মুদ্রাস্ফীতি হলো টাকার দাম কমে যাওয়ার অদৃশ্য খেলা।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আজকে আমাদের অফিসে একজন নতুন স্টাফ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার সেলারি উনিশ হাজার টাকা। সে যার সাথে কাজ করবে, ঔ লোকটি ২০১৫ সালে জয়েন করে ১০ হাজার টাকা সেলারিতে। এখন তার সেলারি পয়ত্রিশ প্লাস। তো সে বলতেছে দিন কত পালটে গেছে। জিনিসপত্রে দামও বেড়েছে সেলারিও বেড়েছে। আর এর মূল কারন হলো মুদ্রাস্ফীতি। তাই আজকে মুদ্রাস্ফীতি নিয়েই একটি ব্লগ লেখার চেষ্টা করলাম।
মুদ্রাস্ফীতি মানে হলো, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টাকার মূল্য কমে যাওয়া। আগে ১০০ টাকায় যেই জিনিস কেনা যেত, এখন সেই একই জিনিস কিনতে ১২০ বা ১৫০ টাকা লাগে, এটাই মুদ্রাস্ফীতি। অর্থাৎ, টাকার মান কমে গেছে, আর জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।
একটা সহজ উদাহরণ দিই, ধরা যাক, আমি প্রতি মাসে বাজার করতে ৭০০০ টাকা রাখি। আগে ওই টাকায় চাল, তেল, ডাল, সব্জি কেনা যেত যেত। এখন একই জিনিস কিনতে ১০,০০০ টাকা লাগে। এর মানে হলো, বাজারে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে।
এটা আমাদের জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলে...? দৈনন্দিন জীবনের খরচ বেড়ে যায়। প্রথম প্রভাব পড়ে আমাদের পকেটে। বাজারে যাই, দেখি চাল, তেল, ডিম, সবকিছুর দাম বেড়েছে। আয় যতটা বাড়ে, খরচ তার চেয়েও বেশি বেড়ে যায়। ফলে মাস শেষে টাকার টান পড়ে। সঞ্চয় আর আগের মতো থাকে না। অনেকে ব্যাংকে টাকা রাখে ভবিষ্যতের জন্য। কিন্তু মুদ্রাস্ফীতি হলে সেই টাকার আসল মূল্য কমে যায়।উদাহরণস্বরূপ, আমি আজ ১,০০,০০০ টাকা জমিয়ে, সে টাকা যদি ব্যাংকে রেখে দেয়, পাঁচ বছর পর সেই টাকায় আজকের মতো জিনিস কিনতে পারবো না।
মুদ্রাস্ফীতির কারনে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। দাম বেড়ে গেলে পরিবারের খরচ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। ঘরে সংসারের হিসাব মেলাতে গিয়ে মানুষ মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেক সময় সম্পর্কেও টান পড়ে, কারণ টাকার টান মানে মানসিক টানও।
শিক্ষা ও চিকিৎসায় প্রভাব পড়ে। যখন মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে, তখন স্কুলের ফি, বই, ওষুধ, চিকিৎসার খরচ সবই বেড়ে যায়। ফলে মধ্যবিত্ত পরিবারের ওপর চাপ আরও বাড়ে। দরিদ্র মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধনী মানুষ অনেক সময় এই বাড়তি খরচ সামলে নিতে পারে, কিন্তু গরিব মানুষের জন্য এটি ভয়ংকর। তাদের আয় সামান্য, খরচ বেড়ে গেলে তারা খাবার বা চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হয়।
এখন প্রশ্ন হলো কেন এমন হয়..? মুদ্রাস্ফীতি হওয়ার পেছনে কয়েকটি সাধারণ কারণ আছে যথা-
বাজারে চাহিদা বেড়ে গেলে, সরবরাহ না বাড়লে, দাম বাড়ে। পণ্য উৎপাদনের খরচ বেড়ে গেলে, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেয়। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে হলে ডলারের দাম বেড়ে গেলে, আমদানি পণ্যের দামও বেড়ে যায়। কখনো কখনো সরকার বেশি টাকা ছাপে, তখন বাজারে টাকার সরবরাহ বেড়ে যায়, ফলে জিনিসের দামও বেড়ে যায়।
তাহলে মুদ্রস্ফীতি কীভাবে কমানো যায়? মুদ্রাস্ফীতি একেবারে থামানো সম্ভব নয়, কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, যেমন-
সরকার যদি বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে পারে, তাহলে দাম কিছুটা কমে। অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে এবং সঠিক পরিকল্পনায় টাকা খরচ করলে ব্যক্তিগতভাবে এর চাপ কমানো যায়। কৃষি, শিল্প ও স্থানীয় উৎপাদন বাড়ালে বিদেশের ওপর নির্ভরতা কমবে, ফলে দামও স্থিতিশীল থাকবে।
মুদ্রাস্ফীতি আসলে এমন একটি নীরব চোর যা আমাদের পকেট থেকে টাকা নিয়ে যায়, অথচ আমরা বুঝতেও পারি না। এটি অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়ম হলেও, যখন এর হার বেড়ে যায়, তখন সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তাই আমাদের সবাইকেই সচেতন হতে হবে, অর্থ অপচয় না করে, পরিকল্পিতভাবে খরচ করতে হবে। আর সরকারকেও সঠিক নীতিমালা ও বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনগণের স্বস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















