বিয়ের শাড়ি কিনে আনার পরেও ফেরত দিতে হলো

in Incredible India23 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে ভালো আছেন। আমার গত পোস্টে আমি আপনাদের জানিয়েছিলাম যে আমি, বৌদিকে সাথে নিয়ে বিয়ের শাড়ি কিনতে গিয়েছিলাম। তবে মন মতো শাড়ি বাজেটের মধ্যে না পেলেও সকলের পছন্দে একটা শাড়ি কিনে এনেছিলাম। তবে সেই শাড়িটা আবার কেন রিটার্ন করলাম সেই গল্পটাই আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

আসলে শাড়িটা কেনার পর থেকেই মন থেকে আমি খুশি হতে পারছিলাম না। শাড়ির দামটাও আমার কাছে অনেকটাই বেশি ছিল। এর আগে আমি এত টাকা দামের শাড়ি পরা তো দূরের কথা কেনার কথা কখনো ভাবিওনি। তাই এত টাকা দিয়ে শাড়ি কিনে যদি মন থেকে খুশিই না হতে পারি তাহলে শাড়ি কেনার সার্থকতা কোথায়! আসলে আমি একটু সিম্পল ডিজাইন এর মধ্যে নিতে চাইছিলাম। আর এই মিনাকারি কাজটাও চাইছিলাম না। যাইহোক শাড়ি কিনে একটা মিক্সড ফিলিংস নিয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলাম।

1000341428.jpg

বাড়ি গিয়েই প্রথম কাজ ছিল মাকে শাড়ির ছবি তুলে পাঠানো। এইবারই ঘটলো আসল ঘটনা। বাড়িতে এসে মাকে শাড়িটার ছবি তুলে পাঠানোর সময়, মনটা একেবারেই ভেঙে গেল। কারণ দোকানের ওই জাকজমক আলোতে শাড়িটা দেখতে ভালো লাগলেও, বাড়িতে আনার পর, বাড়ির আলোতে শাড়িটা আমার একদম ভালো লাগছিল না। ছবি তুলে মাকে পাঠানোর পরে, মাও একই কথা বলল। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে শাড়িটা অপছন্দ হতে শুরু করলো। তারপর আমার বেশ কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবকেও শাড়িটা ছবি পাঠালাম যাদের পছন্দ আমার পছন্দের সাথে অনেকটা মেলে, তাদেরও মন্তব্য একই ছিল। সবারই মেইন সমস্যা ছিল শাড়ির পার টা নিয়ে। তারপর শেষবারের জন্য আমার বিয়েতে যে মেকআপ আর্টিস্ট রয়েছে, তাকে শাড়ির ছবিটা পাঠিয়েছিলাম।সেও একই কথা বলল যে, "এখন এত মোটা শাড়ি পর কেউ কেনে না , যদি তোমারও সেটাই মনে হয় তাহলে তুমি এক্সচেঞ্জ করতে পারো আর একটু সরু পার দেখে কিনো।" আমারও তেমনটাই পছন্দ। তাই শেষমেশ ঠিক করলাম, শাড়িটা ফেরত দিয়ে আসবো।

1000340170.jpg

তাই সেদিনই আবার ছুটলাম, চেঞ্জ করার জন্য। মনের মধ্যে কি যে ঝড় চলছিল কি বলবো। আদেও মন মতো শাড়ি পাবো কি না, এক্সচেঞ্জ করে দেবে কি না.... আরো নানারকমের চিন্তাভাবনা মাথায় চলছিল। শেষমেশ শুভায়নকে সাথে নিয়ে চললাম সেখানে। সেখানে গিয়ে আরো চার-পাঁচটা বেনারসি দেখলাম। তবে মন মতো না পাওয়ায় ঠিক করেছিলেন সেখান থেকে আর বেনারসি কিনবো না। তবে টাকা তো রিটার্ন করবে না সেটা জানতাম। তাই ভাবলাম ওই টাকা দিয়েই অন্য কিছু শপিং করা যাক, যেটা কাজে লাগবে।

তাই ওই টাকা থেকেই শুভায়ন মামনির জন্য মানে ওর মায়ের জন্য একটা শাড়ি কিনেছিল, যেটা উনি বিয়েতে পড়তে পারবে। শাড়িটা পছন্দ করার পর ওনাকে ভিডিও কলে দেখানো হয়েছিল। ওনারও খুব পছন্দ হয়েছিল। এরপর আমি একটা শাড়ি নিয়েছিলাম। ওই শাড়িটা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। এরপর ওদের এক রিলেটিভের একটা অনুষ্ঠান ছিল। তাদের দেওয়ার জন্য গিফট purpose এ একটা জ্যাকেট কেনা হয়েছিল। আর ঐ টাকার মধ্যে দুটো চাদর হয়ে গিয়েছিল। এভাবেই ওই শাড়ির টাকাটা আমরা খরচ করেছিলাম।

1000341422.jpg

টাকাটা সঠিকভাবে কাজে লেগেছিল তাই মনটা অনেকটা হালকা ছিল। বলা বাহুল্য, শাড়ির টাকাটা কিন্তু শুভায়ন আমাকে ব্যাক করেছিল। মানে যে টাকাটা দিয়ে শাড়ি কিনেছিলাম ওই টাকাটা সুরক্ষিতভাবে রাখা থাকলেও পরে অন্য কোনো জায়গা থেকে শাড়ি কিনব বলে। আর এই শপিং গুলো ও ওদের বাড়ির তরফ থেকে করেছিল। সেই মুহূর্তে শাড়ি টাকাটা কাটিয়ে এই জিনিসগুলো কেনা হয়েছিল বটে। তবে বৌদির দেওয়া টাকাটা এখনো সুরক্ষিত আছে। ওটা দিয়ে নিশ্চয়ই আমি আমার মনের মতো একটা শাড়ি কিনব।আর আপনাদের সাথেও অবশ্যই শেয়ার করব।

এবার আপনারাই বলুন, মনের মধ্যে একটা অস্বস্তি ভাব না রেখে আমি যে শাড়িটা ফেরত দিয়ে এসেছিলাম, এটা কি ঠিক করিনি?

আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
Loading...

center>1000068411.png

Curated by : @wirngo