদক ব্যবসায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় রাফির বাবা তাকে মিথ্যা মামলায় মাদকসহ জেলে ঢুকিয়ে দেয়। ছেলের এই পরিণতি দেখে সুজনের বাবা হার্ট এটাক করে মারা যান। তারপর সুজন এবং তার মা মিলে তার ভাইকে জেল থেকে ছাড়ানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেন। এক সময় তাদের সর্বস্ব বিক্রি করতে হয় আসলাম কে বের করার জন্য। কিন্তু তারা তাদের সর্বস্ব হারালেও শেষ পর্যন্ত রায়ে আসলামের সাজা হয়ে যায়। সম্পূর্ণ নির্দোষ হয়েও তাকে মাদক মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড ভোগ করতে হচ্ছে।

সেই শোকে একসময় সুজনের মা ও মারা যায়। এখন সুজন সম্পূর্ণ একা। তার মা মারা যাওয়ার পর থেকে সুজন প্রতিজ্ঞা করেছে যেভাবেই হোক আফজাল মিয়াকে সে ধ্বংস করে দেবে। তারপর থেকে সে পরিকল্পনা করতে থাকে কিভাবে তাকে শায়েস্তা করা যায়। একটি সিনেমা থেকে তার মাথায় এই বুদ্ধি এসেছে। পুরনো দিনের স্মৃতিতে সুজন ডুবে ছিলো। হঠাৎ রাফির ডাকে তার সম্বিত ফিরল। সুজন বলল কি হয়েছে? রাফি তখন তাকে বলল তার বাথরুম পেয়েছে। সুজন কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করল। তারপর সে ড্রাইভারকে বলল ফাঁকা একটি জায়গা দেখে গাড়ি থামাতে। তারপর সেখানে রাফিকে নামিয়ে বলল বাথরুম সারতে। কাজ শেষ হলে তারপর আবার অ্যাম্বুলেন্সে উঠে তারা রওনা দিলো

সুজন যেহেতু পেশাদার অপহরণকারী নয় তাই সে বুঝতে পারছে না এখন কোন দিকে যাবে। সুজনের পরিকল্পনা হচ্ছে প্রথমে রাফির বাবার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে টাকা নিতে হবে। তারপর রাফির বাবার মাধ্যমে তার ভাইকে জেল থেকে বের করতে হবে। এই দুটো কাজ তাকে দিয়ে করাতে হলে সুজনকে খুব ঠাণ্ডা মাথায় আগাতে হবে। সুজন জানে যদি সে টাকাটা নিতে কাউকে পাঠায়। তাহলে পুলিশ তাকে এরেস্ট করতে পারে। এই জন্য সে বিকল্প রাস্তা আগে থেকেই তৈরি করে রেখেছে। সুজনের এক খালাতো ভাই থাকে মেক্সিকোতে। নিরাপত্তার জন্য সুজন তার মোবাইলে একটি অ্যাপ ইন্সটল করেছে। যেই অ্যাপের মাধ্যমে কল করলে পুলিশ তার কল ট্রেস করতে পারবে না সহজে।

সেই এ্যাপটি ব্যবহার করে সুজন রাফির বাবাকে ফোন করে বলল একটি এড্রেস দিচ্ছি এই এড্রেসে ২ কোটি টাকা সমমূলের ক্রিপটোকারেন্সি কিনে পাঠাতে। রাফির বাবা তখন বলল আমি তো এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা। তখন সুজন তাকে বলল যে জানে তার কাছ থেকে জেনে পাঠান। সুজন তাকে আরো বললো আমি যতদূর জানি আপনি বাইরে প্রচুর টাকা পাচার করেছেন। অতএব আপনার এই মাধ্যম না জানার কোন কারণ নেই। ২৪ ঘন্টা সময় দিলাম। ২৪ ঘন্টার ভেতরে এই অ্যাড্রেসে ২ কোটি টাকা সমমূল্যের ক্রিপ্টো কারেন্সি পাঠাবেন। যদি সময় মত টাকা পাঠান তাহলে ছেলেকে ফেরত পেয়ে যাবেন। আর যদি টাকাটা না পাঠান তাহলে ছেলেকে আর কখনোই দেখতে পাবেন না। (সমাপ্ত)

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আগের পর্বগুলো করেছিলাম সেখান থেকে রাফির ও রাফির বাবার আমার জন্য খুবই খারাপ লাগছিল। কিন্তু এখন মনে হয়েছে যে কিডন্যাপ করে আর টাকা চেয়ে ভালোই করেছে। আসলে পরে সুজনের পরিবারের জন্য খুবই খারাপ লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম

 2 years ago 

প্রথমে মনে হয়েছিল অপহরণকারী সুজন অপরাধী। কিন্তু সর্বশেষ ধাপে এসে দেখলাম সুজনকে অপরাধী বানিয়েছে রাফির বাবা। অনেকেই কি মনে করে জানিনা তবে আমার মতে সুজনের মুক্তিপণ চাওয়া যুক্তিসঙ্গত। এ ধরনের মানুষদের এভাবে শাস্তি দেওয়া উচিত। কারণ আইন রাফির বাবাদের বিচার করতে পারবে না।