বিয়ের মরশুমে প্রথম বিয়ে বাড়ি ( বান্ধবীর বিয়ে)

in Incredible India9 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে ২৪শে নভেম্বর এর কিছু মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।

২৪শে নভেম্বর ছিল আমার এক বান্ধবীর বিয়ে। এটা ছিল আমার ডি.এল.এড কলেজের বান্ধবী। দুইবছরে বেশ ভালো বন্ধুত্ব তৈরী হয়েছে। তাই বিয়েতে নিমন্ত্রণ পাওয়া টা নিশ্চিত ছিল। তবে আমি একা নিমন্ত্রিত ছিলাম না। শুভায়নকেও নিমন্ত্রণ করেছিল। ওকে নিমন্ত্রণ না করলে আমার হয়তো যাওয়া হতো না, কারণ বান্ধবীটার বাড়ি আমার বাড়ির থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। তাই রাতে একা একা যাওয়াটা সম্ভব হতো না।

1000340691.jpg

বেশ কয়েক মাস ধরেই আমরা, মানে আমি আর সেই বান্ধবী দুজনে মিলে বিয়ের কেনাকাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতাম। আমাদের দুজনেরই পছন্দের বেশ মিল রয়েছে, তাই ও কিছু কিনলে আমার সাথে আলোচনা করতো , কিংবা আমি কিছু কিনলে ওকে দেখাতাম। দেখতে দেখতে ওর বিয়ের দিন চলে এল। বিয়ের আগের রিচুয়ালস গুলোতেও আমাকে present থাকতে বলেছিল, কিন্তু যেহেতু আমার বাড়ি থেকে অনেকটাই দূর, তাই আমি একেবারে বিয়ের দিন রাতেই গিয়েছিলাম। সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে রেডি হয়ে গিয়েছিলাম। অন্য বান্ধবীরা শাড়ি পরবে বলেছিল, তাই আমিও শাড়ি পরেছিলাম। তারপর শুভায়নও রেডি হয়ে চলে এসেছিল। যদিও প্রথমে যেতে চায়ছিল না, কারণ, ও তো ঐ দিকের বান্ধবীদের কাউকেই চেনে না। যাইহোক, আমি জোর করাতে রাজি হয়েছিল। তারপর আমরা ৩০-৩৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিলাম। যদিও প্রথমে Venue খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তবে কিছু দূর এগোতেই ওদের ছবি দেওয়া একটা বোর্ড দেখতে পেলাম। তখনই বুঝলাম, ওটাই ওদের বিয়ের প্যান্ডেল।

1000342384.jpg
এরপর ভিতরে প্রবেশ করতেই চক্ষু চড়কগাছ। এত লোকজনের ভিড় যে সামনে এগোনোই যাচ্ছে না। আসলে ব্যাপারটা হল, ভিতরে স্পেস খুব কম আর আমন্ত্রিতদের সংখ্যা অনেক বেশি। যার ফলে entrance এই এত্ত ভিড় হয়ে গেছে যে বান্ধবী পর্যন্ত পৌঁছতেই পারছিলাম না। আরও সমস্যার ব্যাপার হলো, ঢুকেই প্রথমে খাওয়া-দাওয়ার জায়গা। যার ফলে ঐখানটাই ভিড় আরও অনেক বেশি। যাইহোক, কোনো ক্রমে ঠেলেঠুলে ভিতরে ঢুকে বান্ধবীর সাথে দেখা করলাম। তারপর ওর জন্য যে গিফ্ট টা নিয়ে গিয়েছিলাম, সেটা দিলাম। সেখানেও ভালোই ভিড় ছিল। তাই কোনোরকম একটা ফটো তুলে নিলাম।

1000342382.jpg

এরপরে চলে গিয়েছিলাম কফি খেতে। এক কাপ কফি আর চিকেন পাকোড়া খেলাম। যদিও ছবি তোলার কথা মনে ছিল না। সেই সময়ের মধ্যেই আমার বাকি বান্ধবীরাও চলে এসেছিল। তাদের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করছিলাম। তারপর বেশ কিছু ছবিও তুলেছিলাম। এইভাবেই বেশ কিছুটা সময় কেটে গিয়েছিল। তারপর আমরা ঠিক করলাম, এবার খেতে বসতে হবে, নইলে বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে যাবে।

1000342391.jpg
তবে খেতে গিয়ে দেখি, সেখানে যুদ্ধ চলছে। বিয়ে বাড়ি খেতে যাওয়া মানেই যুদ্ধের সমান। একটাও টেবিল ফাঁকা নেই। তাদের যখন বলে রাখছি, "আপনারা উঠলে আমরা বসবো।" ওরা বলছে," already আমাদের বলে রেখেছে, আমরা উঠলে তারা বসবে।" যারা বলে রেখেছে, তাদের কে যখন বলছি,"আপনাদের হয়ে গেলে আপনাদের সিটে আমরা বসবো।" তখন তারাও বলছে, "আমাদেরকেও একজন বলে রেখেছে।" এইভাবে পরপর তিনটে ব্যাচের লোকজন সিট বুক করে রেখেছে। ভাবা যায়! শুভায়ন তো বলেই যাচ্ছিল, "এখানে খেতে হবে না, চল যাওয়ার পথে কোথাও খেয়ে নেবো।" তবে আমি ওর কথা শুনিনি। কারণ সব বন্ধুবান্ধবরা এক জায়গায় ছিলাম, সেখান থেকে যদি চলে আসি, সেটা নিয়ে পরে কথা হবে। যার বিয়ে হচ্ছিল, সেও জানলে রাগ করবে।

1000342380.jpg
এইভাবে প্রায় ১.৩০- ১.৪৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর সিট পেয়েছিলাম। আসলে ৭০০ জন আমন্ত্রিত হলে খাওয়ানোর জায়গাটা জায়গাটা যতটা বড়ো করার প্রয়োজন তার অর্ধেক জায়গা ছিল। যার ফলে লোকজনের ভিড় বেড়েই চলেছিল। যাইহোক, অবশেষে খাওয়া দাওয়া সেরে আমরা বাড়ি ফিরেছিলাম।

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।