হিলিয়াম থ্রি || Helium-3
আজ আপনার সাথে একটু ব্যতিক্রমধর্মী বিষয় আলোচনা করবো। কিছু বেসিক এলিমেন্ট এবং সেইসাথে পৃথিবীর জ্বালানি সম্পর্কেও মোটামুটি আলোচনা করব। আপনারা সকলেই জানেন, পৃথিবীর ভূ গর্ভস্থরে যে সব জ্বালানি রয়েছে সেগুলো খুব কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। যেমন তেল-গ্যাস প্রায় ৫০ বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা এবং কয়লা শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে ১১০-১২০ বছরের মধ্যে. এরপর পৃথিবীবাসী পাওয়ার উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোন জ্বালানি ব্যবহার করবে? সেটা নিয়ে এখন থেকেই গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এর মধ্যে একটি আশার আলো বিজ্ঞানীরা দেখতে পারছেন যার নাম হিলিয়াম ৩।
আপনারা অনেকেই মনে করতে পারবেন যদি আমাদের তেল বা গ্যাস শেষ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আমরা পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে নিউক্লিয়াস ফিশন ঘটিয়ে আমাদের পাওয়ারের যেসব চাহিদা রয়েছে সেসব পূরণ করব। কিন্তু আপনারা অনেকেই জানেন যে নিউক্লিয়াস ফ্রিকশনের মাধ্যমে অনেক ধরনের ক্ষতিকারক রেডিও এক্টিব বর্জ বের হয়, যার সংস্পর্শে আসলে যে কোন মানুষের অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে শুধু তাই নয় সেই এলাকায় কোন ধরনের ফসল উৎপাদন হবে না, তাই এই বিষয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এমনটা যদি হতো পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে জ্বালানি উৎপাদন করছি কিন্তু সেখান থেকে পারমাণবিক কোন বজ্র বের হচ্ছেনা তাহলে কেমন হতো? ঠিক এই বিষয়টাই বিজ্ঞানীরা কল্পনা করেছেন এবং চিন্তাভাবনা করেছেন। গত কয়েক বছর ধরে গবেশনার মাধ্যমে যানা গেছে, চাঁদ থেকে যেসব মাটি আনা হয়েছে সেখানে প্রচুর পরিমাণে হিলিয়াম থ্রি পাওয়া গেছে।।
আপনাদের অনেকেরই মনে হতে পারে আমাদের বিজ্ঞানীরা যেসব স্পেসক্রাফট বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্র পাঠাচ্ছি সেগুলো শুধুমাত্র আমাদের কৌতূহল মেটানোর জন্য, আসলে কিন্তু তেমনটা নয়। বিজ্ঞানীরা সম্ভব চেষ্টা করছে আমাদের পৃথিবী কে কিভাবে বাঁচানো যায় কিংবা পৃথিবীতে বাঁচানোর না গেলেও আমাদের এই প্রজন্মকে যেন টিকিয়ে রাখা যায়। এর জন্য বিজ্ঞানীরা প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। ভারতের চন্দ্রযান এর কথা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে। সেই চন্দ্রযান-এর প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে চাঁদের বুকে হিলিয়াম 3 এর খোঁজ করা। যেটা তারা সঠিকভাবে খোঁজ করতে পেরেছে এবং এই হিলিয়াম ৩ কে নিয়ে বড় বড় দেশগুলো এখন গবেষণা চালাচ্ছে। চীন ইতিমধ্যেই চাঁদ থেকে কিভাবে হিলিয়াম ৩ বের করা যায় সেই কাজে লেগে পরেছে।
আচ্ছা, আপনাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে এই হিলিয়াম 3 কি ধরনের এলিমেন্ট? এর সাহায্যে আমরা কিভাবে শক্তি উৎপাদন করতে পারবো? আপনাদের জানার জন্য বলে রাখি আমাদের এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় হাইড্রোজেন। এর পরেই হিলিয়ামের বিস্তার রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য বিষয় এই হিলিয়াম ৩ খুব কম মাত্রায় আমাদের এই পৃথিবীতে রয়েছে। এর কারণ অনেকগুলো রয়েছে। যেমন, আমাদের পৃথিবীতে ম্যাগনেটিক ফিল্ড রয়েছে এছাড়াও আমাদের পৃথিবীতে বায়ুমণ্ডল রয়েছে যার কারণে আমাদের এই পৃথিবীতে সূর্য থেকে অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারে না।
যার কারণে হিলিয়াম ৩ এর অস্তিত্ব অনেক কম। কিন্তু সেই তুলনায় চাঁদের তেমন কোনো বায়ুমন্ডল নেই। তাই কোটি কোটি বছর ধরে সূর্য থেকে অতিবেগুনি রশ্মি চাঁদের মাটিতে পরছে যার, কারণে সেখানে হিলিয়াম 3 প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।এই হিলিয়াম থ্রি হল হিলিয়ামের একটি আইসোটোপ। এটি খুব বেশি একটা তেজস্ক্রিয় হয় না। প্রথমেই বলেছি যে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার হবে কিন্তু এখান থেকে কোন বছর বর্জ নির্গত হবে না। সেটাই হিলিয়াম ৩ এলিমেন্ট দ্বারাই সম্ভব।
তাই বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সরকাররা এই হিলিয়াম থ্রি পাওয়ার জন্য উঠে পরে লেগেছে। নাসা ও ইতিমধ্যে চাঁদে যাওয়ার জন্য অনেকগুলো মিশন হাতে নিয়েছে এবং চীন তো অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। এছাড়াও রাশিয়াও এই চাঁদে যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করছে। যদিও এই বিষয়গুলো অনেক সময় সাপেক্ষ এছাড়াও হিলিয়াম থেকে যে শক্তি তৈরি হবে এ ধরনের কোন মেশিন ও টেকনোলজি আমাদের হাতে নেই। তবে বিজ্ঞানীরা কিন্তু বসে নেই। বিজ্ঞানীরা সব সময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাই হোক এই বিষয় নিয়ে আপনাদের আরো জানার ইচ্ছা থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাকে জানাবেন। তাহলে আমি এর দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হব। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।।
VOTE @bangla.witness as witness
OR

| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: হিলিয়াম থ্রি || Helium-3
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......







হিলিয়াম 3 সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলাম ভাইয়া। আরো তথ্য জানতে চাই। আশা করছি পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন। আসলে নতুন কিছু জানতে ভালো লাগে। বিজ্ঞানীরা এখন অনেক গবেষণা চালাচ্ছে। এই হিলিয়াম 3 এর উপর। বিভিন্ন দেশের সরকার তো ইতো মধ্যে নানান রকমের পদক্ষেপ নিয়েছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়। যদিও এই কাজগুলো খুবই সময় সাপেক্ষ। তবে সফলতা এলে ভালোই হবে।
মাত্র কিছুদিন আগেও উন্নত দেশগুলো পারমানবিক শক্তি উৎপাদনের দিকে ঝুকে ছিল কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় এখন অনেক দেশই এই ধরনের প্রজেক্ট থেকে পিছিয়ে এসেছে । আর এটাও নিশ্চিত যে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে বিকল্প শক্তির সন্ধান পাওয়া না গেলে জ্বালানী সমস্যাই হবে মানব জাতীর অন্যতম প্রধান সমস্যা। ধন্যবাদ ভাই হিলিয়াম ৩ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।