প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়
আসসালামু আলাইকুম
প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়
আমাদের বিদ্যালয়ের নাম গিলাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টি টাঙ্গাইল জেলায় অবস্থিত।আমি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছি।আমাদের এই বিদ্যালয়টি অত্যন্ত একটি গ্রামের ভেতর অবস্থিত। ১৯৯০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক খারাপ। এখনো আমাদের এই গ্রামের রাস্তাঘাট পাকা হয়নি। বর্ষাকাল আসলে স্কুলে যাতায়াত করা অনেক কষ্ট হয়ে যায়। এখানকার রাস্তাঘাট গুলো সমতল এলাকার মতন নয়, উঁচু-নিচু ঢালু। মাটির রাস্তা দিয়ে সকালে হেটে হেঁটে স্কুলে যেতাম। লাল মাটির রাস্তা যেতে যেতে পা গুলো ধুলাবালিতে ভরে যেত। আমরা ৫-৬ জন মিলে এক সাথে সকালে স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হতাম।
গল্প করতে করতে আমরা স্কুলে যেতাম। বর্ষাকাল আসলে আমাদের স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হতো কারণ রাস্তা কাদায় পরিপূর্ণ থাকতো। অনেক বছর পর আমার প্রাণের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। স্কুলে যাওয়ার পর অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লাম। স্কুলের অনেক কিছুই বদলে গেছে। যে দোলনায় বসে আমরা দোল খেতাম সেটি আর এখন নেই।অনেক খেলনার রাইড ছিল সেগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা খুবই কম শুধুমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকার কারণে। আমরা যেহেতু এই গ্রামেরই মানুষ তাই বাধ্য হয়ে আমরা এখানেই লেখাপড়া করতাম। যোগাযোগ ব্যবস্থা এতটাই খারাপ যে পাকা রাস্তায় যেতে অনেক সময় লাগতো। আমাদের স্কুলের পাশে অনেক কলাবাগান এবং আনারস বাগান রয়েছে।আমরা অনেক সময় কলা এবং আনারস খেয়েছি। যেহেতু আমাদের এখানে পাহাড়ি এলাকায তাই শুরুতে একটি টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল সেটি অনেক শক্তি লাগতো পানি তুলতে।
পরে অবশ্যই অন্য আরেকটি টিউবওয়েল বসিয়েছিল সেটি তেমন একটা শক্তি লাগতোনা পানি তুলতে। আমাদের স্কুলের ছোট্ট একটি মাঠ রয়েছে মাঠের পাশে কয়টি কাঁঠাল গাছ রয়েছে গরমকালে যখন কাঁঠাল পাকতো অনেক সময় আমরা সেগুলো খেতাম।
এরকম গ্রামে স্কুলে পড়ার আলাদা একটি মজা রয়েছে।এখানে নেই কোন কোলাহল নেই কোন গাড়ির শব্দ সবসময় শুনসান নিরবতা। এই স্কুলে নতুন একটি ভবন তৈরি করা হচ্ছে যেটা দেখে অনেক ভালো লাগলো।
কিন্তু এখনো কষ্ট লাগে যে আমাদের এই গ্রামে কোন পাখা রাস্তাঘাট নেই তাই আপনি যেভাবে আসেন না কেন কাঁচা রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসতে হবে বর্ষাকালে কষ্টটা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আধুনিক সমাজে এসে আমরা কি আমাদের গ্রামে একটি পাকা রাস্তা পেতে পারি না অন্তত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা চিন্তা করে হলেও। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসতে আগ্রহী হবে।শিক্ষা জীবনের শুরুতে এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুরুত্ব অপরিসীম যারা আমরা গ্রামে বাস করি।
আমাদের স্কুলে ১৬ ডিসেম্বর এবং ২৬শ মার্চের যখন অনুষ্ঠান হতো তখন অনেক ভালো লাগতো বিভিন্ন খেলাধুলে অংশগ্রহণ করতাম। সারা বছর এই দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করতাম কারণ আমাদের গ্রামে বিনোদনের অন্য কোন ব্যবস্থা ছিল না। আমার এই প্রানের প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে সবসময় ভালো অবস্থানে দেখতে চাই কারণ এই বিদ্যালয়টি আমাদের গ্রামে না থাকলে হয়তো অনেক কষ্ট করে আরো দূরে লেখাপড়া করতে যেতে হতো।তাই এই বিদ্যালয়টিকে আমি অনেক ভালবাসি।তাইতো যখনই সময় পাই মাঝে মাঝে এখানে ঘুরতে চলে আসি। ভালো থাকো আমার প্রানের বিদ্যালয় এবং শিক্ষকবৃন্দ সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
স্কুলের ছবি দেখলে বোঝা যাচ্ছে স্কুল টি অনেক পুরাতন। আপনি আপনার স্কুল সম্পর্কে অনেক সুন্দর কিছু কথা বলেছেন পড়ে অনেক ভালো লাগল। ছবিগুলো দারুণ হয়েছে।
আপনার পোস্টটি পড়ে বোঝা যাচ্ছে আপনি আপনার স্কুলে থাকাকালীন সময়ে অনেক আনন্দ করেছেন। যেমন পাশের আনারস ও কলা বাগান থেকে আনারস, কলা এবং কাঁঠাল খেয়েছেন। যদিও পাহাড়ি গ্রামে আপনার স্কুলটি হওয়ায় স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন যেগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। আপনার স্কুলের নতুন ভবন এবং টিউবিউল দেখে আশা করি আপনি অনেক বেশি খুশি হয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে আপনার স্কুল কে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।
স্কুলে পড়াকালীন সময়ে আমরা অনেক আনন্দ করেছি এগুলো হয়তো শহরে স্কুলে থাকলে করতে পারতাম না। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা
শুনে খারাপ লাগল যে গ্রামে পাকা রাস্তা নেই। তবে স্কুলের পরিবেশ খুব সুন্দর, এরকম কোলাহলমুক্ত পরিবেশ সব স্কুলে থাকে না। আশা করি শীঘ্রই গ্রামে একটি পাকা রাস্তা তৈরি হবে।
অসাধারণ কিছু ছবি শেয়ার করেছেন৷ লেখার দারুণ হয়েছে আপু। এভাবে নিয়মিত পোস্ট করবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
We expected you to be friendly and active in the Steem For Tradition Community. We appreciate your effort. Thank you for sharing your beautiful content with us ❤️.