মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত: বেতন থেকে বিল পরিশোধ, সবই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে হতে যাচ্ছে।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বিশ্ব অর্থনীতির চেহারা বদলে দিচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি। এক সময় এটি ছিল মূলত প্রযুক্তি প্রেমী ও বিনিয়োগকারীদের আলোচনার বিষয়, কিন্তু ধীরে ধীরে এটি বাস্তব জীবনের আর্থিক লেনদেনের অংশ হয়ে উঠছে। উন্নত দেশগুলো যখন এই পরিবর্তন নিয়ে ভাবনায় ব্যস্ত, তখন সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) ইতিমধ্যেই ভবিষ্যতের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।
দুবাই ও আবুধাবির মতো শহরগুলো বরাবরই আধুনিক প্রযুক্তি গ্রহণের দিক থেকে এগিয়ে। সম্প্রতি দুবাইয়ের অর্থ বিভাগ ও বৈশ্বিক ক্রিপ্টো ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম ক্রিপ্টো.কম-এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে সরকারি সেবার ফি, জরিমানা, এমনকি বিদেশে টাকা পাঠানোর মতো কাজেও ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের সুযোগ উন্মুক্ত হচ্ছে। সহজভাবে বলতে গেলে, বেতন গ্রহণ থেকে ট্রাফিক জরিমানা পর্যন্ত—সবকিছুই হতে পারে ডিজিটাল মুদ্রায়।
ক্রিপ্টো এখন বিনিয়োগের সীমা ছাড়িয়ে দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে যাচ্ছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি এতদিন ধরে অনেকের কাছে ছিল কেবলমাত্র বিনিয়োগের হাতিয়ার। মানুষ মূলত বিটকয়েন, ইথেরিয়াম বা অন্য কোনো টোকেন কিনে রেখে ভবিষ্যতে লাভের আশায় ধরে রাখত। কিন্তু UAE এই ধারণাকে ভেঙে বাস্তব জীবনের লেনদেনে রূপ দিচ্ছে।
বিটওয়েসিস-এর প্রধান নির্বাহী ওলা দৌদিনের মতে, স্টেবলকয়েন বা স্থিতিশীল মুদ্রা এখন বাস্তব সমস্যার সমাধান দিচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মানুষ এটি ব্যবহার করছে তাদের সঞ্চয়ের মূল্য ধরে রাখতে। আবার অনেকে দ্রুত ও কম খরচে বিদেশে টাকা পাঠাতে ব্যবহার করছে। ইতিমধ্যেই রিয়েল এস্টেট, এয়ারলাইনস, ফুয়েল স্টেশনসহ নানা খাতে ক্রিপ্টো গ্রহণ শুরু হয়েছে। এমনকি দুবাইয়ের এক আদালত সম্প্রতি একজন কর্মচারীর বেতন আংশিকভাবে ক্রিপ্টোতে প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল। Source
ক্রিপ্টোর ধাপে ধাপে বিস্তারলাভ করছে। বিলাসবহুল পণ্য থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারেও ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে বিনিময় হচ্ছে। প্রথমে সরকারি খাত, এরপর ধীরে ধীরে হোটেল, বিলাসবহুল পণ্য, বিমান পরিবহন, রেমিট্যান্স, এমনকি মুদি কেনাকাটার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাতেও ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার প্রসারিত হবে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই ছোট ব্যবসা, রেস্তোরাঁ ও রিটেইল আউটলেটগুলোতে বিটকয়েন ও ইথেরিয়াম গ্রহণ শুরু হয়েছে।
আইসিএম-এর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সাই মহেশ বলছেন, দুবাইয়ের শক্তিশালী আর্থিক অবকাঠামো, বহুমুখী এক্সচেঞ্জ এবং পরিষ্কার নিয়মকানুনের কারণে এই খাতে আস্থা তৈরি হয়েছে। আর এই আস্থাই প্রযুক্তি গ্রহণের গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এত বড় পরিসরে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের সম্ভাবনা যেমন উজ্জ্বল, তেমনি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। নিরাপত্তা, হ্যাকিংয়ের ঝুঁকি, বাজারের অস্থিরতা এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোর পরিবর্তন, সবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। তবে UAE সরকার বেশ সুস্পষ্ট ও প্রগতিশীল নীতি অনুসরণ করছে, যা বিনিয়োগকারী ও সাধারণ নাগরিক উভয়ের জন্যই স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে।
এছাড়াও, আরেকটি বড় সুবিধা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও রেমিট্যান্সের খরচ ও সময় কমে আসবে। লক্ষ লক্ষ প্রবাসী কর্মী সহজে, দ্রুত ও কম খরচে পরিবারকে টাকা পাঠাতে পারবেন। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে।
এক নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি আর কেবল ভবিষ্যতের স্বপ্ন নয়, এটি বাস্তবের অংশ হয়ে উঠছে। UAE এই পদক্ষেপ দেখাচ্ছে, কীভাবে সঠিক নীতি, প্রযুক্তি ও বাজারের সমন্বয়ে এক নতুন আর্থিক যুগের সূচনা সম্ভব। ভবিষ্যতে হয়তো আর্থিক লেনদেনের বড় অংশই হবে ব্লকচেইনভিত্তিক,আর তার প্রথম পদক্ষেপগুলো আমরা দেখছি আজকের দুবাই, আবুধাবি ও পুরো সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server