দাবার চাল
নমস্কার,,
আজকের ঘটনা টা বেশ কিছু দিন আগের। ভাগ্নে বাড়িতে এসেছিল তখন। ভাগ্নে অভ্রর বয়স পাঁচ বছরের একটু বেশি। মামার কাছে সব সময় তার একটা না তো একটা আবদার থাকেই। আর আমিও চেষ্টা করি যে যতটা সম্ভব ওর ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো পূরণ করে ওর মুখে হাসি ফোটাতে। মজার ব্যাপার হলো ওর বায়না গুলো সব সময় অদ্ভূত ধরনের হয়। না হেসে উপায় থাকে না। আর ছোট ছেলেদের গাড়ির প্রতি একটা আলাদা আকর্ষণ থাকে সব সময়। যদিও দোকান থেকে বাড়ি নিয়ে আসার কিছু সময় পরেই গাড়ির ইঞ্জিন বিধ্বস্ত হয়ে যায় ওর হাতে। তবুও যেটুকু আনন্দ পায় এটাই সবার আগে।
অভ্র যথারীতি আমার কাছে আবার গাড়ির বায়না ধরলো। ওকে যে কতগুলো গাড়ি কিনে দিয়েছি, আর কত গুলো যে ও বসে বসে ভেঙেছে তার হিসাব নেই এক কথায়। আমি চিন্তা করলাম গাড়ির বদলে অন্য কিছুর দিকে যদি আকর্ষণ বাড়ানো যায়, আর এমন কিছু যদি ওর হাতে দেওয়া যায় যার দ্বারা মেধার বিকাশ ঘটবে, তাহলে সেটাই সব থেকে বেশি ভালো হবে। ধুম করে মাথায় আসলো দাবার কথা। আমার দিদি শুনে দাবার বিপক্ষে ভোট দিল। কারণ এত অল্প বয়সে দাবা ওর মাথায় ঢুকবে না। আমার কথা হলো, খেলা যে এখনই শিখতে হবে এমন তো নয়। ছেলেটা দাবার সাথে পরিচিত হোক, এটা নিয়ে সময় কাটাক এমনি এমনি, তারপর একটা সময় ঠিক শিখে যাবে দাবা খেলা।
অভ্রকে দাবা কে নিয়ে এমন ভাবে গল্প করতে শুরু করলাম যে, ও ভাবলো এটা আবার কি না কি! না জানি কত মজার একটা খেলা! নানান মুখরোচক গল্প শুনিয়ে দাবার প্রতি একটা আকর্ষণ তৈরি করে ওকে নিয়ে চলে গেলাম দাবা কিনতে মার্কেটে। সত্যি বলতে দোকানদার প্রথমে একটু অবাক হচ্ছিল ওকে দাবা কিনে দিতে দেখে। কিন্তু আবার ভালো দিকটাও বলছিল এর। যাই হোক মামা ভাগ্নে এক সাথে দাবা কিনে বাড়ি ঢুকলাম। প্রথমে সবগুলো গুটির নাম শেখালাম। একটু পরেই দেখলাম অভ্রর আর মন লাগছে না দাবার দিকে। গুটি এদিক ওদিক ছুড়ে মারছে। হাহাহাহাহা, এমনটাই হওয়ার ছিল যদিও। দিদি সব গুছিয়ে রাখতে বললো। আর জানালো যে ধীরে ধীরে ঠিক এটার প্রতি আকর্ষণ বাড়বে, চিন্তা করিস না।
মজার ব্যাপার হলো আজ কয়েকমাস হয়ে গেছে। আর অভ্র এখন দাবার সব গুলো গুটির চালও শিখে গেছে এবং নিজে নিজে গুটি চাল দিয়ে খেলতেও পারে বেশ। ওর এই বাড়ন্ত সময়ে এমন মেধার বিকাশ দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেছি। আমাদের সবার উচিত ছোট বাচ্চাদের হাতে টিভির রিমোট বা মোবাইল এর গেমস তুলে না দিয়ে এমন কিছু বিনোদনের ব্যবস্থা করা যাতে করে ওদের মেধার পূর্ণ বিকাশ ঘটে এবং ভার্চুয়াল জগতের বাইরে এসে পুরো পৃথিবীকে নিজের মত করে উপভোগ করতে পারে।




খুব ভালো লাগলো আপনার বুদ্ধি দেখে।আসলে বাচ্চারা যত সময় বাসায় থাকে মোবাইল না পেলেও রিমোট নিয়ে থাকে।আমার ছেলে তো টিভি ছেড়ে ফুটবলের প্র্যাকটিস করে।যদিও আমার কাছে বিরক্ত লাগে। স্কুলে গিয়ে তো খেলেই সে।ভাগ্নেকে দাবা কিনে দিয়ে তো ভালোই করলেন।সবগুলো গুটির নাম জেনে গেলো।আবার গুটির চাল ও দিতে শিখে নিলো।সামনে আরো অনেক কিছুই আস্তে আস্তে শিখে নেবে।পোস্টটি পড়ে আপনার সুন্দর অনুভূতি গুলো জানতে পারলাম।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপু অন্য কিছুর চাইতে ফুটবল নিয়ে ছুটে বেড়ানোও অনেক ভালো। তবু মোবাইল বা টিভির দিকে না ঝুঁকুক। সাবধানে থাকবেন আপু।