আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত একটি কুনো-ব্যাঙ পরিবারের বর্ণনা
আজ - সোমবার
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আপনারা সকলেই জানেন বিভিন্ন ধরনের পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে আমি বেশি পছন্দ করি। তবে আজকে ব্যতিক্রম একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়ে গেলাম। জানিনা কে কোন দৃষ্টিতে দেখবেন আমার এই পোস্ট। এরপরেও সুন্দর একটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। কারণ এর মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে রহস্যময় কিছু দৃশ্য রয়েছে শিক্ষনীয় দিক এবং ভালোলাগা বিষয়।
আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি কুনোব্যাঙের সুন্দর একটি পরিবার নিয়ে। যেই কুনো ব্যাঙের পরিবারটির বসবাস আমার বাউকুল গাছে। অবশ্য কুল গাছটি আমার ঘরের নিকটে। রাতের বেলা বাইরে উঠানের আলো জ্বালানো হয় এবং এখানে বোন থেকে অনেক পোকামাকড় এসে থাকে। সম্ভবত এই পোকামাকড় খেয়ে বসবাস করার জন্যই ব্যাঙগুলো আমার এই গাছে বাসা বেধেছে। তাই যাই হোক আমি আপনাদের মাঝে এই ব্যাঙ গুলো সম্পর্কে কিছুটা বর্ণনা সহকারে ফটোগ্রাফির মধ্য দিয়ে তুলে ধরতে চাই। চলুন তাই আর কথা না বাড়িয়ে এক নজরে দেখে আসা যাক।
'আমার বাংলা ব্লগ' কোয়ালিটি সম্পন্ন পোস্ট |
|---|
একটি ব্যাঙের পরিবার
আমরা সাধারণত জানি কুনো ব্যাঙ ঘরের কোনায় বাসা বেধে থাকে কিন্তু তারা গাছের ফুকুটের মধ্যে বাসা বাঁধে এমন দৃশ্য হয়তো কখনো দেখি না অথবা জানা নাই। তবে আপনারা ফটোগ্রাফিতে যা দেখছেন তা একটি কুল গাছের ফুকেটের মধ্যে বসে রয়েছে একটি কুনো ব্যাঙ । Photography device: Infinix hot 11s এটা সাধারণত একটি কুনো ব্যাঙ নয়,একাধিক ব্যাঙ মিলে একটি পরিবার এই গাছের মধ্যে রয়েছে। আর এই কুল গাছটি আমার ঘরের নিকটেই ছোট্ট ফলের বাগানের পাশে বাওকুল গাছে। গাছটির সোজাসুজি খাড়া নয়, কিছুটা হেলানো টাইপের উপর দিকে উঁচা। যার জন্য ব্যাংকগুলো খুব সহজেই গাছে উঠে পড়তে পারে।
আমি প্রায় দীর্ঘদিন লক্ষ্য করে আসছিলাম এই ব্যাঙের পরিবারটিকে। শীতের সময় বর্ষার সময় গ্রীষ্মের সময় তারা কিভাবে দিন এবং রাত্রি যাপন করে তার লক্ষ্য করে এসেছি।
মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে দেখেছি তারা কেউ গাছের ফুকুটের মধ্যে বসে রয়েছে,আবার কেউ বসার মত জায়গায় বসে রয়েছে, কেউ ডালের গোড়ায় জাপড়ে ধরে বসে রয়েছে। আর এভাবেই তাদের রাত্রি যাপন হয়ে থাকে।
আমি তাদেরকে চরাই করতে দেখেছি সন্ধ্যা রাত্রের সময় যখন বাইরের আলোটা জ্বালানো হয়। ব্যাঙগুলো নিচে এসে পোকামাকড় খেয়ে থাকে। তারা সবাই গাছ থেকে নেমে চলে আসে বাল্ব এর নিচের আলোর পাশে, যেখানে বোনের পোকামাকড় গুলো এসে জড়ো হয়, তা খেয়ে তারা পেট ভরিয়ে থাকে।
বৃষ্টি ভেজা সময় তাদের অসহায় অবস্থা লক্ষ্য করেছি। তারা তো ঘর বাঁধতে জানে না বৃষ্টির পানিতে তাদের ঘরগুলো ভিজে যায়। তারা নিরবে বৃষ্টির পানি সহ করে। বিশেষ করে রাতের বেলায় যখন বৃষ্টি শুরু হতে যায় তখন তারা দ্রুত মাটি থেকে গাছে উঠে বসে। নিজেদের নিরাপদে রাখার জন্য গাছের চড়ে বসতে দেখেছি এবং প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টিতে গাছ থেকে পড়ে যেতেও লক্ষ্য করেছি।
ব্যাঙগুলো অবশ্য দিনের বেলায় গাছে থাকে না। গাছে থাকলে পারে তাদের নিরাপত্তা নেই, তাই দিনের বেলায় তারা বন জঙ্গলে মাথা গুঁজে থাকে। আমি বেশ কিছুদিন দিনের বেলায় তাদের লক্ষ্য করেছি। সকাল ভোর হওয়ার সাথে সাথে গাছ থেকে নেমে চলে আসে। তারা এদিক ওদিকে পোকা খুঁজতে খুঁজতে বোনের মধ্যে চলে যায়, আর ফিরে আসে না সারাদিনের মধ্যে। সন্ধ্যা টাইমে বোন থেকে এসে আলোর সামনে পোকা ধরে খায়, আবার অনেকে গাছে ওঠা উঠি করে। আবার গাছ থেকে নেমে এসে পোকা ধরে খায়। তাদের এমন সুন্দর দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করে। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি এই কুল গাছটিতে মোট পাঁচটি ব্যাঙ একসাথে বসবাস করে থাকে।
আমি ব্যাঙগুলোর মধ্যে জায়গা দখল করা নিয়ে ঠেলা ঠেলি করতে লক্ষ্য করেছি। গাছের ফুকুটের মধ্যে বসা নিয়ে তাদের গা ঘ্যাসাঘেষি করতে দেখেছি, কে আগে কোথায় বসতে পারে। আসলে দুনিয়া সবাই চাই মিল তাহলে হয়ে একসাথে বসবাস করতে আবার তার মধ্যে রয়েছে হিংসা হিংসে। তবে একটি কুলগাছে এমন সুন্দর এক ব্যাঙের পরিবার আমাকে মুগ্ধ করেছে। এরা ভয়ের কোন জিনিস নয়। দুনিয়াতে সবার বসবাসের স্বাধীনতা রয়েছে তাই আমি এদেরকে কখনো অবহেলা করি না সুযোগ করে দেই যেন তারা ঠিক ভাবে বসবাস করতে পারেন। আমি মনে করি এরাও একটি সৌন্দর্য আমার কুল গাছের জন্য।
|
|---|
| আমার পরিচিতি | কিছু বিশেষ তথ্য |
|---|---|
| আমার নাম | @sumon09🇧🇩🇧🇩 |
| ফটোগ্রাফি ডিভাইস | মোবাইল |
| ব্লগিং মোবাইল | Infinix hot 11s |
| ক্যামেরা | camera-50mp |
| আমার বাসা | মেহেরপুর |
| আমার বয়স | ২৫ বছর |
| আমার ইচ্ছে | লাইফটাইম স্টিমিট এর 'আমার বাংলা ব্লগ' এ ব্লগিং করা |
| পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোষ্টে,ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |
|---|

















আপনি কুনো-ব্যাঙ সম্পর্কে খুব চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে সত্যি খুব ভালো লাগলো। অনেকদিন পর কুনো-ব্যাঙ দেখতে পেলাম। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আপনার এত সুন্দর মন্তব্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। মন ছুয়ে যাওয়ার মত একটি কথা বলেছেন।
খুবই নিপুন ও নিখুঁতভাবে একটি কুনো-ব্যাঙ পরিবারের বর্ণনা করেছেন আপনি। সত্যিই এরা অনেকটা অসহায়। অনেক ভালো লাগলো । আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। খুবই ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য দেখে।