আজ যা আছে কাল তা নাও থাকতে পারে!
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো থাকার চেষ্টা করছেন। তবে আমাদের অনেকেই মানসিকভাবে ভালো নেই। আপনারা হয়তো জানেন যে বাংলাদেশে ভূমিকম্প হয়েছিল। গতকাল এবং তার আগের দিন! আগের দিনের ভূমিকম্পটা একটু মারাত্মক ছিল বেশিই! ৫.৭ রিকটার স্কেল রেকর্ড করা হয়েছে। স্থায়ী ছিল ২৬ সেকেন্ড এর মতো! তার মানে বুঝতে পারছেন! ভূমিকম্পটা এমন আপনি আগাম সতর্কবার্তা পাবেন। অন্যান্য দূর্যোগ হলে যেমনটা পাওয়া যায় কিন্তু ভূমিকম্পের বেলায় সম্পূর্ণ উল্টা। কখন হবে কেউ বলতে পারবে না। এজন্য আমাদের পূর্বপ্রস্তুতির ও কোনো সুযোগ নেই! স্যোসাল মিডিয়াতে অনেকেই অনেক কথা বলছে। অনেকেই পরামর্শ দিচ্ছে ভূমিকম্পের সময় বিল্ডিং থেকে দৌড় না দিতে, টেবলের নিচে আশ্রয় নিতে অথবা সম্ভব হলে খোলা জায়গায় আশ্রয় নিতে।
কিন্তু আমাদের ঢাকা শহরে সে ব্যবস্থাটুকু কি আদৌ রয়েছে!! ঢাকা শহর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর। এখানে তিন কোটি এর উপরে মানুষের বসবাস। ব্যাঙের ছাতার মতো একটার পর একটা দালানকোঠা! শহরের বেশিরভাগ দালানকোঠা অনেক পুরানো! বিল্ডিংগুলার অবকাঠামো তেমন মজবুত হয়। বাংলাদেশে কোনো বিল্ডিং আমার মনে হয় না যে ভূমিকম্পের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়! এখন বলেন ভূমিকম্প হলে এ বিল্ডিংগুলোর কি হবে? এখন কথা হলো ভূমিকম্প হলে সবগুলো বিল্ডিং ধসে পরবে। বিল্ডিং থাকা মানুষগুলো বিল্ডিং এর নিচে চাপা পরবে। এ সত্যটা কেউ বলছে না। সবাই বলছে প্রতিরোধের কথা! যখন ভূমিকম্প হবে তখন টেবলের নিচে বা খাটের নিচে গিয়ে লুকাবেন। কিন্তু এখনকার টেবলগুলো কাচের হয় বেশি, আর খাটে তো কাঠের হয়! সেগুলো কতটুকুই বা নিরাপদ হবে।
আমরা হলাম আবেগী জাতি। আমাদের যখন মৃত্যু লেখা আছে তখনই হবে এটা ভেবেই আমরা বসে থাকি। কিছু করার থাকে না আমাদের। আসলেই আমাদের কিছু করার নেই। ঢাকা শহরের কোনো বিল্ডিং এ সঠিক পদ্ধতিতে বানানো হয় না। তার উপর ইট, বালু, সিমেন্ট দিয়ে বানানো! তার মানে এগুলো ভেঙে গেলেও বের হওয়ার কোনো অপশন থাকবে না! তো সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক এটাও একটা পরীক্ষা। পাপাচার অনেকে বেড়ে গেছে। যৌনতা, খুন, দুর্নীতি সবকিছু এখন সমাজে সহজ হয়ে গিয়েছে! মানুষের মাঝে এখন মনুষ্যত্ববোধ বলতে কিছু নেই! সৃষ্টিকর্তা থেকে অনেকেই দূরে চলে গিয়েছে। আল্লাহ তায়ালা দেখিয়ে দিলেন উপরে একজন আছেন। তারঁ আনুগত্য করা দরকার আমাদের। তবে এবারের ভূমিকম্পটার পরে অনেকেই ভয় পেয়েছিল। উপরে একজন যে আছে সেটা এখন স্মরণ করছে। এবারের ভূমিকম্পে মানুষ এতোটা ভয় এর আগে কখনো পায়নি।
তো এই প্রাকৃতিক দূর্যোগ আসলে আমাদের কি শিক্ষা দেয় আসলে? কোনো কিছুই আসলে স্থায়ী নয়। আপনি দশ তলা বিল্ডিং করেও গর্ব করতে পারেন। হাজার হাজার টাকা থাকলেও আপনি গর্ব করতে পারেন। কাউকে কষ্ট দিয়েও ভালো থাকতে পারবেন না! সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। আপনার মৃত্যু কখন, কিভাবে হবে বলা যায় না। এজন্য ক্ষণস্থায়ী জীবনে এমন কাজ করুন যেন আপনি এ দুনিয়াতে না থাকার পরেও মানুষ যেন বলতে পারে আপনি কেমন ছিলেন! আপনার কাজের মাধ্যমে এ দুনিয়াতে ছাপ রেখে যেতে হবে। এজন্য জীবন নিয়ে হতাশ হওয়ায় উচিত না। আবার জীবনে অনেক কিছু পেয়ে গেলে খুশি হওয়াও ঠিক না। আপনার আজ যা আছে কাল তা নাও থাকতে পারে।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর বিএসসি করছি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যলয় (ডুয়েট) থেকে । পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত চার বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।



