বিয়ের শাড়ি কিনতে যাওয়া
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আরো একটি নতুন গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
হাতেগোনা আর দুই মাসের অপেক্ষা। তারপর বিয়ের সানাই বাজতে চলেছে। তাই সেই একটি মাত্র দিনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই চলছে কেনাকাটির ধুম। তবে পরীক্ষা ও আরো নানা কাজের জন্য বিয়ের শাড়িটাই কিনে ওঠা হয়নি। তাই মন থেকে খুব অস্থির অস্থির লাগছিল কারণ শাড়ি কেনে না হলে ব্লাউজটা ও বানানো হবে না। আর এখন টেইলার্সের কাছে কেমন ভিড় হয় আপনারা তো জানেনই। একমাস আগে না দিলে সঠিক সময়ে ব্লাউজ পাওয়া যায় না। তাই করেই নিয়েছিলাম যেভাবেই হোক এই মাসের মধ্যেই পছন্দ মতো একটা শাড়ি কিনে নেব। আজকে আপনাদের সাথে আমার বিয়ের শাড়ি কিনতে যাওয়ার গল্পই শেয়ার করব।

আগের সপ্তাহে হঠাৎ দিয়ে একদিন বিকেলে আমার পড়ানো ছিল না তাই বৌদিকে বলেছিলাম সেই দিন বিকেল বেলায় কিংবা সন্ধ্যেবেলায় আমরা শাড়ি কিনতে যাব। বৌদিও রাজি হয়ে গিয়েছিল। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, আমার বিয়ের শাড়িটা কিন্তু আমার বৌদিই আমাকে কিনে দিচ্ছে। আমার বিয়েতে ওর পক্ষ থেকে ওটা আমাকে দেওয়া গিফ্ট। এমনিতে আমার বৌদি কিন্তু হাউস ওয়াইফ। সারাদিন বাচ্চাকে সামলানো এবং পরিপাটি করে ঘরের কাজ করার পর আর অতিরিক্ত সময় থাকে না অন্য কোনো কাজ করার। কিন্তু বৌদি হয়তো মনে হয়েছে যে আমার বিয়েতে সে কিছু উপহার আমাকে দেবে, তাই সব কাজের মাঝে দাদার পুতুলের কাজ করে অল্প অল্প করে টাকা জমিয়েছে। তারপর আমাকে ৬৫০০ টাকা দিয়েছে। এটা আমার কাছে অনেক দামি একটা উপহার হতে চলেছে। আর এত কষ্ট করে কাজ করে কতগুলো মাস ধরে এই টাকাগুলো জমানোর পর আমাকে যখন দিচ্ছিল, আবার নিতে একটু কষ্ট হচ্ছিল কিন্তু ও অনেক মন করে টাকাটা জমিয়েছে আবার বিয়ে শাড়িটা কিনে দেবে বলে, তাই আমি বলেছিলাম আমাকে টাকা দিতে হবে না, আমার সঙ্গে গিয়ে শাড়িটা কিনে দিতে।
এই কথা মতো সেদিন সন্ধ্যেবেলায় বৌদি, আমি, ভাইপো আর শুভায়ন চলে গিয়েছিলাম 'আগমনি বাসন্তী ' তে। এই শপটা আমাদের কৃষ্ণনগর শহরে নতুন ওপেন হয়েছে। পুজোর সময়ই এটা ওপেন হয়েছিল। আসলে এটা কাঁচরাপাড়ার একটি শপ। তারই একটা আউটলেট এখানে খুললো। অনেকের কাছে শুনেছিলাম এখানে খুব ভালো কালেকশন রয়েছে। তাই ভেবেছিলাম সেখান থেকেই কিনব। তাই আমরা যার জন মিলে চলে গিয়েছিলাম সেখানে। তারপর বেনারসি সেকশনে চলে গিয়েছিলাম। সেখানে যিনি স্টাফ ছিলেন তিনি প্রাইজ রেঞ্জ টা শুনে নিয়ে আমাকে একের পর এক বেনারসি দেখাচ্ছিলেন।

তবে সত্যি কথা বলতে গেলে, আমি যে ধরনের সিম্পল বেনারসি চাইছিলাম সেরকমটা পাচ্ছিলাম না। মানে যে জিনিসগুলো আমি চাইছিলাম এই সমস্ত কিছু একটা শাড়ির মধ্যে পাচ্ছিলাম না। মানে আমি চাইছিলাম বর্ডার টা খুব বড় হবে না ছোটোর মধ্যে হবে, আর শাড়ির বুটি গুলো ছোটো ছোটো হবে, আর সেই সাথে ব্লাউজ পিস টা একদম প্লেন হবে। কিন্তু বেশিরভাগ শাড়ির ব্লাউজটাতেই হিজিবিজি ডিজাইন করা ছিল। যে শাড়িগুলো পছন্দ হচ্ছিল তার ব্লাউজ গুলোতেই এরকম ছিল। আবার যে শাড়িগুলোর ব্লাউজ প্লেইন ছিল সেগুলোর আবার বর্ডার গুলো মোটা ছিল। এইভাবেই বেশ অনেকগুলো শাড়ি আমাদের দেখালো। তারপর অনেক দেখাদেখির পর একটা শাড়ি মোটামুটি পছন্দ হলো। তবে মন থেকে বললে, আমি যেরকম চেয়েছিলাম সে রকম টা ছিল না। তাও সকলের যেটা পছন্দ হলো, সেটা ওই স্টাফটি আমার গায়ে ফেলে দেখাচ্ছিলেন।

অবশেষে ওই শাড়িটাই কিনে বাড়ি ফিরলাম। তবে এরপরে একটা টুইস্ট আছে। সেটা না হয় পরবর্তী পোস্টে শেয়ার করব। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
