নেশা।
কেমন আছেন "আমার বাংলা ব্লগ"এর সকল সদস্যরা? আশা করি সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। আজ আমি একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। আশাকরি আমার পোস্টটি পড়ে আপনাদের খুব ভালো লাগবে।
নেশা খুবই মারাত্মক একটি ব্যাধি। ব্যাধি বা রোগ এই কারণে বলছি কারণ এই নেশা একবার হয়ে গেলে আর ছাড়তে চায় না। আর কেউ যদি একবার কোন নেশায় পড়ে যায় সেই নেশা ছাড়ানো খুবই কষ্টকর একটি ব্যাপার। গ্রামের মানুষদের দেখেছি তারা খুব পান খায়। পান দীর্ঘদিন খেতে খেতে তাদের এমন নেশা হয়ে যায় যে পান না খেলে তাদের যেন শরীরের মধ্যে অস্বস্তি শুরু হয়ে যায়। আর পান খেলেই তখন কাজ করার এনার্জি খুঁজে পায়। কিন্তু এই পান বেশি খেলে দাঁত খারাপ হয়ে যায় এবং জিভের উপরে চামড়া পুড়ে যায়। তেমনি দেখেছি শহরের মানুষেরা রোজ সকালে চা খায়। এই চা না খেলে তাদের দিনটা যেন শুরুই হতে চায় না। আর কোন কাজে তারা উদ্যম পায় না চা না খেলে। এবং দীর্ঘদিন চা খেতে খেতে চায়ের এমন নেশা হয়ে যায় যে, অনেকের মুখে আমি শুনেছি যে চা না খেলে নাকি তাদের ভীষণ মাথা যন্ত্রণা করে। আর চা খেলেই কিছুক্ষণের মধ্যে মাথা যন্ত্রণা ঠিক হয়ে যায় এবং শরীরে একটা আলাদাই এনার্জি অনুভব করে তারা। কিন্তু এই চায়েরও খুবই বাজে কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। অতিরিক্ত চা পানের কারণে আমাদের শরীরের হাড় কমজোরি হয়ে যায়।
এছাড়াও ঘুম না আসা এবং আয়রনের ঘাটতি পরে চা খেলে।অতিরিক্ত দুধ চা খেলে এসিডিটির প্রবলেম দেখা দিতে পারে, এছাড়াও অতিরিক্ত চা পানের ফলে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক হজম ক্ষমতা নষ্ট হয়। এ যুগে বেশিরভাগ পুরুষ মানুষের মধ্যে দেখা যায় বিড়ি বা সিগারেট খাওয়ার নেশা। আর এই বিড়ি বা সিগারেট এরা এত পরিমান খেয়ে ফেলে যে তাদের দেখলেই বোঝা যায় যে তারা প্রচুর পরিমাণে এই নেশায় আসক্ত। কারণ আমি খেয়াল করে দেখেছি এই ধূমপান করা মানুষএর ঠোঁট কালো হয়ে যায় আর এটা সব থেকে বেশি হয় যারা বিড়ি খায়। কিছু কিছু মানুষের অবশ্য ছোটবেলা থেকেই ঠোঁট কালো থাকে। কিন্তু যারা এই বিড়ি সিগারেট খায় তারা কিন্তু নিজের সাথে সাথে পরিবেশের ক্ষতিও করে চলেছে। কারণ যারা এই বিড়ি সিগারেট খাচ্ছে তারা ধোয়াটা নিজের শরীরে নিচ্ছে তাই তার শরীরে যেমন ক্ষতি হচ্ছে, সে যেখানে দাঁড়িয়ে এই বিড়ি বা সিগারেট খাচ্ছে সেই জায়গার আশেপাশের মানুষ এই ধোঁয়া নিঃশ্বাসের মাধ্যমে শরীরের ভেতর নিয়ে ফেলছে তাই তাদের শরীরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এইসব নেশা করার কারণে শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার ও নষ্ট হয়ে যায়।
ফুসফুসের সাথে সাথে বিভিন্ন অর্গান নষ্ট হয়ে যায় এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ধূমপান একটি অন্যতম কারণ। কিন্তু যারা এই বিড়ি সিগারেটের নেশা করেন তারা এতে এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ে যে এটা ছাড়া তাদের পক্ষে অসম্ভব। আজকাল যুগে শুধু ছেলেরা নয় মেয়েদের মধ্যেও সিগারেট খাওয়ার প্রবণতা দেখতে পাওয়া যায়। এখন রাস্তাঘাটে বেরোলেই ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও সিগারেটের নেশা করতে দেখা যায়। এর ফলে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়ায় আমাদের ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায়। আর মেয়েদের তো গাইনো প্রবলেমও দেখা দেয় এই ধূমপান বা মদ্যপান এর কারণে। অতিরিক্ত মদ্যপানে লিভার খারাপ হয়ে যায়। যারা এসব নেশার আসক্ত তারা সবাই জানে এই সব নেশার ক্ষতিকারক দিকগুলো। তবু তারা এসব নেশা ছাড়ে না বা ছাড়তে পারে না। এইসব নেশার থেকে ভয়ঙ্কর নেশা হলো শুকনো নেশা অর্থাৎ ড্রাগের নেশা। একবার কেউ যদি এই ড্রাগের নেশা আসক্ত হয়ে পড়ে তাহলে তার নরমাল জীবনে ফিরে আসা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
এনজাইটি, ডিপ্রেশন সহ বিভিন্ন মানসিক রোগ দেখা দেয় ড্রাগের নেশার কারণে।এই ড্রাগের নেশা বা গাজার নেশা করলে মানুষের মস্তিষ্কের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে আবার কেমন পাগলের মত আচরণ করতে থাকে। এছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা আছে যা থেকে বের হয়ে আসা অনেক কঠিন। এইসব নেশার কারণে পরিবারের সাথে সম্পর্ক পুরোই নষ্ট হয়ে যায়। কোন নেশাই ভালো নয় বা শরীরের উপকার করে না। তাই আমার মনে হয় এই খারাপ নেশা গুলি না করে আমরা যদি ভালো কিছু খাদ্যাভ্যাস করি এবং ভালোভাবে নিজের জীবন গড়ে তুলি তাহলেই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ ক্ষণিকের আনন্দের জন্য পুরো জীবনটা নষ্ট করা খুবই বোকামি। তাই আমাদের এসব নেশা থেকে দূরে থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করে নিয়মিত শরীর চর্চার মাধ্যমে সুস্থ থাকতে হবে। আর যারা কোনো না কোনো বাজে নেশায় আসক্ত আছে তাদের প্রতিদিন একটু একটু করে নেশা করা কমিয়ে আনতে হবে তাহলে দেখা যাবে একদিন এই নেশা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যাবে।
আশা করি আজকের পোস্টটি আপনার খুব ভালো লেগেছে। আর ভালো লাগলে কমেন্ট করে অবশ্যই আমাকে জানাতে ভুলবেন না।