ঋণ: মানুষের জীবনের এক নীরব অভিশাপ।।

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।

মানুষ জীবনে সুখে-দুঃখে, সাফল্যে-ব্যর্থতায় পথ চলে। কিন্তু এমন কিছু সময় আসে যখন জীবনের ভার সামলাতে গিয়ে মানুষ বাধ্য হয় ঋণ নিতে। শুরুতে ঋণ হয়তো একটুখানি স্বস্তির পরশ এনে দেয়, কিন্তু ধীরে ধীরে সেটাই পরিণত হয় এক ভয়াবহ অভিশাপে। ঋণ এমন এক বোঝা, যা মানুষের ঘাড়ে চেপে বসে তার নিঃশ্বাস পর্যন্ত কেড়ে নিতে পারে।

ঋণের চাপ শুধু আর্থিক নয়, এটি মানসিকভাবেও মানুষকে বিধ্বস্ত করে ফেলে। যে মানুষ একসময় হাসিখুশি ছিল, সমাজে মেলামেশা করত, সে ধীরে ধীরে একা হয়ে যায়। ঋণের ভার যেন তাকে সমাজ থেকে আলাদা করে দেয়। চারপাশের মানুষ তার প্রতি সহানুভূতির চেয়ে সন্দেহ বা অবহেলা দেখাতে শুরু করে। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন দূরে সরে যায়। ঋণগ্রস্ত মানুষ তখন নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্বল, অসহায় মানুষ হিসেবে অনুভব করে।

ঋণের অভিশাপে জর্জরিত মানুষ ঠিকভাবে ঘুমাতে পারে না। প্রতিদিন চিন্তা করে, কীভাবে শোধ হবে এই ঋণ? সেই চিন্তা তাকে ভেতর থেকে খেয়ে ফেলে। অনেক সময় ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ঠিকভাবে খেতেও পারে না, কারণ তার মন সদা চিন্তায় নিমগ্ন থাকে। ঘুম নেই, শান্তি নেই, নিশ্চিন্ত ভবিষ্যতের আশাও থাকে না। যেন চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়, কোনো দিকেই আলো দেখা যায় না।

সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো, ঋণ মানুষকে সমাজে অপমানিত করে তোলে। সময়মতো টাকা শোধ করতে না পারলে সে অন্যদের চোখে অপরাধী হয়ে পড়ে। অনেক সময় ঋণদাতার চাপ, কথার আঘাত, কিংবা সমাজের তিরস্কার এতটাই কষ্ট দেয় যে মানুষ ভেতর থেকে ভেঙে পড়ে। কেউ কেউ মানসিকভাবে এতটাই ভীত হয় যে পালিয়ে পালিয়ে জীবন কাটাতে হয়।

ঋণের জালে একবার জড়িয়ে পড়লে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন। অনেক সময় এক ঋণ শোধ করতে গিয়ে মানুষ আরেক ঋণ নেয়, আর সেই চক্র চলতে থাকে বছরের পর বছর। জীবনের সব আনন্দ, স্বপ্ন, আশা সব কিছু হারিয়ে যায়। সে যেন আগুনে বসবাস করছে, প্রতিটি দিন জ্বলে যাচ্ছে কষ্টের তাপে।

তবে এও সত্য, জীবন যতই কঠিন হোক, ঋণ থেকে মুক্তির পথ আছে। প্রথমত, অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে হবে, জীবনযাপনকে সহজ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে হবে,কারণ আতঙ্ক বা ভয় ঋণ কমায় না, বরং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। সঠিক পরিকল্পনা, নিয়মিত পরিশ্রম, এবং সততা দিয়েই ঋণের ভার হালকা করা সম্ভব।

সবশেষে বলা যায় ঋণ কেবল টাকা ধার নেওয়া নয়, এটি এক নীরব মানসিক যন্ত্রণা। তাই জীবন যতোই কঠিন হোক না কেন, অপ্রয়োজনে ঋণের পথে না হাঁটা-ই বুদ্ধিমানের কাজ। আর যদি হাঁটতেই হয়, তাহলে সেটার পরিণতি মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করতে হবে। কারণ, ঋণ একবার অভিশাপে পরিণত হলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া সত্যিই কঠিন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।