বান্ধবীর জন্মদিন
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে চলেছি আপনাদের সাথে নতুন একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
প্রাইভেট টিউটর হওয়ার সুবিধার্থে সারা বছরই কম-বেশি জন্মদিনের নিমন্ত্রণ পাই। একের পর এক স্টুডেন্ট দের জন্মদিন আসতেই থাকে। সেই সাথে রয়েছে বন্ধুবান্ধবদেরও জন্মদিন। তাই সারা বছর জুড়ে নিমন্ত্রণ টা আমি একটু বেশিই পাই। গতকালকেও ছিল আমার এক বান্ধবীর জন্মদিন। তাই তার আগেরদিনই ফোন করে নিমন্ত্রণ করেছিল। এটা আমার ছোটো বেলার বান্ধবী। তাই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতেই হতো। যদিও এর কিছু বছর আগেও ওর জন্মদিন বড়ো করে পালন করা হয়েছিল, তবে সেই বার আমি যেতে পারিনি, আমার পরীক্ষা চলছিল সেই সময়। এই প্রসঙ্গেই বলে রাখি, ছোটোবেলা থেকেই কিন্তু দেখেছি, ওদের পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের কোনো একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা আছে। মানে কোনো এক সময় হয়ত কোনো বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। তাই দুজনের মায়েদের মধ্যে কোনো কথা নেই। তবে সেটা কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বে কোনো প্রভাব ফেলেনি। ছোটো থেকেই একই স্কুলে পড়েছি ও প্রাইভেট টিউটর এর কাছেও পড়েছি। তাই আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। আর এই বিষয়ে কোনো মা- ই আপত্তি করেনি।
যদি ওদের বাড়িতে আগে কখনো যাওয়া হয়নি। তবে ও আমাদের বাড়িতে এসেছে। ওর জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই প্রথমবার ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমার মাও এই বিষয়ে কোনো আপত্তি করেনি। সামনে আমার বিয়েতে ওদের পুরো পরিবারকেই নিমন্ত্রণ করবো, তাতে যদি সকলের সম্পর্কটা আবার ভালো হয়ে যায়। তাছাড়া ২৫,২৬ বছর আগে কি হয়েছে, সেটা নিয়ে এখনো রাগ করে থাকার তো কোনো মানে হয় না, তাই মা নিজেই নিমন্ত্রণ করবে বলেছে। যাইহোক, অনেক বাড়তি কথা বলে ফেললাম।
আমাদের ছোটোবেলার বান্ধবীদের যে গ্রূপ আছে, সেই গ্রুপের প্রত্যেকেরই নিমন্ত্রণ ছিল। সেই মতো, গতকাল রাত ৮ টার দিকে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলাম। জন্মদিনে বান্ধবী কে দেওয়ার জন্য একটা ব্যাগ কিনেছিলাম। যেহেতু ওদের বাড়ি আমি চিনতাম না ( যদিও কোন গলিতে বাড়ি, সেটা আমি জানতাম) তাই ওদের বাড়ির কাছে আরো একটি বান্ধবীর বাড়ি আছে সেখানে গিয়েছিলাম।তারপর আরও একটা বান্ধবী আমাদের সাথে join করেছিল। তারপর ৮.৩০ এর দিকে আমরা আমাদের destination এ পৌঁছে ছিলাম।
সেখানে খুব সুন্দর ভাবে ঘরোয়া একটা আয়োজন করা হয়েছিল। আমাদের একটা বান্ধবী আসতে পারেনি কারণ, ওর ছেলের খুব শরীর খারাপ ছিল। যাইহোক, আমরা ঘরে বসে গল্প করছিলাম। আমাদের সকলের বরদেরও নিমন্ত্রণ ছিল। তবে সকলের বরেরাই কোনো না কোনো কাজে আটকে গিয়েছিল, তাই কেউই যেতে পারেনি। শুধু একটা বান্ধবীর বরই গিয়েছিল। আমরা বান্ধবীরা গল্প করছিলাম আর ঐ দাদা একা একা বোর হচ্ছিল। আমরা আমাদের আরও একটা বান্ধবীর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। সে একটা জায়গায় job করে। সেখানকার কাজ শেষ করে ৯টার দিকে এসেছিল।
ও আসার পরে কেক কাটার আয়োজন করা হয়। দুটো কেক আনা হয়েছিল। ওদের বাড়িতে অনেক বাচ্চা ছিল। কাকা-জ্যাঠারা যেহেতু একই সঙ্গে থাকে, তাই দাদা- দিদিদের ছেলে মেয়েরা খুব হৈ-হট্টগোল করছিল। তারপর কেক কাটা হলো। সবাইকে কেক দেওয়া হলো। এরই মধ্যে আমার হঠাৎ করে আমার ভাইপোর কথা মনে পড়ল। আমি যখন বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলাম তখন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, "পিন কোথায় যাচ্ছো?" আমি বলেছিলাম আমার একটা বান্ধবীর জন্মদিন আছে তাই যাচ্ছি। এটা শুনেই ও আমাকে বলল, "আমার জন্য কেক আনবা ঠিক আছে?" আমি পড়লাম মহা ফ্যাসাদে। কারোর বাড়ি গিয়ে এইভাবে কেক চেয়ে আনা যায়! তবে বান্ধবী যেহেতু অনেক ছোটবেলার তাই, লজ্জা না পেয়ে বলেই ফেলেছিলাম, "সবাই কে দেওয়ার পর কেক বাঁচলে আমার ভাইপোর জন্য এক পিস কেক দিস।" যেহেতু দুটো কেক ছিল তাই সবাইকে দেওয়ার পর অনেকটাই ছিল। সেখান থেকে আমার ভাইপোর জন্য আমাকে একটা বক্সে দিয়েছিল।
এরপর আমরা খাওয়া-দাওয়া করতে বসে পড়েছিলাম। খাবারে ছিল, ফ্রাইড রাইস, চিকেন, স্যালাড, নলেন গুড়ের পায়েস আর নলেন গুড়ের গরম গরম মিষ্টি। বেশ দারুণ খাওয়া-দাওয়া হয়েছিল। তারপর আমরা সবাইকে টাটা জানিয়ে যে যার বাড়ি চলে গিয়েছিলাম।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।





