হঠাৎ অসুস্থতা আর অফিসের দায়িত্ব: এক দিনের গল্প।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
মানুষের জীবনে কখন, কীভাবে শরীর খারাপ করবে, তা আগে থেকে কেউই বলতে পারে না। সব কিছুই এক মুহূর্তে পাল্টে যেতে পারে। ঠিক তেমনই একটি দিন ছিল আজকের দিনটি। ঘুম থেকে উঠেই বুঝতে পারলাম শরীরটা কেমন যেন লাগছে। মাথায় হালকা ব্যথা, শরীরের হাত-পা ভেঙে পড়ার মতো ব্যথা, মনও অদ্ভুতভাবে অবসন্ন হয়ে গেল। অফিসে যাবো, নাকি বিশ্রাম নেবো এ নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গেলাম।
হঠাৎ মনে পড়ল, যে সহকর্মী আমার সঙ্গে কাজ করেন, তার আজ অফিসে আসার কথা নেই। দায়িত্বের কথা চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত নিলাম, যত কষ্টই হোক, অফিসে যেতেই হবে। ধীরে ধীরে গোসল করে, নিজের সাধ্যমতো রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম। শরীর যেন ঠিকমতো সহযোগিতা করছে না, কিন্তু তবুও এগিয়ে যেতে লাগলাম।
অফিসে পৌঁছে ডেস্কে বসতেই মনে হলো চারপাশ যেন ঘুরছে। শরীরের দুর্বলতা ক্রমেই বাড়তে লাগল। তবুও চেষ্টা করলাম স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে। ছোটখাটো কাজগুলো শুরু করলাম, কিন্তু সকাল ১১টার দিকে শরীরে প্রচণ্ড জ্বর এসে গেল। মনে হচ্ছিল, আর পারছি না। অনেক কষ্ট করে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত অফিসে থাকার পর সিদ্ধান্ত নিলাম, কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়াই ভালো।
একটু শর্ট স্লিপ নিয়ে বাসায় ফিরে এলাম। বাড়িতে এসে লাঞ্চ করলাম, সঙ্গে প্রয়োজনীয় ঔষধ খেয়ে কিছুটা আরাম পেলাম। শরীর কিছুটা ভালো লাগছিল, তাই বিকেল তিনটার দিকে আবার অফিসে ফিরে গেলাম। দায়িত্বের টানেই হয়তো, শরীর খারাপ থাকা সত্ত্বেও কাজ চালিয়ে গেলাম। তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত মোটামুটি ভালোই ছিলাম। মনে হচ্ছিল, হয়তো জ্বর কেটে গেছে। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই শরীরের অবস্থা খারাপের দিকে মোড় নিল।
শরীর ভারী হয়ে এলো, মাথাব্যথা বেড়ে গেল, জ্বরের দাপট আবার ফিরে এলো। বুঝতে পারলাম, শরীরকে আর জোর করে কাজে লাগানো যাবে না। তাই ঔষধ খেয়ে সরাসরি শুয়ে পড়লাম। অনেক বছর পর আজ প্রথমবার রাত আটটার মধ্যেই বিছানায় চলে গেলাম। অফিসের চাপ, দায়িত্ব, আর হঠাৎ অসুস্থতা সব মিলিয়ে শরীর আর মন দুটোই যেন ক্লান্ত। আগামীকাল অফিসে যেতে পারব কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়।
এমন অভিজ্ঞতা আমাদের অনেকের জীবনে হঠাৎ করেই চলে আসে। কাজের প্রতি দায়িত্ববোধ, অফিসের চাপ, পরিবারের প্রত্যাশা সব মিলিয়ে আমরা কখনো কখনো নিজের শরীরের যত্ন নিতে ভুলে যাই। অথচ শরীরই সব কিছুর মূল ভিত্তি। শরীর ভালো না থাকলে কাজের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
আজকের এই ঘটনাটা যেন মনে করিয়ে দিল, আমাদের শরীরের সংকেতগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যখন শরীর খারাপ বোধ করবে, তখন বিশ্রাম নেওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত। কারণ সাময়িক বিশ্রাম হয়তো অফিসের একদিনের কাজ পিছিয়ে দিতে পারে, কিন্তু নিজের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করলে সেটির প্রভাব পড়ে আরও অনেক দিনের উপর।
জীবনের দৌড়ে সবাই ব্যস্ত, প্রতিদিনই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। তবে নিজের শরীর ও মনের যত্ন না নিলে সেই দৌড় এক সময় থেমে যেতে বাধ্য। তাই প্রয়োজনের সময় বিশ্রাম নেওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম, সঠিক সময়ে ওষুধ খাওয়া, আর সম্ভব হলে অফিসের কাজ সাময়িকভাবে অন্যের উপর ছেড়ে দেওয়া, এগুলোই সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি।
আজকের এই দিনটি কষ্টের হলেও একটি বড় শিক্ষা দিয়ে গেল। শরীরের যত্ন নেওয়া কোনো বিলাসিতা নয়, বরং একান্ত প্রয়োজন। আশা করি, বিশ্রাম আর সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে আগামীকাল হয়তো আবার আগের মতো স্বাভাবিকভাবে কাজে ফিরতে পারব।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server