বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন আনসার মাঠ করার অভিজ্ঞতা।।
বেকারত্ব যেন বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে একটি ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিটি পুরুষের জন্য। সবাই শুধুমাত্র একটি স্বল্প বেতনের হলেও চাকরির দিকে হাহাকার করে ছুটে চলেছে। কিন্তু চাকরি কি আর এতই সোজা। একটি সাধারণ জবের জন্য কত যুবক যে হয়রানির শিকার হচ্ছে সেটা কেবল সেই যুবকই বলতে পারবে যে চাকরির জন্য ইন্টারভিউ কিংবা চাকরি চাইতে গিয়েছিল অফিস দপ্তরগুলোতে। আর যদি সেটি হয় সরকারি চাকুরী তাহলে তো সেখানে সামান্য মধুতে যেমন অগণিত পিঁপড়া চারিদিকে ভিড় করে একবার শুধু চুমুক দেওয়ার জন্য, ঠিক তেমনি ভাবে সেখানে উৎসব লোকেরা এমনভাবে তাদের ক্ষমতা দেখায় তাদের কাছে বা তাদের ক্ষমতার কাছে গরিব শ্রেণীর লোকেদের সন্তানেরা কিছুই না। পদ সংখ্যা যদিও বা অল্প কিন্তু যুবকদের সেখানে উপচে পড়া ভিড়। সকলের মধ্যে একটাই চিন্তা যে চাকরি একটা পেতেই হবে। কেননা তার এই একটি মাত্র জবের দিকে চেয়ে রয়েছে তার পরিবার। এই চাকরি নিয়েই আজকে কিছু বাস্তবিক কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

গেল বছরে বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন আনসারের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছেড়েছিল সরকারিভাবে, তো সেখানে অনেকেই আবেদন করেছিল এবং তাদের সকলের মাঠ হয়েছিল গাজীপুর,সফিপুর এর আনসার ভিডিপি। সেই নিয়োগে আবেদন করা প্রার্থীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমার বাসা যেহেতু রংপুর আর মাঠ হবে গাজীপুরে ঠিক সে কারণেই একদিন আগে আমি চলে আসি আমার বড় ভাইয়ের বাসায়। বড় ভাইয়ের বাসা থেকে আজ সকালের দিক চলে যাই সেই আনসার ভিডিপি একাডেমিতে। গিয়ে আমি রীতিমতোই অবাক হয়ে যাই। আসলে অন্যান্য যে সদর দপ্তর গুলোতে চাকরির জন্য এতটা জ্যাম হত এটা দেখে আদৌ অবাক হতাম না। কিন্তু এই ব্যাটালিয়ন আনসারে একটু অবাকই হচ্ছে, কারণ আনসার ব্যাটালিয়নে সবাই আবেদন করতে চায় না। আর কি করার তাও গিয়ে দাঁড়ালাম সারিতে। এক এক করে আমরা সবাই একাডেমির ভেতরে প্রবেশ করলাম। আজকে মাঠ ছিল রংপুর, নীলফামারী এবং দিনাজপুর জেলার। প্রথমেই আমাদের জেলা অনুযায়ী আমাদেরকে ভাগ করে নিয়েছিল কার্যরত ব্যক্তিবর্গরা।

তারপর প্রথমেই আমাদের সকলকে কার্যগত ব্যক্তিরা নির্দেশ দিলেন আমরা যেন শুধুমাত্র পরনে হাফপ্যান্ট ব্যতিরেকে সব জমা খুলে ফেলি। ঠিক তেমনটাই তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা তা পালন করলাম। এরুই মাঝে আমাদের সকলের উদ্দেশ্যে সেখানকার প্রশিক্ষক বললেন যে তোমাদের মধ্যে যদি কারো কোন কোটা থেকে থাকে তাহলে তোমরা আলাদা একটি নির্দিষ্ট লাইনে গিয়ে দাঁড়াও। এখানে কোটা বলতে বুঝিয়েছেন যদি কারো মুক্তিযোদ্ধা কোটা, এতিম, আনসার ভিডিপি কোটা, তো আরো অন্যান্য বেশ কয়েকটি কোটার কথা বলেছিলেন। সে অনুযায়ী তারা আমাদের ভাগ করে নিলেন। তারপর একে একে সকলকে ঠিক এবং আনফিট দেখার জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গায় নিয়ে যান। আমি সেখানে যাওয়ার পর আশ্চর্য হয়ে যাই একটি বিষয়ে, সেটি হচ্ছে আমি সহ প্রত্যেকেই সেখানকার একজন গ্রাহক এই জবটির জন্য। তো কার্যরত অফিসারগণ এমনভাবে আমাদের দেখছিলেন মনে হচ্ছিল যেন সেখানে আমরা না গেলেই তাদের ভালো হতো। রীতিমতো আমারও সিরিয়াল আসলো।

সাধারণ টেস্ট, সাধারণ মেডিকেল টেস্ট, চূড়ান্ত মেডিকেল টেস্ট , লিখিত পরীক্ষা সহ সবগুলোতেই আমি সাফল্যের সাথে উত্তীর্ণ হই। কিন্তু আসল সমস্যায় পড়ে যাই ভাইভাতে গিয়ে। বেশ কিছু আমাকে প্রশ্ন করা হয় যেগুলোর উত্তর আমি বলি। কিন্তু আমাকে কেন যে রিজেক্ট করা হলো এই বিষয়টি আমি এখনো বুঝতে পারিনি। আমি অবশ্য তাদের কোন দোষ দেবো না হয়তো আমার নিজের কোন বেয়াদবি কিংবা ভুলের কারণেই আমাকে রিজেক্ট করেছে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে আমাকে কেন রিজেক্ট করা হলো এটুকু জানার ইচ্ছা করছিল। যাই হোক সেটা জানি না আমি কেন আমাকে রিজেক্ট করা হলো। সেখান থেকে নিশ্চুপ হয়ে আমি বাসায় চলে এসেছি।

কি আর করার অন্য সবার মত আমিও সবার সাথে তালে তাল মিলিয়ে সেই একাডেমি থেকে বের হয়ে আসি। আগেই বলে রাখি পুরো রংপুর জেলা থেকে নেবে মাত্র 10 জন লোককে। কিন্তু আবেদনকারীর সংখ্যা মিনিমাম ৭০০ থেকে ৮০০ জন। যাইহোক যেটা ভাগ্যে ছিল না ওটা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে সময় নষ্ট করে কোন লাভ হবে না এভাবেই নিজেকে বুঝ দিয়ে রাখলাম, আর পরবর্তীতে নতুন কিছু করার উদ্দেশ্যে নিজেকে তৈরি করার জন্য সংকল্প নিলাম। বর্তমান সময়ে চাকরি একদম সোনার হরিণ হয়ে গেছে। তাই নিজে থেকে কোন কিছু করার সংকল্প নিয়েছি। আমার জন্য আপনারা দোয়া করবেন সবাই।
বন্ধুরা আজকের মত আমার ব্লগটি এখানেই শেষ করছি।আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে।দেখা হবে আবারো আপনাদের সাথে নতুন কোনো পর্বে।আল্লাহ হাফেজ।
| Device | Redmi 9A |
|---|---|
| Camera | 13 MP |
| Country | Bangladesh |
| Location | Rangpur, Bangladesh |
vote@bangla.witness as a witness











Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাই আমার তো মনে হচ্ছে আবেদন কম ই হয়ে গেছে,অন্যান্যবার মিনিমাম প্রতি জেলা থেকে ২-৩ হাজার আবেদন করে। অধিক বেকারত্বের কারনে এই অবস্থা।যাই হোক মন খারাপ করেন না, আপনার রিজিক হয়ত অন্য জায়গায়। চেষ্টা করে যান,খুব শীঘ্রই সফলতা আসবেই।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্যে।
বর্তমানে চাকরি আসলেই সোনার হরিণ। রংপুর জেলা থেকেই যেহেতু ৭০০-৮০০ জন আবেদন করেছে, তার মধ্য থেকে ১০ জনকে সিলেক্ট করবে,তাহলে এখানে তো স্বজনপ্রীতি হবেই। ইন্টারভিউ যতই ভালো দেন না কেনো, কোনো কাজ হবে না। যাইহোক চাকরির পিছনে ঘুরে অযথা সময় নষ্ট না করে, নিজেই কিছু করার চেষ্টা করাটা শতগুণে ভালো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ ভাইয়া উৎসাহ মূলক মন্তব্য করে পাসে থাকার জন্য।
যেখানে চাকরীর বাজারই সরগরম এখন, যেখানে সরকারি চাকরি তো মহামূল্য সোনার হরিণ সমতূল্য। সে যত কম বেতনেরি হোক না কেন! যাই হোক, আপনার একটি ভালো মানের চাকরি যেন দ্রুত নিশ্চিত হয়, সেই শুভকামনা রইলো আমার পক্ষ থেকে।