"শক্তিমান ক্লাবের প্যান্ডেল ও আমাদের গ্রামের প্রতিমা দর্শন দিয়ে শেষ হলো এই বছরের পুজো"
![]() |
|---|
Hello,
Everyone,
আশাকরছি প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজকে আরও একবার আমাদের কালীপুজোর প্যান্ডেল দর্শনের অভিজ্ঞতার আরেকটি পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য হাজির হলাম।
গত পর্বটি শেষ করেছিলাম বয়েজ ক্লাবের প্যান্ডেলের প্রতিমা দর্শনের মাধ্যমে। সেই পর্বে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম, যেহেতু রিমির ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছিলো, তাই আমরা একটা ভ্যান ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম।
ভাগ্যিস আমরা কালীপুজোর দিন ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলাম। অন্যান্য দিন হলে ভ্যান চলা বন্ধ হয়ে যেতো এবং আমাদেরকে হেঁটে ফিরতে হতো অনেক খানি পথ। কারণ পূজো যেখান থেকে শুরু হয় তারও অনেক আগে থেকে যে কোনো যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
![]() |
|---|
পুজোর দিন খুব একটা বেশি ভিড় ছিলো না বলেই ভ্যান চলাচল করছিলো। তাই আমরা দেরি না করে ভ্যান ঠিক করে রওনা করেছিলাম এবং ভ্যানওয়ালা কে বলে নিয়েছিলাম, শক্তিমান ক্লাবের সামনে আমাদেরকে দশ মিনিট টাইম দিতে হবে। যাতে ওই প্যান্ডেলটিও আমরা ঘুরে দেখতে পারি।
যেহেতু রিমির ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছিলো, তাই রিমির হাজবেন্ড ওকে নিয়ে ভ্যানেই বসেছিলেন। আমরা চারজন অর্থাৎ আমি, রাখি, রিমি ও রিমির মেয়ে চলে গিয়েছিলাম শক্তিমান ক্লাবের প্রতিমা দর্শন করতে।
![]() |
|---|
দূর থেকে প্যান্ডেলটা দেখতে ভীষণ আকর্ষণীয় লাগছিলো। মনে হচ্ছিলো যেন সম্পূর্ণ প্যান্ডেলটা কাঁচ দিয়ে তৈরি করেছে। তবে কাছে গিয়ে দেখলাম সবটাই লাইটিং এর জন্য। আসলে কাঁচ দিয়ে নয় মূলত বিভিন্ন ধরনের ঘন্টা দিয়ে তৈরি হয়েছে এই প্যান্ডেলটা।
![]() |
|---|
![]() |
|---|
সম্পূর্ণ প্যান্ডেলটাকে লাল কাপড় দিয়ে ঘেরা হয়েছে এবং ভেতরের দিকে ছোট্ট ছোট্ট কাঠের টুকরোতে সাদা রংয়ের পেপার মুড়িয়ে, তার মাঝে মাঝে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সাইজের ঘন্টা। তার সাথে ঝুলছে একটা লাল কাপড়ের মধ্যে বেশ কিছু পাথর।
আসলে এই প্যান্ডেলের থিম ছিল মায়ের কাছে মানত করার প্রক্রিয়া। এরকম অনেক মন্দির আছে যেখানে আমরা আমাদের মনস্কামনা জানিয়ে লাল কাপড়ের মধ্যে পাথর বেঁধে আসি, কিংবা লাল রঙের ফিতে কোনো একটা গাছে বেঁধে রাখা হয়।
![]() |
|---|
মানত পূরণ হলে সেখানে গিয়ে আবার সেই ফিতে বা কাপড়ে বাধা পাথরটি খুলে দিয়ে আসতে হয়। সেই রকমই একটা ভাবনা থেকে এই প্যান্ডেলের থিম নির্বাচন করা হয়েছে।
আর মাঝখানে যেহেতু অসংখ্য বাল্ব লাগানো হয়েছে, সেই সবগুলো জ্বালিয়ে দেওয়াতে সম্পূর্ণ প্যান্ডেলটার ঝলকানি বেশ আকর্ষণীয় লাগছে। মানুষের ভিড়ও হয়েছিল এই প্যান্ডেলটাতে সবথেকে বেশি। বেশ কিছুটা ভিতরের দিকেই প্রতিমা বসানো ছিলো।
![]() |
|---|
![]() |
|---|
প্যান্ডেলে ঢোকার মুখেই ছিলো একটি শিবলিঙ্গ ও গো-মাতার মূর্তি। সেখানে দাঁড়িয়ে রিমির মেয়ে একটা ছবি তোলার আবদার করাতে, ওকে একটা ছবি তুলে দিলাম। এরপর আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম প্রতিমা দর্শনের উদ্দেশ্যে। ভিতরে গিয়ে আমি সম্পূর্ণ প্যান্ডেলটার আশেপাশের ছবি গুলো তোলার চেষ্টা করেছি।
সবশেষে মায়ের কাছে গিয়ে প্রণাম সারলাম। এখানে মায়ের মূর্তিও যথেষ্ট আকর্ষণীয় ছিলো। সঙ্গে আরো বেশ কিছু মূর্তি তৈরি করা হয়েছে, তবে সবগুলো মূর্তি সম্পর্কে আমি আপনাদেরকে জানাতে পারলাম না। কারণ আমিও নিজে সম্পূর্ণটা বুঝে উঠতে পারিনি।
![]() |
|---|
মানুষের ভিড়ও ছিলো অনেক, তাই শুধুমাত্র ছবি তুলে আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম। যেহেতু রিমির হাজবেন্ড একা ভ্যানে অপেক্ষা করছিলো, তাই খুব বেশি সময় আমরা সেখানে নষ্ট করিনি।
ভ্যানে করে বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হওয়ার আগে রাখিকে বললাম, একবার আমাদের পাড়ার স্কুল মাঠে যেতে। যেখানে দুর্গাপুজো হয়েছিলো এবং কালীপুজোর আয়োজন চলছিলো। পাড়ার প্রতি আমাদের সকলেরই একটা দুর্বলতা থাকে, কারণ এই পুজো দেখেই ছোট থেকে বড় হয়েছি।
![]() |
|---|
রিমি এবং ওর হাজব্যান্ড আর আমাদের সাথে যায়নি তাই রাখিকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম আমাদের পাড়ার প্রতিমা দর্শন করতে। জানিনা কেন পাড়ার প্রতিমা বলে কিনা, তবে এই মূর্তিটি ছিলো মনের ভীষণ কাছাকাছি। একেবারে ঠিক মায়ের মতন মা যেন এক গাল হেসে তাকিয়ে আছে তার সন্তানদের দিকে।
![]() |
|---|
পাড়ার বেশ কিছু কাকিমারা পূজোর প্রস্তুতি করছিলেন সেখানে বসে। দূর থেকে তার আয়োজনের একটা ছবি তুললাম। এরপর ফিরে এলাম রাখির বাড়িতে। সেখানেই রাতটা কাটিয়ে পরদিন সকালে বাড়ি ফিরে এসেছিলাম।
এইভাবে কেটেছিলো এইবার আমার কালীপুজোর দিনটা। যেখানে বেশ কিছু সুন্দর প্যান্ডেল, প্রতিমা দর্শন করার পাশাপাশি, বহুদিন বাদে তিনজন মিলে একটা সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম। হয়তো অনেকগুলো ভাগে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, তবে আশাকরছি আপনারা সকলেই এই প্যান্ডেলগুলো উপভোগ করেছেন, আমার লেখা ও ছবির মাধ্যমে। ভালো থাকবেন সকলে। শুভ রাত্রি।










