নিমন্ত্রণ
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন? আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকে আবারো নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে আশা করছি সকলেরই ভালো লাগবে।
গতকালকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম মেজো মামীর বাড়ি যাওয়ার মুহূর্ত। আমরা সকলে মিলে পৌঁছে গিয়েছিলাম বৃষ্টি মাথায় করে নিয়ে। গ্রামে যে কোন কাজে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে সবকিছু ভেস্তে যায়। মামির বাড়ি খুবই গ্রামে। তাই বৃষ্টি শুরু হওয়া মাত্রই সমস্ত কিছু ভেস্তে গিয়েছিল ।আমরা যখন পৌঁছালাম তখন বাৎসরিক কাজ শুরু হয়ে গেছে। প্রায় শেষের মুখে বৃষ্টি শুরু হতেই সেখানে জলে একদম কাদা ভর্তি হয়ে গেল ।ঠাকুর মশাই বাৎসরিক কাজ শেষ করে উনার সমস্ত জিনিস তাড়াতাড়ি করে গুটিয়ে নিল। ব্রাহ্মণরা তাদের জিনিস গোটাতে সবসময় ব্যস্ত থাকে। এরপর তখনও দুপুরের রান্না-বান্না কমপ্লিট হয়নি । লোকজন খুব একটা বলেনি ।তাই বাড়িতে বড় প্যান্ডেলের ব্যবস্থাও করেনি। খুব ছোট খাটোর মধ্যে দিয়েই বাৎসরিক অনুষ্ঠানটা সেরে ফেলার জন্য ছোটখাটো আয়োজন করেছিল।
বৃষ্টির মধ্যে রান্না করতে অসুবিধা ওপরে ত্রিপল টাঙানো থাকলেও চারপাশ দিয়ে জল তো আসছিল। বৃষ্টি যেন ছেড়েও ছাড়ছিল না। আমরা সকলে ঘরে গিয়ে বসলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো মামীর মা যখন মারা যায় ।তখন মামীদের টালির ঘর ছিল। সুন্দর বাড়ি বানাবো বানাবো করে আর তৈরি করা হয়ে ওঠেনি। কথায় আছে সময় থাকতে থাকতে সব জিনিসের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সেই বাড়ি করল। কিন্তু উনি মারা যাওয়ার পর।মামীর মায়ের ঘরের ভীষণ শখ ছিল। উনি মারা যাওয়ার পর ভালো ঘরবাড়ি করেছে। শুধুমাত্র উনি দেখে যেতে পারল না। প্রত্যেকটি মেয়েদেরই সুন্দর সংসার ঘরবাড়ি নিয়ে স্বপ্ন থাকে ।উনারও ঠিক তেমনি ছিল ।যাই হোক ভগবান ওনার সব আশা পূর্ণ করেনি। উনার নিয়তি ওইটুকুই ছিল। তাই হয়তো ঘরের স্বপ্নটা পূর্ণ করে যেতে পারেনি। আশা করি ওনার আত্মার শান্তি পেয়েছে।ভগবান পরজনমে ওনার সমস্ত আশা যেন পূর্ণ করে। ভগবানের কাছে এটাই প্রার্থনা করি।
যাই হোক আমরা সকলেই গাড়িতে গাড়িতে গিয়ে একটু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তাই সকলে মিলে ঘরের মধ্যে রেস্ট নিচ্ছিলাম। আমার মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আমি তো গিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম। আমরা যখন গিয়েছিলাম বাড়িতে বাৎসরিক কাজ হচ্ছে কিন্তু কোন লোকজন নেই । মানে কোন আত্মীয়স্বজন কেউ বসে নেই।শুধুমাত্র মামী, মামির বাবা আর আমার মামা এই কয়জন ছিল ।কাজ শেষ হওয়ার পর সবাই একে একে আসতে শুরু করে। এরপর বেশ খানিকক্ষণ পর সমস্ত রান্না কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পর প্রথমবার আমরা সকলে খেতে বসে পড়েছিলাম ।যেহেতু যাবার সময়ে শরীরটা খারাপ ছিল ।তাই কোন খাবারই ঠিক মতো খেতে পারিনি। কোনো রকম খেয়ে উঠে পড়েছিলাম। এতটা জার্নি করে যাওয়ার পর ঠিক করে খাওয়া দাওয়া যায় না।
সকলের খাওয়া কমপ্লিট হওয়ার পর ঘরে বসে রেস্ট নিচ্ছিলাম ।এরপর খানিকক্ষণের জন্য বৃষ্টি থেমেছিল। তখন পাড়ার সকলে চলে এসেছিল দুপুরের খাবার খেতে। আমরা মামার মেয়ের সাথে খানিকক্ষণ খেলাধুলা করে নিয়েছিলাম। এরপর আবারো আমাদের বাড়ি রওনা দিতে হবে ।তাই সকলের মিলে আবার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম বাড়ি আসবার জন্য। বাৎসরিক কাজ খুব ভালোভাবে কমপ্লিট হয়েছিল। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ আমরা বাড়ি আসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। তখন আকাশ বেশ পরিষ্কার ছিল। ফিরে আসবার পথে আর বৃষ্টি হয়নি। খুব ভালোভাবে আমরা বাড়ি পৌঁছে গিয়েছিলাম। এই ছিল আমাদের নিমন্তন্ন বাড়ি কাটানো কিছু মুহূর্ত।
সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আবারও নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব আগামীকাল।
Thank you 🙏