রবীন্দ্র সরোবরে কিছুসময়।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমি আজকে ধানমন্ডি লেকের পাশে অবস্থিত রবিন্দ্র সরোবর নিয়ে আলোচনা করব। গতকাল বিকেলে গিয়েছিলাম ঘুরতে। জীবনের প্রথম রবীন্দ্র সরোবরে যাওয়া। এর আগে ওই পাশ দিয়ে রিক্সায় করে এসেছি, কিন্তু নামা হয়নি। কালকে দুপুর থেকেই ভাবছিলাম যে বিকেলের দিকে বের হবো। কিন্তু হাতে অনেক কাজ ছিল। ব্যস্ততার জন্য একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল বেরোতে।

বিকেল পাঁচটার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে নিলাম। রিক্সা নিয়ে সোজা চলে গেলাম রবীন্দ্র সরোবরে। তখন বিকেল টাইম। ওই সময় পুরো জায়গাটাতে অবসর সময় কাটাতে আসা মানুষের ভিড়। শহরের কর্মব্যস্ততার মাঝে একটু সময় করে অনেকেই এখানে চলে আসে। এখানে বহু রকমের মানুষের দেখা মিলেছে। তবে বিনোদনের অন্যতম জলজ্যান্ত জীব হল টিকটকার নামের একদল প্রাণী। কি তাদের পোশাক, উদ্ভট অঙ্গভঙ্গি, মেয়েদের মত ড্রেস পড়ে নাচানাচি। ওদের কর্মকাণ্ড দেখে আমি খুবই বিনোদিত হয়েছিলাম। হ্যাঁ এই টাইপের বিনোদন মানুষ চিড়িয়াখানায় গিয়েও পায়।

1653444106117-01.jpeg

আমরা প্রথমে চিন্তা করলাম পুরো এরিয়াটা হেঁটে হেঁটে ঘুরে দেখব। সেটাই করলাম। অনেক রকম পেশার মানুষকে দেখতে পেলাম ভেতর। ছোট ছোট কিছু ছেলেমেয়েদের দেখলাম ফুল হাতে বিক্রি করছে। ওদের বয়স খুবই অল্প। এত অল্প বয়সে ওরা খুব ভালোভাবে জানে ওদের ফুলগুলো বিক্রি করতে কোথায় যেতে হবে। জোড়ায় জোড়ায় যেখানে থাকে তারা সেখানে গিয়েই ফুল বিক্রি করে লক্ষ করলাম। ফুলগুলো কাদের বেশি প্রয়োজন আর কোথায় গেলে বিক্রি হয়ে যাবে সেটা ওরা ভালভাবেই জানে।

1653444046046-01.jpeg

1653443960502-01.jpeg

1653443939148-01.jpeg

1653443856719-01.jpeg

1653443895456-01.jpeg

রবীন্দ্র সরোবর এর একটা বিশেষ আকর্ষণ হলো এখানে বিভিন্ন রকম ফাস্ট ফুড আইটেমের খাবার পাওয়া যায়। এই গরমে আপনি যদি ঠান্ডা এক গ্লাস জুস খেতে চান সেটাও পেয়ে যাবেন। আপনার পছন্দমত ফল দেখিয়ে দিলে ওরা সে ফলের জুস বানিয়ে দেবে। এগুলো হলো স্থায়ী দোকান। কিন্তু রবীন্দ্র সরোবরে বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ্য করবেন ছোট ছোট ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ঝালমুড়ি, পান-সিগারেট, আইসক্রিম, চা এগুলো বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। আমি কালকে ইন্টারেস্টিং একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি। রবীন্দ্র সরোবর এর প্রধান চত্বরে একজন আর্টিস্ট তার করা আর্ট রেখে দিয়েছে বিক্রির জন্য।

1653444070830-01.jpeg

আমি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে মনোযোগ সহকারে দেখছিলাম আর্ট টি। এই চিত্রকর্মের দাম নির্ধারণ করেছে মাত্র ৩৫৫০ টাকা। এরপর আমরা চিন্তা করলাম ফাস্টফুডের কোন একটা আইটেম ট্রাই করা যেতে পারে। বহু আয়োজন সেখানে। কিন্তু আমরা বেশি সময় থাকবো না। কারণ আমার বন্ধুর প্রাইভেট ছিল একটু পরেই। এইজন্য ভাবলাম ফুচকা খেয়ে তারপর বাসার দিকে চলে যাব। ওখানে প্রচুর চেয়ার-টেবিল পেতে রাখা আছে। যারা রবীন্দ্র সরোবরে গিয়েছেন তারা পরিবেশটা সম্পর্কে জানেন। একটা টেবিলে বসে পরলাম, আর ফুচকার অর্ডার দিলাম। ফুচকা খেতে ঠিকঠাক ছিল কিন্তু ফুচকার টক তেমন একটা ভালো লাগেনি আমার কাছে।

1653444198005-01.jpeg

যাই হোক, খাওয়া দাওয়া শেষ। রবীন্দ্র সরোবরে গিয়ে আমরা যা যা খেয়েছি: ঝাল মুড়ি, আইসক্রিম, ফুচকা। তবে আমরা যাওয়ার সময় খুব বড় একটা ভুল করেছি। যাওয়ার সময় ক্যামেরাটা না নিয়েই চলে গেছি। এইজন্য ভাবলাম আবার অন্য আরেকদিন আসতে হবে ক্যামেরাসহ। রবীন্দ্র সরোবরে ছবি উঠানোর অনেক সাবজেক্ট আছে। কিন্তু ক্যামেরা না থাকায় শুধু আফসোস করেছি। যাই হোক এরপর বাসায় ফিরে এসেছিলাম।

এটাই ছিল কালকের ঘটনা। তবে নেক্সট দিন ক্যামেরা নিয়ে গিয়ে কিছু ফটোগ্রাফি করে আপনাদের সাথে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করবো। আজ তাহলে আমি এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।

লোকেশনঃ- P9WG+3V7 Dhak a [Google plus code]
ডিভাইসঃ- Redmi Note 9 Pro Max



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  
 2 years ago 

যাওয়ার সময় ক্যামেরাটা না নিয়েই চলে গেছি।

দাদা,আপনি বেশ ভ্রমন প্রিয় মানুষ।সুন্দর সুন্দর জায়গা মানেই,সুন্দর সুন্দর ভোজন।আমি তো আপনার ছবিগুলো উপভোগ করার পাশাপাশি খাওয়ার গল্পটাও পড়ি।ঐতিহাসিক বিষয়গুলি জানার পাশাপাশি খুব ভালো লাগে খাওয়ার বিষয়গুলোও।দাদা ফাঁকা টেবিল শেয়ার না করে ঝাল মুড়ি, আইসক্রিম, ফুচকা এত এত লোভনীয় খাবারগুলো ফোনে তুলেই শেয়ার করতে পারতেন! দারুণ সময় কাটিয়েছেন সন্দেহ নেই,৩৫৫০ টাকা দামের ছবিটি সুন্দর ছিল।ধন্যবাদ দাদা।

 2 years ago 

আইসক্রিম, ঝাল মুড়ি এগুলো হেঁটে হেঁটে খেয়েছিলাম তো এজন্য ছবি উঠানো হয় নি।

 2 years ago 

তবে বিনোদনের অন্যতম জলজ্যান্ত জীব হল টিকটকার নামের একদল প্রাণী। কি তাদের পোশাক, উদ্ভট অঙ্গভঙ্গি, মেয়েদের মত ড্রেস পড়ে নাচানাচি। ওদের কর্মকাণ্ড দেখে আমি খুবই বিনোদিত হয়েছিলাম।

আমার কাছে মাঝে মাঝে টিকটকারদের অন্য জগতের প্রাণী মনে হয়। আসলে তাদের চালচলন, পোশাক, অঙ্গভঙ্গি সবকিছুই একেবারে অন্য জগতের প্রাণীর মতো। আপনি একদম ঠিক বলেছেন জলজ্যান্ত জীব এরা। তবে যাই হোক আপনি অনেক ঘুরাঘুরি করেছেন জেনে ভালো লাগলো। আশা করছি পরবর্তী কোন দিন আবার আপনার ক্যামেরা নিয়ে সেখানে যাবেন এবং দারুন দারুন ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন। সেই অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া। আপনার জন্য শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো। ♥️♥️♥️

 2 years ago 

সরোবরের ঐ মঞ্চে দুপুরবেলা টিকটকারদের ছড়াছড়ি থাকে। হাহা। অনেক বিনোদন দেয় এই প্রানী গুলো। লজ্জা সরমের বালাই নাই এদের। আমি একবার বসে ছিলাম দুপুরের দিকে ঐ পাশে। একদল টিকটকার এলো। তাদের সাথে কয়েকটি মেয়েও ছিল। এসেই ছেলে মেয়ে মিলে ডুয়েট টিকটক করা শুরু করে দিল। কতক্ষন তাদের কান্ড কলাপ দেখে লজ্জায় আমিই উঠে চলে আসলাম। রবীন্দ্র সরোবরে প্রায়ই যাওয়া হয়। ভাল লাগলো আপনার লেখা পড়ে সুমন ভাই। ভালবাসা নিবেন।

 2 years ago 

এই রবীন্দ্র সরোবরের নাম অনেক শুনেছি তবে যাওয়ার ভাগ্য হয়নি।যাক এবার অন্ততপক্ষে ঢাকার কিছু জিনিষ দেখতে পাবো আপনার জন্যে।

রবীন্দ্র সরোবরে কখনো যাওয়া হয়নি ভাইয়া। তবে আজ আপনার পোস্টটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। দেখে মনে হয় খুবই সুন্দর একটি মনোরম পরিবেশ। ফুলগুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো। আরো বেশি ভালো লেগেছে আর্ট দেখে। খুবই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

জ্বি ভাই। আমার নিজের কাছেও ওই আর্ট টি অনেক সুন্দর লেগেছে।

 2 years ago 

ভাই আপনার মত আমিও চিত্রশিল্পীর আকা আর্ট দেখে অবাক। এত সুন্দর একটি ছবি মাত্র 3 হাজার 550 টাকা হয় কি করে। অর্থের প্রয়োজনে আসলে মানুষকে অনেক কিছুই করতে হয়। আর টিকটকাররা তো আমাদের দেশের জাতীয় সেলিব্রেটি। এদের কথা কিছু বলতে গেলে মার খাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আশাকরি ক্যামেরা নিয়ে গেলে পরবর্তীতে আরো ভালো ছবি দেখতে পাবো।

 2 years ago 

বিকেল বেলার সুন্দর পরিবেশের মধ্যে রবীন্দ্র সরোবরে খুবই সুন্দর সময় পার করেছেন। আসলে বিকেল বেলা মানুষের ভিড় দেখা যায়। কারণ বিকালবেলা সুন্দর পরিবেশের মধ্যে সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। তবে একটা বিষয় লক্ষ করলাম টিকটক নামে প্রাণীদের দেখতে পেয়ে। কারণেই টিকটক নামে প্রাণীরা বাংলাদেশের প্রতিটা জায়গা দখল করে নিয়েছে। যেখানেই যায় তাদের দেখে পাওয়া যায়। আর এই টিকটক নামের প্রাণীদের মাথার চুল এবং পোশাক দেখলে যেন কেমন লাগে। সত্যিই আপনার আজকের ভ্রমণ এবং ফটোগ্রাফি গুলো আমার খুবই ভালো লেগেছে। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।

 2 years ago 

রবীন্দ্র সরোবর অর্থ আমি একবার গিয়েছিলাম। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে জায়গাটি। ঢাকার বুকে এরকম জায়গা পাওয়া খুবই দুষ্কর। আপনি ঠিক বলেছেন রবীন্দ্র সরোবরে অনেক ফাস্টফুডের দোকান ,ফুলের দোকান আছে আমার খুবই ভালো লাগে। ওখানকার রেখে দেওয়ার আর্ট গুলো অনেক সুন্দর ।আমি যখন গিয়েছিলাম তখন দেখেছিলাম অনেক আর্ট প্রাইস নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে রবীন্দ্রসরোবরে কাটানো সময় গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ।আশা করছি আপনি খুব দ্রুতই ঢাকার বিভিন্ন ঐতিহাসিক জায়গা গুলো দেখে নেবেন আহসান মঞ্জিলে যাবেন।

 2 years ago 

ঢাকা থেকেও কখনো এই রবীন্দ্র সরোবরে যাওয়া হয়নি। তবে বেশ সুন্দর। টিকটকারদের কথা কি আর বলবো, কোথায় এমন নেই তারা থাকে না প্রত্যেকটা জায়গাতেই রঙ-ঢঙ এর অভিনয় করে বেড়ায়।

সব থেকে বেশি ভালো লাগলো হলুদ গোলাপ, এই প্রথম কারো ফটোগ্রাফিতে দেখলাম। অনেক আকর্ষনীয় লাগলো।

 2 years ago 

ভাইয়া ভালো বলেছেন,টকটক নিয়ে।বেশ মজা পেয়েছি।আর কি সুন্দর আর্ট করেছে,দাম টা আসলেই অনেক কম।ফুলগুলোও বেশ সুন্দর। কালকে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন।ধন্যবাদ

Coin Marketplace

STEEM 0.25
TRX 0.11
JST 0.032
BTC 62062.59
ETH 3002.04
USDT 1.00
SBD 3.77