গ্যাস সংকট ও অসৎ সুযোগসন্ধানীরা: আমরা আসলে কোন দেশে বাস করি?
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
গত দুই দিন ধরে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের নানা এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। সকালে নাস্তা বানাতে পারছে না কেউ, দুপুরে রান্না অসম্ভব, সন্ধ্যার খাবার যেন এক দুঃস্বপ্ন। যাদের একটু সুযোগ আছে, তারা লাকড়ি বা কয়লা জ্বালিয়ে কোনোভাবে চুলা ধরাচ্ছে। কিন্তু শহরের মানুষ? তারা নিরুপায় হয়ে চিড়ে-মুড়ি, গুড়, কলা বা শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করছে।
এই দুরবস্থার সুযোগে আবার দেখা দিলো আমাদের পুরনো রোগ- অসৎ ব্যবসায়ীদের সুযোগ নেওয়ার মানসিকতা। বাজারে গিয়ে দেখা যায়, চিড়ে-মুড়ির দাম বেড়ে গেছে। কলা ও গুড়ের দামও হঠাৎ করে দ্বিগুণের কাছাকাছি! যেন গ্যাস না থাকাটাই তাদের ব্যবসার উৎসব।
চিন্তা করে দেখুন আমরা আসলে কেমন দেশে বাস করছি? একে অপরকে সহায়তা করার পরিবর্তে সুযোগ পেলে ঠকানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। দুর্যোগ মানেই কারো জন্য বিপদ নয়, বরং লাভের সময়।
বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থায় এই অসুস্থ প্রবণতা নতুন কিছু নয়। এক সময় দেখা যেত, ডেঙ্গু বাড়লেই ডাবের দাম আকাশচুম্বী হয়ে যায়। তখন ডাব বিক্রেতারা যেন নতুন করে ধনী হওয়ার উৎসবে মাতেন। আবার বৃষ্টি বা সামান্য বন্যা হলেই সবজি বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেন। কোনো এলাকা প্লাবিত হলে, ট্রান্সপোর্ট খরচের অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এমনকি যখন দেশে পানি সংকট দেখা দেয়, তখনও ট্যাংকিতে পানি বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দেয় নির্দ্বিধায়।
এই সংস্কৃতি আমাদের সমাজের গভীরে গেড়ে বসেছে। মানুষ বিপদে পড়লেই আরেকজন লাভের সুযোগ খোঁজে। কিন্তু কেউ ভাবে না এই বিপদের দিনগুলোতে যদি আমরা একে অপরকে একটু সাহায্য করতাম, তাহলে সমাজটা কত সুন্দর হতো।
সরকারি নজরদারি থাকলেও বাস্তবে সেই নিয়ন্ত্রণ কার্যকর হয় না। প্রশাসনের তদারকি হয়তো কয়েকদিন থাকে, তারপর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো অনেক সময় আমরা সাধারণ মানুষও এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলি না। চুপচাপ সহ্য করি, আর ভাবি সবাই তো করছে। কিন্তু এই চুপ থাকা মানে পরোক্ষভাবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া।
গ্যাস সংকট হঠাৎ ঘটতে পারে, সেটি একটি প্রযুক্তিগত বা সরবরাহজনিত সমস্যা। কিন্তু মানুষ যখন এমন বিপদে পড়ে, তখন সহানুভূতি নয়, শোষণ শুরু হয়। এতে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় না, মানবিক মূল্যবোধও ধ্বংস হয়।
আমাদের এখন প্রয়োজন সচেতন নাগরিক মনোভাব। প্রয়োজন নৈতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের সংস্কৃতি গড়ে তোলা। সরকার যতই উদ্যোগ নিক না কেন, সাধারণ মানুষ যদি অন্যের কষ্টে লাভ খোঁজা বন্ধ না করে, তবে এই সমাজে প্রকৃত পরিবর্তন আসবে না।
একজন প্রকৃত ব্যবসায়ী তখনই সফল, যখন তিনি সংকটকালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন। ন্যায্য দামে জিনিস বিক্রি করাও এক ধরনের মানবসেবা।
আমরা যদি সবাই মিলে ঠিক করি, সুযোগ পেলেই নয়, বিপদে পাশে থাকব, তাহলে হয়তো একদিন সত্যিই বলতে পারব, আমরা একটি সভ্য দেশে বাস করছি।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















