ভয়ানক মজার ভূতের গল্প||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

pexels-daisy-anderson-5589911.jpg
সোর্স

আকাশে চাদের অবস্থান দেখে আন্দাজ করলুম রাত প্রায় একটা বাজে।আমি বসে আছি গ্রামের বুড়ো বটগাছ টার তলায়।গ্রামের লোকজন সব সন্ধ্যা নামতে না নামতেই খেয়ে দেয়ে ভোস ভোস করে নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমুচ্ছে।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আমি তাইলে এই রাতের বেলা এই বটগাছের নিচে কি করছি?হ্যা জাগা টাই স্বাভাবিক।একজন ভদ্রলোক এই রাতের বেলা গাছের নিচে বসে থাকা অস্বাভাবিক বৈকি।

তবে আমি কি আর সাধে বসে আছি দাদা।সেই সন্ধ্যে বেলা খেতে বসে মাছের তরকারি খেতে খেতে বউ কে বলছিলুম,"হ্যা গো গিন্নি,তোমার মাছের তরকারি তো আজ খাসা হয়েছে।একদম পাশের বাড়ির বউদির মত"।

আর যাই কোথা।রে রে করে তেড়ে এল মুড়ো ঝাটা নিয়ে।বউয়ের হাতে ২-৪ টে চড় থাপ্পড় খেলে কিছু হয়না।তাই বলে মুড়ো ঝাটার বাড়ি? এ মানা যায়না।তাই পালিয়ে বাচলুম।

কিন্তু পালিয়েই বা এই রাতে যাব কোথা? তাই এই বট গাছের নিচেই আশ্রয় নিলুম। বৃষ্টি আসলে তাও খানিকটা বাচা যাবে।যাই হোক সে না হয় এক রাতে একটু নাই বা ঘুমালাম কিন্তু খিদেয় পেটে ছুচো তে ডন মারছে।অনেক ক্ষণ মনোযোগ অন্যদিকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করলুম কিন্তু পেলুম না।পকেট খুজেপেতে বের হল ১বান্ডিল বিড়ি।

বাহ!মনটা খুশি হয়ে গেল।এই ফুকে রাত পার করা যাবে।যেই ভাবা সেই কাজ।ধরিয়ে ফেললাম একটা বিড়ি।এরপর যেই আয়েশ করে টান দেব তখনই শুনি কে যেন ডাকছে

-দাদা শুনছেন?একটা বিড়ি হবে?

আমি প্রথমে ভয়ই পেয়ে গেলুম। না না ভূতের ভয় নয়।এই দুনিয়ায় বউ ছাড়া আর কাউকে ভয় পাইনা।তবে নেহাৎ চোর ডাকাত হলে আলাদা কথা।আমি চোর ভেবেই ভয় পেয়েছিলুম।পরে মনে পড়ল,"আরে পকেটে তো কোন টাকাই নেই।বউয়ের ভয়ে স্যান্ডো গেঞ্জি পড়েই দৌড় দিয়েছি।"

মহা বিরক্ত হয়ে বললাম,"এই কেরে,রাত বিরাতে একটু শান্তিতে যে বিড়ি খাব সেই যো নেই"।তখন উপর থেকে আওয়াজ আসল

-দিন না দাদা,একটা বিড়িই তো চেয়েছি।
-আরে দেব কিভাবে? কোথায় আপনি মশায়?
-দাদা এইযে গাছের ডালে।
-এই এত রাতে গাছের ডালে কি করছেন মশায়? নিচে নেমে আসুন।

তখনই ঝুপ করে একটা ছায়া মূর্তি আমার সামনে পড়ল গাছ থেকে।সে রোগা লিকলিকে,ঝাটার কাঠির মত চুল।আমি নিশ্চত এ ব্যাটা চোর।হয়ত কোথাও থেকে ধাওয়া খেয়ে এই গাছে উঠে বসেছে।কিন্তু তাতে আমার কি? কাছে তো ফুটো কড়িও নেই।তাই আলাপ জমাবার চেষ্টা করলুম

-তা মশায় আপনি গাছে কি করছিলেন?
-মশায় আমরা তো গাছেই থাকি? আপনি কি এই লাইনে নতুন নাকি? ডেরা খুজতে বেড়িয়েছেন?

আমি তার কথার আগা মাথা কিছুই বুঝলুম না।মানুষ আবার গাছে থাকে কিভাবে?তাই তাকে জিজ্ঞেস করলুম
-দাদা আপনার কথার আগা মাথা তো কিছুই বুঝছি নে? মানুষ আবার গাছে থাকে কিভাবে?

-তা দাদা এখন বুঝবেন না।কয়টা দিন যাক বুঝতে পারবেন।প্রথম কয়দিন নিজেকে মানুষ মানুষ ই মনে হয়।তারপর আস্তে আস্তে সব সয়ে যায়।

এবার মেজাজ খিচড়ে গেল।আমি তো মানুষই আবার মানুষ মানুষ কেন মনে হবে নিজেকে। তাই এবার চেপে ধরলুম।দাদা কি বলছেন খুলে বলুন তো।

-আরে দাদা এই সহজ কথাটা কেন বুঝছেন না? মানুষ মরলে বেশ কয়েকদিন বুঝতেই পারে না সে মরে গেছে।তাই বললুম কয়দিন গেলে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।প্রথম প্রথম আমারো এমন হয়েছিল।

-তার মানে আপনি জীবিত নন?
-জীবিত?তা ছিলুম এককালে।
এই শুনে তো আমি প্রায় অজ্ঞান হচ্ছিলুম ঠিক তখন.........

বিঃদ্রঃবাকি অংশ পরের পর্বে

নতুন কিছু করার চেষ্টা করলাম।অশান্ত মস্তিষ্কে ফিকশন গল্পের প্লট আনা খুবই মুশকিল তারপরেও অনেক চেষ্টা করে এতটুকু এগোতে পেরেছি।কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন।

Sort:  

হ্যা গো গিন্নি,তোমার মাছের তরকারি তো আজ খাসা হয়েছে।একদম পাশের বাড়ির বউদির মত"।

হা হা হা... এই লাইনটার যতবার পড়েছি ততবারই হাসি পেলো... বিশ্বাস করেন ভাই এই বছরের শ্রেষ্ঠ ভূতের নাকি হাসির গল্প পড়লাম এটা। চমৎকার উপস্থাপনা ছিল। অসাধারণ লেখার ধরন আপনার।

মানুষ মরলে বেশ কয়েকদিন বুঝতেই পারে না সে মরে গেছে।

এটাও খুব সুন্দর এবং অদ্ভুত একটা লাইন ছিল। হা হা হা...

পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। আশা করছি আরো সুন্দর করে হাসাবেন আগামী পর্বে।

 2 years ago 

দাদা কতটা উৎসাহিত হলাম বলে বুঝাতে পারব না।অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করে মনোবল বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।

আপনাকে উৎসাহ দিলাম কিনা জানিনা, তবে আপনি ডিজার্ভ করেন এটুকু বলতে পারি।

 2 years ago 

আপনার গল্পের, হ্যা গো গিন্নি, বলাটা মনে হচ্ছিল গোপাল ভাঁড় এসে বলতেছে।আপনার গল্প পড়ে মজা পেলাম। পরের পর্বে অপেক্ষা রইলাম।এভাবে চালিয়ে যান শুভকামনা রইল ।

 2 years ago 

ধন্যবাদ দিদি।অনেক উৎসাহিত হলাম।আপনার জন্যও শুভ কামনা রইল।

 2 years ago 

বউয়ের হাতে ২-৪ টে চড় থাপ্পড় খেলে কিছু হয়না।তাই বলে মুড়ো ঝাটার বাড়ি? এ মানা যায়না।তাই পালিয়ে বাচলুম

দারুণ ছিল ভাই গল্পটা। বিশেষ করে এই অংশটুকু তো বেশ হাস‍্যকর। প্রথমবার কোনো ভূতের গল্প পড়ে ভয়ের বদলে হাসি পেল হা হা। বেশ দারুণ লিখেছেন ভাই। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য।।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই।অনেক উৎসাহিত হলাম।আশা করি পরের পর্ব জলদি আসবে।

 2 years ago 

ভালো হয়েছে।গল্পের উত্তেজনা ধরে রেখে শেষ করেছেন।পড়ে বেশ মজাও পেয়েছি।তবে একটা ব্যাপার একটু এলোমেল মনে হলো,ওনার তো শার্ট এই ছিল না উনি বিরির প্যাকেট কই থেকে বের করলো😐

 2 years ago 

লুঙ্গীর কোছা থেকে ভাই।খেয়াল করে দেখবেন আগেকার মানুষ লুঙ্গীর কোছায় টাকা,বিড়ি রাখত।

 2 years ago 

ওহ আচ্ছা।তাইলে ঠিক আছে।ওটাই ভাবছিলাম আরকি আমিও।এইটা একটু কনফিউশন ছিলাম তো তাই বললাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আর কনফিউশন থাকলে তা ক্লিয়ার করা দরকার। নেক্সট ডিটেইলস এর দি আরো খেয়াল রাখব।

 2 years ago 

আসলেই আপনি পারেন বটে, মোটামুটি খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পেরেছেন। যাইহোক খুবই ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে। উপস্থাপনাটা আমার কাছে বেশ দারুন লাগলো। এভাবেই চালিয়ে যান।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাই অনেক উৎসাহিত হলাম।

 2 years ago 

মজার একটি ভুতের গল্প পড়লাম আর হাসলাম।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে আমার মনবল বাড়ানোর জন্য।পরের পর্ব দেওয়া হয়েছে।