।। করতোয়া নদী তীরের মন মুগ্ধকর কাশফুলের বন।। 10% shy-fox beneficiary।।
২৯ শে অক্টোবর/২০২২ইং।
রোজঃ শনিবার।
বন্ধুরা, নমস্কার/আদাব
আমি @amitab বাংলাদেশ থেকে "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার বাংলা ভাষাভাষী সকল বন্ধুদের জানাই সদ্য বিদায় অপরূপ শরৎ ঋতুর কাশফুলের শুভেচ্ছা ও সদ্য আগমনী হেমন্ত ঋতুর চারিদিকে প্রস্ফুটিত সোনালি ক্ষেতের অভিনন্দন বার্তা। আশারাখি সকলেই ভাল আছেন, আমিও মোটামুটি আছি। আজ আমি আপনাদের সামনে সদ্য বিদায়ী শরৎ ঋতুর করতোয়া নদী তীরের কাশফুলের বন এর কিছু কথা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আশা করি আপনাদের সকলকে ভাল লাগবে।
বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। এক এক করে ঋতুর পালা বদলের সাথে সাথে প্রকৃতিতে চলে আসে একেক রূপ। ভদ্র ও আশ্বিন এই দুই মাস হচ্ছে শরৎ ঋতু। শান্ত ও উদার প্রকৃতির ঋতু হচ্ছে শরৎ ঋতু। এই ঋতুতে মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়। এই ঋতুতে নদী, বিল, পুকুর ও হাওরের স্বচ্ছ জলের বুকে লেগে থাকে সর্বদা শাপলার পাগল করা হাসি। এই ঋতুতে শিউলি শিউলি ফুল তার অসাধারণ সৌন্দর্য নিয়ে ঘাসের বুকে যেন অট্ট্র হাসে হাসে। শিশির ভেজা দূর্বা ঘাসে ও আকাশে বাতাসে শরৎ রানী তার স্নিগ্ধ পরশ বুলিয়ে দেয়। শরৎকালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নদী তীরে কাশফুল বা কাশফুলের বন। বাংলাদেশের নদী তীরের কাশফুলের বন দিয়ে যেন একটি মায়াবী পরিবেশের সৃষ্টি করে। কাশফুলের একটু নরম ছোঁয়া পেতে নদী এলাকাযর কিনারে কিনারে কাশফুলের বনে তরুণ তরুণী সহ আবাল বৃদ্ধ সকলে শরৎ উৎসবে মেতে ওঠে।
আমার বাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরেই বয়ে চলেছে করতোয়া নদী। শরৎকালে এই নদীর দুই ধার দিয়ে উকি মারছে শরৎ রানীর বৈশিষ্ট্য বিশাল বিশাল এলাকা জুড়ে কাশফুলের বনরাজি। নদীর কিনারে গেলেই মন প্রাণ জুড়িয়ে যায়। অপরূপ অপরূপ সভায় দোল খাচ্ছে প্রকৃতির অপরূপ সুন্দর কাশফুল। প্রতিবছর শরতের দ্বিতীয় সপ্তাহ জুড়ে এই করতোয়া নদী তীরে পালিত হয় শরৎ উৎসব। হাজারো নরনারীর ঢল নামে এই করতোয়া নদী তীরে।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনিত কারণে এবারের শত উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। গত সপ্তাহে গিয়েছিলাম দিনাজপুর। ফিরতি পথে ডক্টর এম এ ওয়াজেদ সেতু থেকে পড়ন্ত বিকেলে দেখছিলাম নদী তীরে সেই কাশফুলের বন। মনকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। ছুটে গেলাম আমিও নৌকায় বেয়ে করতোয়া নদীর তীরে দুই কুলের কাশফুলের বনরাজি দেখার জন্য। যদিও পড়ন্ত বিকেলে সূর্যাস্ত প্রায় নিভু নিভু। তথাপি, কাশফুলের স্পর্শ নিতেই নেমে পড়লাম নদীতে।
আমি যখন নৌকা নিয়ে নদীর মাছ দিয়ে কাশফুলের বোন ধর্ষণে যাচ্ছিলাম। ঠিক তখন দেখা যাচ্ছিল কয়েকজন দর্শনার্থী কাশফুলের বনে নিজেদেরকে ক্যামেরায় বন্দি করছেন। অপূর্ব সুন্দর লাগছে দুই কুলের এই কাশফুলের বোন। মাথা হেলে হেলে দুলছে আর স্বাগত জানাচ্ছে হেমন্ত কালকে।
সন্ধ্যা নেমে আসছে তবুও এই কাশফুলের বোন ছেড়ে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে না। স্নিগ্ধ সৌরভে মুখরিত লাগছিল নদীপাড়ার এই কাশফুলের বন। নদী পাড়ের কাশফুলের বোনকে নিয়ে বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক, অসংখ্য কবিতা, অসংখ্য সাহিত্য রচনা করেছিলেন বা এখনো করে যাচ্ছেন।
শরৎ উৎসবে এই করতোয়া নদীতে অসংখ্য ছোট ছোট নৌকা নিয়ে ঘাটে বসে থাকেন মাঝিরা। অনেক দর্শনার্থী তাদের এই নৌকা ভাড়া নিয়ে নদী বেয়ে কাশফুলের বোন উপভোগ দর্শন করেন। এতে করে অনেক মাঝের জীবিকা নির্বাহ বেশ ভালই হয়।
আমি যে নৌকায় উঠেছিলাম সেই নৌকার মালিক হচ্ছে এখানকার স্থানীয় নিখিল মাঝি। কথা হয় তার সাথে এবারে শরৎ উৎসবে প্রতিদিন ৫০০ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত কামিয়েছেন এই নৌকা বেয়ে। আমি কাশফুলের বোন ঘুরে ঘুরে ঘাটে এসে এই নিখিল মাঝিকে একশত টাকা বের করে দিলাম। কিন্তু উনি কিছুতেই নিলেন না আমার টাকাটা। আমি বললাম এটা আপনার প্রাপ্য। উনি বললেন যে আপনি অসময়ে এসেছেন পশ্চিম আকাশের বেলাও ডুবে গেছে, ভালোভাবে তো উপভোগ করতে পারলেন না। সারাদিনে অনেক নৌকা পেয়েছি। আপনারটা ফ্রি দিলাম। বড় উদার মনের অধিকারী এই নিখিল মাঝি। পৃথিবীতে আসলেই নিম্নয়ের মানুষগুলোই উদার প্রকৃতির হয়। শরৎ ঋতুর প্রকৃতি যেমন উদার। তেমনি এই শরৎ রীতির মাঝে ও উদার মনের অধিকারী ভালো থাকবেন দাদা আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
বন্ধুরা এই ছিল আজকে আমার করতোয়া নদী তীরের মন মুগ্ধকর কাশফুলের বন নিয়ে স্মৃতির কিছু কথা। আজকে এ পর্যন্তই, আবার কথা হবে আগামীকাল অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সে পর্যন্ত সকলেই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, সকলের সুস্বাস্থ্য কামনায় শুভ বিকাল।
নাম | শ্রী ফণিভূষণ রায় অমিতাব। |
---|---|
User Id | @amitab |
Camera | Symphony Mobile phone. |
Mobile Phone Model | Z-35. |
Photo Location | kortoa river kukuriya pirganj rangpur. |
My Address | Vendabari Prigonj Rangpur Bangladesh. |
অনেক শুনেছি এই নদীর কথা। কোনো কবির সাথে কি নদীটা জড়িত? কেন জানিনা খুব শোনা শোনা লাগছে।
তা তো অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু আমিও এই মুহূর্তে কোভিদ নাম বলতে পারছি না। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি ঠিকই বলেছেন দাদা নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর মন অনেক উদার হয়ে থাকে। খুবই চমৎকারভাবে করতোয়া নদীর পাড়ে কাশফুলের বন নিয়ে আপনার স্মৃতি বিজড়িত মনমুগ্ধকর বেশ কিছু অনুভূতি আপনি শেয়ার করেছেন সত্যি পড়ে খুব ভালো লাগলো। দাদা আপনি তো ভালই লিখতে পারেন, আসলে লেখাগুলো পড়লে আপনার অনুভূতিগুলো মনে হচ্ছে আমার ভিতরেই কাজ করছে মনে হচ্ছে যেন আমি নিজেই আপনার সাথে সেই করতোয়া নদীর পাড়ে কাশফুল বন ঘুরে আসলাম। তবে দাদা একটা বিষয় পরামর্শ থাকবে বানানের ব্যাপারে আপনাকে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে।
এটা ঠিক বলেছেন আপনি। তবে ভয়েস টাইপিং তো এজন্যই একটু বানানের হেল্পার হয়ে যায়। রিভাইস দিয়ে চেষ্টা করি সংশোধন করার অনেক সময় ধরা পড়ে না। যাইহোক আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ব্যাপারে সতর্ক করার জন্য।
আসলে শরৎ এর কাশ ফুলের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে সবাইকে ৷ আপনার কাশ ফুল দেখার অনুভুতির গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ আমারও বাড়ি করতোয়া নদীর তীরে , তাই করতোয়া নদীর তীরের কাশ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে মিচ করি নাহ ৷ এবার একটু ঘোরাঘুরি কম হয়েছি তাই যাওয়া হয়নি কাশ ফুলের বাগানে ৷ তবে আপনার অনুভুতি আর ফটোগ্রাফি দেখে সত্যিই অনেক ভালো লাগলো ৷ যাই হোক ঠিক বলেছেন দিন শেষে নিম্ন আয়ের মানুষ গুলোই উদার মনের অধিকারী হয় ৷ ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য ৷
জি ভাই শরৎকালের কাশফুলের বর্ণনা দিয়ে অসংখ্য কবি কবিতা সাহিত্য লিখেছেন। শরৎকালের প্রধান আকর্ষ নেই হচ্ছে কাশফুল। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কি সুন্দর পরিবেশ দাদা। মন মুগ্ধকর।এরম কাশফুলের বাগান ছেড়ে সত্যিই কারো যেতে ইচ্ছে করবে না। আমি হলে মনে হয় ওখানেই শুয়ে থাকতাম।নিখিল মাঝিরা তো এই পার্বনের সময়েই একটু ভালো উপার্জনের মুখ দেখে। তাই আমি চেষ্টা করি এদের সাথে কখনওই দরজাম না করতে।যদিও আমাদের এখিনে সবটাই লঞ্চ পারাবার। তবে কেউ কেউ সখেও নৌকো চড়েন।
ঠিক বলেছেন দিদি। নিম্ন আর এইসব মানুষগুলো বরাবরই উদার হয়ে থাকে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল দিদি।