আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে আমরাও মানুষ। এই নাটকের মধ্যে যে নায়ক ও নায়িকা রয়েছে তাদের নাটক আমার সবসময় ভালো লাগে। তাদের জুটি অনেক সুন্দর হয়ে থাকে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি ও বাংলা ডাবিং করা মুভি অনেক দেখা হতো, অনেক খেলাধুলাও করা হতো তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না৷ তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে একেবারে অসাধারণ একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে চলে আসলাম৷ এই নাটকের নাম দেখে আপনারা বুঝে গিয়েছেন যে নাটকটি কেমন হতে চলেছে৷ আমিও যখন নাটকটি প্রথমে দেখেছিলাম তখন আমার কাছে এমন অনেক কিছুই মনে হচ্ছিল৷ পরবর্তীতে যখন আমি সবকিছুই দেখে নিলাম৷ নাটকটি যখন আমি শেষ করলাম তখন আমি বুঝতে পারলাম যে নাটকের আসল সৌন্দর্য কোথায়৷ প্রথমে নায়ককে দেখানো হয়৷ নায়কের মেয়েসহ সে ঘুম যাচ্ছিল৷ এর পরবর্তীতে নায়িকা বাইরে থেকে আসে তাদেরকে ডেকে দেওয়ার জন্য৷ তাদেরকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দেয়৷ যাতে করে নায়ক তার মেয়েকে নিয়ে স্কুলে চলে যায়৷ এর পরবর্তীতে তারা তৈরি হয় নেয় এবং তার মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে দেয়।

এরপর নায়ক তার কাজে চলে যায়৷ সেখানে সে তার কাজ করতে থাকে। সে তার কাজগুলো যখন করছিল সে নিজেকে অনেকটাই লুকায়িত অবস্থায় রাখার চেষ্টা করছিল৷ সে যে কাজগুলো করত সেগুলো ছিল মানুষের কাছে অনেকটা নিচু পর্যায়ের কাজ৷ সে একজন ছুইপার ছিল৷ সে ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার করতো৷ ফলে মানুষজন তাকে ভালো চোখে দেখতো না৷ তাকে নোংরা ব্যক্তি হিসেবে সবসময় দেখতো৷ যার ফলে সে নিজেকে অনেকটাই লুকায়িত অবস্থায় রাখতো৷ সবসময় নিজেকে গোপন রাখার চেষ্টা করত৷ একই সাথে সে এমন ভাবে নিজেকে গোপন রেখেছে যে মানুষজন কেউই জানে না যে সে আসলে কি কাজ করে৷ শুধুমাত্র সে এবং তার স্ত্রী জানে যে তারা কি কাজ করে৷ এর পরবর্তীতে তারা তাদের এভাবেই জীবন পরিচালনা করতে থাকে।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

এর পরবর্তীতে তাদের মেয়ে যখন স্কুলে যায় তখন সেখানে সে অনেক মেধাবী একজন স্টুডেন্ট ছিল৷ তার পড়াশুনার সুনাম সবাই করত৷ সে ক্লাসে অনেক ভালো একটি রেজাল্ট করে প্রথম স্থান অধিকার করার ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকা সবাই তাকে অনেক অভিনন্দন জানাতে থাকে। এর পরবর্তীতে সে যখন বাসায় রেজাল্ট নিয়ে আসে তখন তার বাসার সবাই অনেক আনন্দিত থাকে৷ এর পরবর্তীতে সেখানে নায়িকা স্কুলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল৷ যেহেতু তারা দুজনে অশিক্ষিত ছিল তাই তারা তাদের পাশের বাসার একজন মুরুব্বীকে নিয়ে যেত৷ সে অনেকটা শিক্ষিত ছিল৷ তাই তার সাথে করে নায়িকা যেত৷ এর পরবর্তীতে যখন তারা স্কুলে যায় তখন সেখানে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলা হচ্ছিল ৷ সবকিছুর উত্তর শুধুমাত্র ওই ব্যক্তিই দিচ্ছিল৷ নায়িকা তেমন বেশি কথা বলছিল না৷ সে চুপচাপ সেখানে বসে ছিল৷ তাকে যখন কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হচ্ছিল সে সবকিছুই খুব ভালোভাবে বলার চেষ্টা করল।

সেখানে স্কুলের যে হেডমাস্টার ছিলেন তিনি ভাবছিলেন যে তাদের মেয়ে যেভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের মেয়ে যেভাবে এত ভালো পড়াশোনা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তাদের পিতা-মাতার আচার-আচরণে তা কোন প্রকাশ তিনি খুঁজে পাচ্ছে না৷ তাই তিনি সেখানকার যে পিয়ন ছিল সেখানে তাকে বলে যে নায়ক এবং নায়িকার বাসা কোথায় এবং তারা আসলে কি কাজ করে সেগুলো দেখার জন্য৷ তাই পিয়ন তাদের পিছনে পিছনে তাদের বাসায় চলে যায়৷ সে চুপি চুপি সব কিছু শুনে না৷ সবকিছু যখন সে জানতে পেরে যায় তখন সব কিছু সে হেডমাস্টারের কাছে বলে দেয়৷ হেডমাস্টারের কাছে যখন সবকিছু বলা হয় তখন সে তিনি সবকিছু শুনেন এবং সবকিছুই তিনি বুঝতে পারেন৷ আর এদিকে নায়ক এবং নায়িকা তাদের মেয়ের এত ভালো রেজাল্টের খুশিতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করছিল এবং অনেক আনন্দ উদযাপন করছিল।

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে

এর পরবর্তীতে যখন হেডমাস্টার তাদের সম্পর্কে সবকিছু জানতে পেরে যান তখন তিনি নায়কের সাথে নায়িকাকে যেন নিয়ে আসা হয় এরকম একটি কথা বলে৷ এর পরবর্তীতে নায়ক এবং নায়িকা যখন আসতে চাচ্ছিল না তখন হেডমাস্টার পিয়নকে পাঠায় এবং পিয়ন গিয়ে তাদেরকে ধরে নিয়ে আসে৷ দুজনকেই ধরে নিয়ে আসার পরে স্কুলের মধ্যে সবার সামনে অনেক ধরনের কথাবার্তা বলা হয়৷ তাদের যে পেশা রয়েছে সে পেশা সম্পর্কেও বলা হয়৷ এই কথাগুলো বলার পরে স্কুলের যে সকল অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিল তারা বলছিলেন যে তারা এরকম নিচু পর্যায়ের একটি কাজ করে এবং তাদের শরীরের মধ্যে সবসময়ই অনেক দুর্গন্ধ থাকে৷ তাদের মেয়ে যেন এই স্কুলে না পড়ে৷ এই স্কুলে তাদের মেয়ে যদি পড়ে তাহলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা কি শিখবে এরকম অনেক ধরনের কথাই তারা বলছিল।

তবে আজকে নায়ক একেবারে চুপ করে থাকেনি৷ সে সব কিছুই খুলে বলছিল৷ সে বলছিল যে তারা যদি এখানে এইসব কাজগুলো না করতো তাহলে বড় বড় মানুষরা যেভাবে অনেক ভালো ভালো কাজ করে যেভাবে বিভিন্ন ধরনের ময়লা আবর্জনা ফেলছে সেগুলো কে পরিষ্কার করতো৷ এরকম কথা যখন সে বলছিল তখন স্কুলের হেডমাস্টারও তাদেরকে বলছিল যে তারা যদি এই সকল কাজগুলো করে ভালো কিছু করার লক্ষ্যে তাদের মেয়েকে অনেক ভালো একটি স্কুলে পড়ায় তাহলে সেখানে কোন কিছুই তিনি খারাপ দেখছেন না৷ কারণ তারা যেহেতু এখন এরকম একটি পেশার মধ্যে রয়েছে তাদের মেয়েও যে এরকম একটি পেশার মধ্যে থাকবে তা কখনোই হতে পারে না৷ তাই তারা তাদের মেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছে৷ খুব ভালোভাবে সে পড়াশোনা করছে৷ সে অনেক মেধাবীও ছিল৷ তাই প্রধান শিক্ষক যখন বললেন যে এখানে অন্যান্য শিক্ষকের যদি তাদের মেয়েকে নিয়ে সমস্যা হয় তাহলে এখানে হেডমাস্টারও স্কুল ছেড়ে চলে যাবেন৷ শুধুমাত্র তারাই এখানে থাকবে৷ এর পরবর্তীতে তারা সবকিছু সবাই মেনে নেয়৷ নায়ক এবং নায়িকার সহ তাদের মেয়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসে৷ সবাই হাসি মুখে বাসায় চলে যায়।

খুবই সুন্দর একটি নাটক ছিল এটি৷ প্রথমে যখন আমি নাটকের নামটি দেখতে পাই তখন দেখলাম যে এখানে নাটকের মধ্যে যে নাম দেওয়া হয়েছে সেটি দ্বারা এমন কোন বিষয়কে ফুটিয়ে তোলা হবে৷ যা হয়তো আমাদের বাস্তবের সাথে মিল রয়েছে৷ ঠিক সেরকম একটি বিষয়কে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ প্রথমে নাটকের মধ্যে যখন নায়ক এবং নায়িকা এরকম একটি পেশার মধ্যে ছিল তখন অন্যান্য যেসকল মানুষজন ছিল তারা তাদেরকে সহ্য করতে পারত না৷ তাদেরকে একটু বাঁকা চোখে দেখতো৷ তবে তারা তাদেরকে গোপন করে রাখার মধ্যেই অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছিল৷ যার ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের যে মেয়ে রয়েছে সে অনেক ভালো একটা পারফরমেন্স নিয়ে যখন স্কুলের অনেক ভালো একটি রেজাল্ট নিয়ে আসে তখন সবাই অনেক খুশি হয়ে যায়৷ তবে পরবর্তীতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বুঝতে পারেন যে তাদের মধ্যে কোন না কোন কিছু গোপনীয়তা রয়েছে৷ যা তারা গোপন করে রেখেছে৷ তাই তিনি সব কিছু বের করে ফেলেন৷

শেষ পর্যন্ত যখন তাদের এই আসল পরিচয় বের হয়ে আসে৷ তখন সমাজের অন্যান্য মানুষরা তাদেরকে দেখতে পারেনা৷ তাদেরকে তারা কোনভাবে সহ্য করতে পারে না৷ তবে শেষ পর্যন্ত যখন সবার চোখ খুলে দিল এবং সবাই যখন এই পেশাকেও সম্মান করতে শুরু করলো তখন নাটকটি খুব সুন্দরভাবে শেষ হয়ে গেল৷ আসলে আমাদের বাস্তব জীবনে আমরা এমন অনেক ঘটনা দেখতে পাই৷ যেসকল ছোট পেশার মানুষগুলো রয়েছে সেই সকল ছোট পেশার মানুষগুলোকে যেন অন্যান্য মানুষজন মানুষই মনে করে না৷ তাদেরকে এমনভাবে ট্রিট করতে থাকে যে তারা শুধুমাত্র একের পর এক প্রজন্ম এই কাজগুলো করে যেতে থাকবে ৷ তারা যদি এভাবেই কাজ করে যেতে থাকে তাহলে তাদের জন্য ভালো এরকম একটি সমাজ এখন গড়ে উঠেছে।

আমার রেটিং