আপন হারানোর কষ্ট যিনি দেন,তা সহ্য করার ক্ষমতাও দেন তিনি
Hello,
Everyone,
কেমন আছেন সকলে?
আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আজকের দিনটা নিশ্চয়ই সবার ভালো কেটেছে।
আমার দিনটা খুব ভালো কাটেনি। শরীর খারাপের পাশাপাশি কালকের ঘটনার রেশও রয়েছে কিছুটা। সারাদিন খবরের চ্যানেল চালিয়ে দিয়ে ঘরের কাজ করেছি।
কাজের ফাঁকে দেখেছি কিভাবে ভালোবাসার মানুষকে ভালোবেসে বিদায় দিয়েছে সব্যসাচী।একথা সত্যি মানতে হবে সবাই ভালোবাসতে জানেনা। তাই সবাই সব্যসাচী হতে পারে না।
ভালোবেসে যে দায়িত্ব ও নিয়েছিলো, একেবারে শেষ পর্যন্ত ও পালন করেছে। নির্বিকার ভাবে, নিঃশব্দে বিদায় দিয়েছে তার মনের মানুষকে। পরের জন্ম বলে যদি সত্যিই কিছু থাকে তবে যেন ঈশ্বর ওদের মিলিয়ে দেন শুধু এইটুকুই বলতে চাই।
কথায় আছে-আজকে মরলে কালকে দুদিন। একদমই তাই। সময় ছুটে চলে আপন গতিতে, আর আমরা ছুটি সময়ের পিছু পিছু। কারন এই ছুটে চলাই জীবন।
আমি জানি দুদিন বাদে আবার সবকিছু স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে। ঐন্দ্রীলাকে, ওর লড়াইকে ভুলে যাবে আমাদের মতো সাধারণ মানুষেরা। আবার নতুন কোনো খবর জায়গা করে নেবে আমাদের জীবনে।
ওর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আবার ওকে কিছু বছর মনে করা হবে, ধীরে ধীরে সেটাও বন্ধ করে দেবো আমরা। শুধু ওর পরিবার আর সব্যসাচী ওকে ভুলতে পারবে না কখনোই।
যেমন ভাবে আমরাও পারিনা। শুধু ঐ হারানোর যন্ত্রনাটার সাথে অভ্যস্থ হয়ে যাই, এই যা। এইভাবেই পৃথিবী চলছে। ঈশ্বরের সৃষ্টি এমনই। এমন ভাবেই তিনি আমাদের তৈরি করেছেন।
না হলে ভাবুন তো আমাদের প্রিয়জনের মৃত্যুর শোক যদি প্রথম দিনের মতো সারা জীবন ধরে প্রত্যেকদিন একই রকম ভাবে কষ্ট দিতো, আমরা কি বেঁচে থাকতে পারতাম?পারতাম না।
আর ঠিক এই কারনেই ঈশ্বর মানুষকে কষ্ট দেওয়ার পাশাপাশি তা সহ্য করার শক্তি দিয়েছে। একদিকে আপনজনকে কেড়ে নিলেও অন্যদিকে নতুন প্রানের সৃষ্টি দিয়েছে। আর এইভাবেই পৃথিবী চলছে, আর আগামীতেও এই রকম ভাবেই চলবে।
আমি যখন আমার মা কে হারাই তার আগে আমি ভাবতাম যাদের মা বেঁচে নেই তারা কি করে থাকে? কিন্তু এখন বুঝি এই থাকার শক্তিটুকুও ঈশ্বর প্রদান করেন। মাকে কেড়ে নিতে হবে বলেই বোধহয়,তার কয়েক বছর আগে শুভকে আমার জীবনে পাঠায়।
আজ জীবনে অনেক পরিবর্তন ঘটলেও মা কে হারানোর সময়টা শুভ আমাকে আগলেছে সেটা অস্বীকার করতে পারিনা। তখন শুভ না থাকলে বোধহয় আমি থাকতে পারতাম না। ঈশ্বর সবটা বুঝেই আমাদের জীবন সাজান।
ঈশ্বরের উপর আমাদের অভিযোগ, অনুযোগ সবকিছু থাকলেও কঠিন সময়ে আমরা তার শরনাপন্ন হই। আমরা হয়ত অনেক সময় বুঝতে পারি,আবার কখনো হয়তো বুঝতে পারি না,কিন্তু সত্যি এটাই ঈশ্বর যা করেন মঙ্গলের জন্য।
আসলে সময়ের সাথে সাথে আমরা সবকিছু মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে শিখে যাই,আর এই কারণেই সকলে বলে পৃথিবীতে কারোর জন্যই কিছু থেমে থাকে না।
কালকের তুলনায় আজ কষ্ট কম হচ্ছে, আগামীকাল আরও কম হবে, এইভাবেই একটা সময় ভুলে যাবো, আবার হয়তো কখনো কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মনে পড়বে। এটাই আসলে জীবন। এইভাবেই চলবে।
তবুও শেষ করার আগে অবশ্যই বলবো মানুষ না সবসময় দুই ধরনের মানুষকে মনে রাখে, যে খুব ভালো, অথবা যে খুব খারাপ। আর আমাদের কর্মের উপর নির্ভর করে আমরা সবার মনে কিভাবে থেকে যাবো।
হ্যাঁ সকলের চোখে ভালো থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু সেদিক থেকে ঐন্দ্রীলা-সব্যসাচীর মতো মানুষেরা লাকী যে তারা কিন্তু মানুষের মনে ভালবাসার মানুষ হয়েই থেকে যাবে। অসংখ্য মানুষ ভালোবাসে ওদের।
যাইহোক, আপনারাও ভালো থাকবেন, নিজের ও আপনজনের খেয়াল রাখবেন। শুভ রাত্রি।
এটা সত্যিই যিনি কষ্ট দেন তিনিই সহ্যশক্তি দেন, আর এই কারনেই হয়তো আমরা কষ্টের সময় ঈশ্বরকে ডাকি। ভালো লিখেছ। সত্যি খবরটা খুব মর্মান্তিক। ঐন্দ্রীলা ভালো থাকুক।
ধন্যবাদ দিদি আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য
একদম ঠিক বলেছেন দিদি।
@sampabiswas হ্যাঁ সবাই ভালো বাসতে পারেনা। এখন কার মানুষ ভালোবাসা কি সেটাই বোঝেনা। আমারও চোখে জল চোলে আসে ঐন্দীলার কথা ভেবে।এই টুকু বুঝলাম ভালো মানুষ বেশি দিন আমাদের কাছে থাকেনা।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য। সত্যিই ভালো মানুষ বেশি দিন থাকে না।
আমার মনে হয় সহ্য হয়ে গেছে এটা আমরা ভান করি সময়ের সাথে সাথে তবে ক্ষতটা একইরকম থাকে মনের অভ্যন্তরে।
হ্যাঁ স্যার, মনের গভীরে ক্ষত থেকে যায় আর তাতেই আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ি।