বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে হঠাৎ এলার্জির ভয়াবহ বিস্তার: কারণ, প্রতিকার ও বাস্তব অভিজ্ঞতা।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের অনেক পরিবারেই এক অদ্ভুত স্বাস্থ্য সমস্যা ছড়িয়ে পড়েছে, আর সেটা হলো বিরক্তিকর এলার্জি, যার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। আগে যাদের কখনো তেমন সমস্যা ছিল না, তারাও এখন চুলকানি, ত্বক ফুলে যাওয়া, লাল দাগ, চোখ চুলকানো, এমনকি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
আমার নিজের অভিজ্ঞতা বললে, কয়েক মাস আগে আমার শরীরে IgE তথা এলার্জি পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫১৮-এ, যেখানে স্বাভাবিক মাত্রা ১৫০ এর নিচে। তখন শরীরে অস্বাভাবিক চুলকানি, নিদ্রাহীনতা ও মানসিক অস্থিরতা দেখা দেয়। আমি নিয়মিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শুরু করার পর ধীরে ধীরে কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসি।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এখন শুধু আমি নই, আমার ছোট ভাই, ছোট বোন, এমনকি মা’ও মারাত্মকভাবে এলার্জিতে আক্রান্ত। তাদের শরীর ফুলে যায়, চুলকাতে চুলকাতে ঘুম হারাম হয়ে যায়। অফিসের তিন সহকর্মীর একই সমস্যা, শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়রাও একই অভিযোগ করছেন। মনে হচ্ছে এই এলার্জি যেন এখন জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই বিষয়টি আমাকে টেনশনে ফেলে দিলো। ফলে আমি আমাদের অফিসের একজন এবিবিএস ডাক্তারের সাথে আলোচনা করি যে,কেন হঠাৎ এত মানুষ এলার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছে?
তিনি আমাকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে কারন উল্লেখ করে বলেন, এলার্জির এই হঠাৎ বৃদ্ধি একক কোনো কারণে নয়, বরং বিভিন্ন পরিবেশগত, জৈবিক ও সামাজিক পরিবর্তনের মিলিত প্রভাবের ফল।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণ এখন বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ে। ধুলাবালি, ধোঁয়া, শিল্পকারখানার বর্জ্য, প্লাস্টিক পোড়ানোর গ্যাস এগুলো ত্বক ও শ্বাসযন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে এলার্জির মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
খাদ্যে রাসায়নিক ও কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের খাদ্যতালিকায় থাকা সবজি, ফলমূল ও মাছ-মাংসে অতিরিক্ত সংরক্ষণকারী রাসায়নিক ও কীটনাশকের উপস্থিতি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এর ফলে শরীর যে কোনো সাধারণ পদার্থের প্রতিও অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন, করোনা মহামারির সময় নেয়া টিকা শরীরের ইমিউন সিস্টেমে স্থায়ী পরিবর্তন এনেছে। এর ফলে কেউ কেউ দীর্ঘমেয়াদে অতিসংবেদনশীল প্রতিক্রিয়ায় ভুগছেন। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বিষয়টি এখনও গবেষণাধীন। সঠিক তথ্য না আসলে কিছু বলা যাচ্ছে না।
উনি যতক্ষণ অফিসে থাকেন সর্বদা মাক্স পড়ে থাকেন। তিনি আরো বলেন এলার্জি সম্পূর্ণ নিরাময় করা না গেলেও সচেতন জীবনযাপন ও নিয়মিত চিকিৎসা এর তীব্রতা অনেক কমিয়ে দিতে পারে।
রক্তের IgE টেস্ট করে নিজের এলার্জির মাত্রা জেনে নিন। প্রয়োজনে স্কিন অ্যালার্জি টেস্ট করিয়ে নির্দিষ্ট কারণ শনাক্ত করুন। তারপর সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
আমি তাকে আমার হোমিওপ্যাথি ঔষধ খাওয়ার বিষয়টিও বলেছিলাম। তখন তিনি বলেন, অনেকে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ভালো ফল পাচ্ছেন, তবে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ও নিয়ম মেনে ওষুধ সেবন করা উচিত।
তাছাড়া আরো বলেন, ঘরের ধুলা-ময়লা পরিষ্কার রাখতে, পারফিউম, ধোঁয়া ও কীটনাশক থেকে দূরে থাকতে, খাবারে কেমিক্যালমুক্ত উপকরণ ব্যবহার করার চেষ্টা করতে। যথা সম্ভব প্রতিদিন ফলমূল, সবজি, ভিটামিন সি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, মধু, কালোজিরা ও প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করতে। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এলার্জি এখন আর ব্যক্তিগত সমস্যা নয়, বরং বাংলাদেশজুড়ে এক নীরব স্বাস্থ্য সংকটে রূপ নিয়েছে। অসংখ্য পরিবার প্রতিদিন এই কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এলার্জির স্থায়ী প্রতিকার সম্ভব না হলেও সচেতনতা, নিয়মিত চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চললে এর প্রভাব অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
আমাদের উচিত হবে এখনই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া, কারণ স্বাস্থ্যই হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















