বাবার সাথে কাটানো আনন্দময় সেই ছোটবেলার দিন

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামুআলাইকুম/আদাব

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @alif111, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।

father-and-son-2258681_1280.jpg

source

শৈশবের সেই দিনগুলো মনে পড়লেই হৃদয়ে যেন এক মিষ্টি কষ্ট জেগে ওঠে। বিশেষ করে বাবার সঙ্গে কাটানো সময়গুলো আজও চোখের সামনে ভেসে ওঠে স্পষ্টভাবে। তখন পৃথিবীটা ছিল অনেক সরল, ছোট ছোট জিনিসেই ছিল অসীম আনন্দ। বাবা ছিলেন আমার নায়ক, আমার পথপ্রদর্শক, আর আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। তাঁর সঙ্গেই কেটেছে আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় দিনগুলো।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাবার মুখ দেখতামোসেই হাসিমাখা মুখ যেন পুরো দিনটাকে আলোকিত করে তুলত। স্কুলে যাওয়ার আগে বাবা নিজেই আমার ব্যাগ গুছিয়ে দিতেন, আর হালকা করে মাথায় হাত রেখে বলতেন, “মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করো।” সেই স্নেহভরা কথাগুলো আজও কানে বাজে। স্কুল থেকে ফিরে যখন ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরতাম, বাবা তখনও দরজায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতেন। হাতে থাকত এক গ্লাস ঠান্ডা জল আর মুখে মৃদু হাসিোসেই হাসি যেন সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে দিত।

বিকেলে বাবা আমাকে নিয়ে বের হতেন মাঠে। কখনও বল খেলতাম, কখনও শুধু হাঁটতাম দু’জনে। হাঁটতে হাঁটতে বাবা নানা গল্প বলতেন,নিজের ছোটবেলার কথা, দাদার কষ্টের কথা, বা কোনো শিক্ষণীয় ঘটনা। তাঁর গল্পগুলো ছিল যেমন মজার, তেমনই গভীর। বুঝতাম, তিনি শুধু সময় কাটাতে আসেননি, আমাকে জীবনের মানে শেখাতে এসেছেন।

ছুটির দিনগুলো ছিল আরও বিশেষ। কখনও নদীর ধারে যেতাম মাছ ধরতে, কখনও বাজারে যেতাম একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে। বাবা সবসময় চাইতেন আমি নিজের চোখে পৃথিবীটাকে দেখি, শিখি, বুঝি। তিনি বলতেন, জীবনের প্রতিটি অভিজ্ঞতা একেকটা বইয়ের মতো,পড়তে জানতে হবে। তখন হয়তো পুরোটা বুঝতাম না, কিন্তু এখন বুঝি, তাঁর প্রতিটি কথার মধ্যেই ছিল জীবনের গভীর শিক্ষা।

রাতের সময়টা ছিল সবচেয়ে প্রিয়। খাওয়ার পর আমরা বারান্দায় বসতাম। আকাশে তারা দেখতাম, আর বাবা নরম কণ্ঠে বলতেন, দেখো, ওই তারাগুলোও তো আমাদের মতো,একেকটা গল্প লুকিয়ে আছে তাদের আলোয়।তাঁর সেই কথা শুনে মনে হতো, পৃথিবীটা কত সুন্দর, আর বাবা যেন সেই সৌন্দর্যের পথ দেখাচ্ছেন আমাকে।

আজ সময় অনেক বদলে গেছে। দায়িত্ব, ব্যস্ততা, দূরত্ব,সব মিলিয়ে সেই দিনগুলো যেন অনেক দূরে চলে গেছে। কিন্তু মন চাইলেই চোখ বন্ধ করে ফিরে যাওয়া যায় সেই শৈশবে, যেখানে বাবা ছিলেন আমার প্রথম নায়ক, আমার নিরাপদ আশ্রয়।

বাবার সঙ্গে কাটানো সেই শৈশবের দিনগুলো শুধু স্মৃতি নয়, আমার জীবনের দিশা। তাঁর ভালোবাসা, শাসন, ও মমতা আমাকে গড়ে তুলেছে আজকের মানুষ হিসেবে। পৃথিবী যতই এগিয়ে যাক, যতই ব্যস্ততা বাড়ুক, সেই দিনগুলোর উষ্ণতা কখনও ম্লান হবে না। কারণ সেই সময়গুলোই ছিল জীবনের সবচেয়ে নিখুঁত আনন্দের সময়—যেখানে ছিল বাবার স্নেহ, হাসি, আর অগাধ ভালোবাসায় ভরা এক শান্ত শৈশব।

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqreqo2XAMzrcrFMezsQ2JYvnkCG8natanTeTWALXvA2X1jsqXD4Nf1w7BTTxEyx7JRMmmeNnz.png

ধন্যবাদ সকলকে✨💖

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZw7HFjCLMfDJx3zXx3jXPRfJr7otFtoRfKMmN9rJzpemZGKH1sKHrmfJREqyC...9xLrN7kkzEr3nKpRPcTj6NSZrBzYGbr93rAK2CAinZaxUP2fFhka9ZrPQeMBYoU2r2avcVEfb5m3uJAqvfZ4UMDVMeWvTdncVc9TonRvS2kneML5dvyoyUQZKC.png

ফোনের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণরাইটিং ✨
মডেলএম-৩১
ক্যাপচার@alif111
অবস্থানসিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG-20240117-WA0007.jpg
আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।

Sort:  
 2 months ago 

ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। আসলে বাবার সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমাদের জীবনের স্মৃতির পাতায় লেখা রয়েছে।বাবা আমাদের এমন একজন নায়ক ছিলেন যা আমরা কখনোই তার ঋণ শোধ করতে পারবোনা।যাইহোক আপনার স্মৃতিময় গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।