আজকের প্রজন্ম কেন বই পড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
এখনকার যুগে মানুষ Book না পড়ে Facebook বেশি পড়ে। অথচ এক সময় ছিল, যখন বই ছিল মানুষের একমাত্র বন্ধু। অবসর সময় কাটানোর, জ্ঞান অর্জনের বা কল্পনার জগতে হারিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় মাধ্যম ছিল বই বই। কিন্তু সময় বদলেছে, প্রযুক্তি এগিয়েছে, আর তার সঙ্গে বদলে গেছে মানুষের অভ্যাসও। এখনকার প্রজন্ম হাতে বইয়ের বদলে হাতে রাখে মোবাইল ফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপ। প্রশ্ন হচ্ছে- কেন তারা বই পড়া থেকে দূরে যাচ্ছে?
বর্তমান যুগ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। ইউটিউব, টিকটক, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো এখন তরুণদের সময় কেড়ে নিচ্ছে। কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও, রঙিন ছবি আর অল্প কথার পোস্ট তাদের তাৎক্ষণিক আনন্দ দেয়। ফলে তারা ধৈর্য ধরে দীর্ঘ লেখা পড়তে চায় না। বই পড়তে সময় লাগে, মনোযোগ লাগে- যা এই দ্রুতগতির বিনোদনের যুগে অনেকের কাছেই বিরক্তিকর মনে হয়।
নিত্যদিনের স্ক্রিন ব্যবহারের ফলে তরুণদের মনোযোগের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি সময় মোবাইল ব্যবহার করলে মানুষের মনোযোগের সময়সীমা কমে যায়। বই পড়তে হলে মনকে শান্ত রাখতে হয়, দীর্ঘ সময় এক জায়গায় মনোযোগ ধরে রাখতে হয়। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের জন্য সেটা এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আগে পরিবারে বই পড়ার সংস্কৃতি ছিল। বাবা-মা নিজেরা বই পড়তেন, সন্তানদের বই কিনে দিতেন। এখন অনেক পরিবারেই সেটা হারিয়ে গেছে। অভিভাবকরা বেশি গুরুত্ব দেন পরীক্ষার নম্বরে, কম গুরুত্ব দেন পাঠাভ্যাস গঠনে। সমাজেও কে কত বই পড়ে তা নিয়ে আলোচনা নেই, বরং কে কত ফলোয়ার পেয়েছে, কার কত ফ্রেন্ড আছে, কে কয়টা ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট ঝুলিয়ে রেখেছে, সেটাই বড় করে দেখছে।
গেম, ওয়েব সিরিজ, সোশ্যাল মিডিয়া সবই এখন হাতের নাগালে। এগুলো শুধু বিনোদন দেয় না, মস্তিষ্কে তাত্ক্ষণিক আনন্দও জাগায়। ফলে বইয়ের ধীর ও গভীর আনন্দ অনেকের কাছে ফিকে হয়ে যায়। আজকের প্রজন্ম তাত্ক্ষণিক তৃপ্তি চায়, অথচ বই সেই তৃপ্তি দিতে পারে না তাৎক্ষণিকভাবে, বই ধীরে ধীরে মানুষকে সমৃদ্ধ করে।
এখন সাধারণত প্রশ্ন আসতেই পারে এর প্রতিকার কি? সবচেয়ে বড় প্রতিকার হলো বইয়ের প্রতি নতুনভাবে আগ্রহ সৃষ্টি করা। স্কুল-কলেজে বই পড়ার অনুষ্ঠান, সাহিত্য প্রতিযোগিতা, বুক ক্লাব বা রিডিং সার্কেল গঠন করা যেতে পারে। বাবা-মা সন্তানকে বই উপহার দিতে পারেন, নিজেরাও নিয়মিত বই পড়তে পারেন। ডিজিটাল যুগে ই-বুক এবং অডিওবুক ব্যবহার করাও দারুণ উপায়। এতে করে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বই পড়ার অভ্যাস ফিরে আসতে পারে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পাঠকে আনন্দ হিসেবে নেওয়া, চাপ হিসেবে নয়। যদি বইকে আমরা জীবনের অংশ করতে পারি, তাহলে আজকের প্রজন্মও আবার বইয়ের গন্ধে মুগ্ধ হবে।
বই কেবল জ্ঞান দেয় না, মানুষকে চিনতে শেখায়, জীবনের মূল্য বুঝতে শেখায়। সময়ের পরিবর্তনে বই থেকে দূরে যাওয়া যতটা সহজ, ততটাই বিপজ্জনকও। কারণ বই হারালে আমরা হারাব চিন্তা, কল্পনা, মানবিকতা। তাই এখনই সময় নতুন প্রজন্মকে বইয়ের পথে ফেরানোর। কারণ একটি ভালো বই একজন মানুষের জীবনই বদলে দিতে পারে। একটি ভালো বই একশত বন্ধুুর সমান।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















