অবশেষে দেখা হলো।
আজ - ২১ই, অগ্রহায়ণ |১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
প্রথমেই আমরা দেখা করার জন্য শুক্রবার দিনটিকে বেছে নিই। কারণ ঢাকা শহরের যে অবস্থা তাতে অন্যান্য দিন বিশেষ করে শুক্র, শনিবার ব্যতীত অন্যান্য দিনে চলাফেরা করায় অনেক কষ্টকর ব্যাপার। কেননা রাস্তায় এত পরিমাণ জ্যাম থাকে যে ১০ মিনিটের রাস্তা পার হতেই ঘন্টাখানেক সময় চলে যায়। তাই আমরা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম এই দিনটিকেই । এছাড়াও আরেকটি কারণ হচ্ছে হাফিজ ভাই যেহেতু জব করেন তাই অন্যান্য দিনে উনি ফ্রি থাকেন না তাই শুক্রবারেই বেস্ট। আমাদের তিনজনের দেখা করার জন্য।
আমরা আমাদের প্ল্যান মোতাবেক, প্রথমে আমি সুমন ভাইয়ের বাসার সামনে যাই। আমি ঢাকায় যে আত্মীয়ের বাসায় উঠেছিলাম ওই বাসা হতে সুমন ভাইয়ের বাসার দূরত্ব তেমন একটা নয়, সিএনজিতে আমার যেতে সময় লেগেছে ১২ থেকে ১৫ মিনিটের মত। যদিও এত কম সময়ে পৌঁছানো অসম্ভব হতো যদি জ্যাম থাকত, তবে ঐদিন যেহেতু রাস্তায় কোন জ্যাম ছিল না তাই খুব দ্রুত পৌঁছে গিয়েছে। সুমন ভাইয়ের বাসার ওখানে গিয়ে সুমন ভাইকে কল করতে উনি আমাকে রিসিভ করতে চলে আসলেন। অবশেষে বাস্তবে সুমন ভাইয়ের দেখা পেলাম। আসলে এতদিন আমরা " আমার বাংলা ব্লগে " দীর্ঘ দেড় বছর ধরে কাজ করছি কিন্তু আমাদের কখনো কারো সাথে কারো বাস্তবে দেখা হয়নি। সব সময় ভার্চুয়ালি কথা হয়েছে। যখনই সুমন ভাইয়ের সাথে দেখা হল আসলে ওই সময়ের অনুভূতিটা প্রকাশ করার মতো নয়। সুমন ভাইকে ভার্চুয়ালি যেরকম ভাবতাম ঠিক সেরকমই বাস্তবে দেখতে পেলাম। অবশেষে আমরা ওনার রুমে বসে দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দিলাম ।
হাফিজ ভাই যেহেতু ঢাকা থেকে একটু দূরে থাকেন অর্থাৎ সাভারে থাকেন সেহুতো ওনার আসতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। তাই এর ফাঁকে , আমি আর সুমন ভাই মিলে জুমার নামাজটি আদায় করে নিলাম একসাথে। এদিকে হাফিজ ভাইয়ের পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেশ কিছুটা সময় লাগছিল । তাই আমরা সুমন ভাইয়ের বাসা থেকে বের হয়ে ফার্মগেটের ওখানে অপেক্ষা করছিলাম হাফিজ ভাইয়ের জন্য। কারণ হাফিজ ভাই ওখানে এসে আপেক্ষা করবে বলছিলেন।
অবশেষে বিকেল তিনটার দিকে হাফিজ ভাই,সুমন ভাই আর আমার একসাথে দেখা হল । হাফিজ ভাইকেও ঠিক ভার্চুয়ালি যেরকম ভাবতাম ঠিক সেরকমই এবং বেশ হাসিখুশি মজার একজন মানুষ। যদিও আমাদের এইবারই প্রথম দেখা হয়েছিল কিন্তু কখনো একবারের জন্য মনে হয়নি যে এবারই আমাদের সবার সাথে প্রথম দেখা। কারণ আমরা বিগত দেড় বছর ধরে আমার বাংলা ব্লগে একসাথে কাজ করতে করতে অনেকটাই ক্লোজ হয়ে গিয়েছিলাম।
যাহোক, যেহেতু আমরা দুপুরে খাওয়া-দাওয়া খাইনি। হাফিজ ভাই ঠিক নামাজ পড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল দুপুরের খাওয়া-দাওয়া খাওয়া হয়নি ওনার ও। তাই আমরা চিন্তা করলাম প্রথম আমরা আমাদের দুপুরের খাবারটা সেরে নিতে হবে। প্রথমে আমরা ধানমন্ডি লেকের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম একটা সিএনজি ঠিক করে। যদি ও আমার তেমন একটা ঢাকা যাওয়া হয় না কিংবা ঢাকার এলাকাগুলো তেমন একটা আমার চেনা জানা নেই। তাই আমি বলতে পারছি না ওই জায়গাটাকি ধানমন্ডিতে পড়ে কিনা। তবে ধানমন্ডি লেকের ওখান থেকে সিএনজিতে নেমে পায়ে হেঁটেই আমরা সুলতান ডাইন এ গেলাম দুপুরের খাবার সেরে নেওয়ার জন্য। আমরা একটি তিনজনের কাচ্চি প্লেটার অর্ডার দিলাম। প্যাকেজের সাথে বোরহানি ও ছিল। সাথে সফট ড্রিংক হিসেবে ছিল পেপসি এবং ডেজার্ট হিসেবে ছিল ফিরনি। তিন ভাই মিলে বেশ মজা করে খেলাম। খেয়েদেয়ে পেট তাজা করে কিছুক্ষণ ওখানে আড্ডা দিলাম কিছু ছবিও তুললাম। এরপর ধানমন্ডি লেক ঘোরার উদ্দেশ্যে বের হলাম। ওখানে বেশ খানিকক্ষণ আড্ডা দিলাম প্রায় সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ছিলাম ওখানে এবং বেশ ভালোই ঘোরাঘুরি করলাম।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এখানে হাফিজ এবং সুমন ভাই দুজনেই আমাদের দেখা হওয়া কে উদ্দেশ্য করে গিফট কিনে রেখেছিলেন। হাফিজ ভাই আমাকে এবং সুমন ভাইকে তার গিফট গুলো দিলেন। একটি আতরের বক্স ছিল ওখানে দশ ধরনের আতর ছিল। আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে গিফট টি। দশটি ফ্লেভারের আতর ছিল। আমি এখনো মসজিদে যাওয়ার সময় প্রতিদিন একটি করে দেওয়ার চেষ্টা করি। এরপর সুমন ভাই একটি করে জায়নামাজ গিফট দিয়েছেন আমাকে এবং হাফিজ ভাইকে। এটিও আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। যাক এরপর আবার আমরা সুমন ভাইয়ের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দি। সুমন ভাইয়ের রুমে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে, রাত ৮:৩০ টার দিকে যে যার বাসায় চলে আসি।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
প্রিয় এডমিন তিন ভাই তাহলে দেখা করেই ফেললেন ৷ আমরা বাংলা ব্লগের তো সবাই আপন দুরে থাকি বা কাছে ৷ কারন প্রতি মূহুর্ত একে অন্যের সাথে ৷
যা হোক অবশেষে তিন ভাইয়ের দেখা হওয়ার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
এর আগে সুমন ভাই আপনাদের দেখা করা নিয়ে একটা পোস্ট করেছিলো।আপনারা বেশ মজা করেছেন।ভাইয়া আপনারা তিনজন একা একা কেমনে খেলেন কাচ্চি আমাদেরকে রেখে😉😉।যাই হোক ঢাকা শহর মানেই জ্যাম। এর আগে সুমন ভাই আতরের ছবি দিয়েছিলো।আপনাদের গিফট গুলো বেশ দারুন ছিলো।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
অবশেষে আপনি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের কারো সাথে দেখা করতে পেরেছেন। আমি তো তাও পারিনি 🥺।নিশ্চয়ই আপনাদের দিনটি খুব আনন্দের সঙ্গে কেটেছে। প্রথমত তিনজন একসঙ্গে দেখা করেছেন, তারপর একসাথে খাওয়া দাওয়া খেলেন, এরপর আবার একজন একজনের কাছ থেকে গিফট ও পেলেন। খুব ভালো লাগলো দশটা ফ্লেভারের আতর এবং জায়নামাজ গিফট পাওয়ার কথাটা শোনে।
ভাই আপনাদের তিনজনের দেখা হওয়ার মুহূর্তটি পড়ে সত্যি ভীষণ ভালো লাগলো। আপনারা এতদিন আমার বাংলা ব্লগে কাজ করেছেন আমি ভেবেছি এর আগেও মনে হয় আপনারা দু-একবার দেখা করেছেন। কিন্তু জানতে পারলাম এ বারই আপনারা প্রথম দেখা করলেন ।সত্যি বিষয়টি অন্যরকম ছিল ।এতদিন কাজ করতে করতে আপনারা এমনিতেই অনেক ক্লোজ ছিলেন ।প্রথম দেখা হলেও মনে হওয়ার কথা অনেক দিনের চেনা। আর সুলতান ডাইনসের খাবার দেখলে তো জিভে জল চলে আসে। দারুন খাওয়া দাওয়া করলেন। ভালো লাগলো । ধন্যবাদ।
দেড় বছরে ভার্চুয়ালি কথা হলেও সামনাসামনি কখনো দেখা হয়নি, অথচ যখন আপনাদের তিনজনের একসাথে দেখা হয়েছে তখন এই কথাটি কখনোই মনে হয়নি। এটাই হচ্ছে একটি পরিবারের ভালোবাসার বন্ধন। আর এই পরিবার হচ্ছে আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবার। ভাইয়া, আপনাদের তিনজনের একসাথে দেখা হওয়ার কথা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আর যখন পোস্ট পড়ছিলাম তখন যেন আপনাদের তিনজনের একসাথে হওয়ার ব্যাপারটি উপলব্ধি করছিলাম। হাফিজ ভাই ও সুমন ভাইয়ের সাথে দেখা হল, পেট ভজন হল, গিফট পাওয়া হল, সেই সাথে পাওয়া হলো আনন্দময় সময়। আর এই সময়টুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
এই মুহুর্ত গুলো যতবার পড়ি, ততবার বেশ মিস করি সেই দিনের ঘটে যাওয়া মুহূর্ত গুলোকে। আফসোস হয় নিজের কাছে, কেন যে যেতে পারলাম না। ভালোবাসা অবিরাম কমরেড। ☺️🙏
কিছু সম্পর্ক থাকে যা মনে হয় হাজার বছরের পুরনো, কিছু মানুষ থাকে যাদের মনে হয় খুবই কাছের, সত্যি আমার বাংলা ব্লগের মানুষগুলোর সাথে সম্পর্কগুলো সেই পর্যায়ের। বেশ উপভোগ্য ছিলো সে দিনের সময়গুলো। ধন্যবাদ
ঢাকা শহর জ্যাম সবসময় শুনে আসছি।তাছাড়া সত্যিই দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার ফলে এতটাই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে যে বোঝায় যায় না বাস্তব জীবনে প্রথম দেখা।আপনাদের একসঙ্গে দেখা হওয়ার অভিজ্ঞতা পড়ে ভালো লাগলো।আর আতরের ছবিগুলো সুমন দাদার পোষ্টে দেখেছিলাম, বেশ সুন্দর।ধন্যবাদ আপনাকে।