নিজের হাতে বানানো বিয়ের জিনিস (খই দানের কুলো)
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভাল আছেন। আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আবারো নতুন কোনো গল্প শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।
দুইদিন আগের একটি পোস্টে আমি আপনাদের সাথে বাঙালি বিয়েতে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস, যেমন-- খই দানের কুলো, পান পাতা, সিদুর দানের কুনকে ও গাছ কৌটো কেবলমাত্র রং করা পর্যন্ত শেয়ার করেছিলাম। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো কিভাবে আমি আমার বিয়ের খই দানের কুলটা ডিজাইন করেছিলাম। যদিও এখনো আমার খুব সামান্য একটা কাজ বাকি রয়ে গেছে। তবুও আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। তাই আজকে আমি আপনাদের সাথে কুলোর ডিজাইন টা শেয়ার করব।
প্রথমেই বলে রাখি আমি কিন্তু কলকা করা, আলপনা দেওয়া এক কথায় আঁকি-বুকি কাজে খুবই অপটু। ছোটবেলায় মা একবার ড্রয়িং ক্লাসে ভর্তি করেছিল ঠিকই। তবে খুব বেশিদিন যাওয়া হয়নি। তাই রং পেন্সিল খাতার উপর ঘষার খানিক অভ্যাস তৈরি হলেও তুলি নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার কোনদিনই ছিল না। তাই এরকম একটা কাজ আদৌ আমি করতে পারব কিনা এই নিয়ে মনের মধ্যে ভারী সংশয় ছিল। তবুও কিছুটা খরচ বাঁচানোর জন্য এক বুক সাহস নিয়ে কাজে নেমে পড়েছিলাম। ভেবেছিলাম খুব সুন্দর না হোক তবে কোনোরকম কিছু একটা অবশ্যই পারবো। এটা ভেবেই আজকের কাজে বসে পড়া।
যারা রং তুলি নিয়ে কাজ করেছেন তাদের কাছে এটা খুব সহজ হলেও, আমার মত অনভিজ্ঞ, অপটু মানুষের ক্ষেত্রে কিন্তু এটা ভীষণই কঠিন কাজ। তাই দেখে যতটা সহজ বলে মনে হয় কাজে করতে গেলে তখন সেটা অনেক বেশি কঠিন মনে হয়। আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে সেটাই। মোবাইলে ভিডিও দেখে কিছুটা আইডিয়া তো করেছিলামই। তবে বিষয়টা যে ততটাও সহজ হবে না সেটা আগেই বুঝেছিলাম। কাজে করতে গিয়েও সেটাই দেখলাম। তাই খুব ধীরেসুস্থে কাজ করছিলাম।

কলকা গুলো করতে গিয়ে আমাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ওই যে আগেই বললাম যারা এই সমস্ত কাজ করেন কিংবা আঁকি-বুকি করতে ভালোবাসেন তাদের কাছে এটা অনেক বেশি সহজ। তবে আমি যেহেতু এই ফিল্ডের মানুষ নই তাই আস্তে আস্তে অনেকটা সময় নিয়ে কাজ করছিলাম। তবে একটু একটু করে যখন কাজ এগোচ্ছিল, আর অল্প অল্প করে স্ট্রাকচার টা তৈরি হচ্ছিল তখন কিন্তু মনের মধ্যে একটা ভালোলাগাও কাজ করছিল।
প্রত্যেক ধাপেই মনে হচ্ছিল, শেষ করতে পারবো তো! তবুও হাল ছাড়িনি। দুপুর টাইমটা যেহেতু আজকে আমার ফাঁকা ছিল তাই সারা দুপুর বসে আমি এগুলো করছিলাম। গুলোর একটা সাইড শেষ করার পর মনে খুব আনন্দ হচ্ছিল এটা ভেবে যে, আমি করতে পারছি। জানি খুব সুন্দর কিংবা প্রফেশনাল আর্টিস্টদের মত নিখুঁত হয়নি। তবে প্রথম প্রচেষ্টায় যেটুকু হয়েছে সেটাকে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট। কারণ এতটা সুন্দর হবে, সেটা আমি আশা করিনি।
এইটুকু করতেই আমার অনেকটা সময় লেগেছিল। যেহেতু কোন কাজ ছিল না তাই আমি সময় নিয়েই করছিলাম। তারপর দুপুর দুটোর সময় আমি পড়াতে চলে গিয়েছিলাম। পরপর দুটো পড়ানো ছিল। আমি সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ বাড়ি ফিরে এসেছিলাম। বাড়ি এসে আবারো এগুলো নিয়ে বসে পড়েছিলাম। ভাবলাম আজকে এই পুরোটা শেষ করে ফেলব।
এরপর একই রকম ভাবে নিচের দিকে কিছুটা ডিজাইন করলাম। প্রথম দিকে একটা ডিজাইন কে ফলো করে করার চেষ্টা করেছিলাম। তবে দেখলাম সে ডিজাইনটা যিনি করেছেন তিনি একজন প্রফেশনাল আর্টিস্ট। আর আমার ডিজাইন টা ওনার মতো একেবারেই হচ্ছে না। তাই ভাবলাম ওনাকে ফলো করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সেই কারণে, আমি যেরকম ভাবে পাচ্ছিলাম সেরকম ভাবেই করার চেষ্টা করছিলাম। সেটাই করতে করতে পুরোগুলোটা ভরাট করে ফেলেছিলাম। সত্যি কথা বলতে গেলে আমার কিন্তু বেশ ভালোই লাগছিল।

এরপর মাঝখানটায় কিছু একটা আঁকার পালা। মাঝখানে কি করব সেটা আমি আগেই ভেবে রেখেছিলাম। তাই এই নিয়ে আমাকে বিশেষ মাথাব্যথা করতে হয়নি। মাঝখানটা আমি সিম্পল এর মধ্যে রাখতে চেয়েছিলাম। তাই মাঝখানে শুধু একটা স্বস্তিক চিহ্ন একটু অন্যরকম ভাবে একে ছিলাম।

এবার আপনারাই বলুন, আমার প্রথম প্রচেষ্টা আপনাদের কেমন লাগলো? আজ এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।





Thank you so much