গতকালের মরিচ তোলা ও আড়ৎ এ যাওয়ার গল্প

আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আল্লাহর অসীম রহমতে আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমাদের মরিচের ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বিক্রি করার অভিজ্ঞতা।

ফটোগ্রাফি মানে শুধু একটি দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দি করা নয়, এটি আসলে অনুভূতিগুলোকে জমিয়ে রাখা। প্রতিটি ছবি এক একটি গল্প, এক একটি হাসি, এক একটি বিষণ্ণতা। ক্যামেরার শাটার ক্লিক করার মাধ্যমে আমি সময়ের চাকা থামিয়ে দিই। আমার ছবিতে আমার আবেগ আর অনুভূতিরা কথা বলে, যা শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা যায় না।কারণ প্রতিটি ফ্রেমের পেছনে লুকিয়ে থাকে এক একটি মুহূর্ত, এক একটি ভাবনা। ক্যামেরা আমার তৃতীয় চোখ, যা দিয়ে আমি পৃথিবীকে নতুনভাবে দেখতে শিখি, এবং সাধারণ জিনিসগুলোকে অসাধারণ করে তুলি।

গতকালকের দিনটা ছিল পুরোদমে ব্যস্ততায় ঠাসা। সকাল সকাল বেশ কয়েকজন মহিলা কামলা নিয়ে মরিচ ক্ষেতে গেলাম। তারা সবাই মিলে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে গাছ থেকে টসটসে সবুজ মরিচগুলো তোলা শুরু করলেন। আমি নিজে আর মরিচ ছিঁড়িনি, আমার মূল কাজ ছিল তোলা মরিচগুলো এক জায়গায় জড়ো করা আর সেগুলো গুছিয়ে বড় বড় বস্তায় ভরা। একেকটা বস্তা যখন মরিচে কানায় কানায় ভরে উঠছিল, তখন মনের মধ্যে একটা আলাদা তৃপ্তি কাজ করছিল। দুপুর গড়াতেই কাজ প্রায় শেষ হয়ে এলো, বেশ কয়েকটি বড় বড় বস্তা একদম বিক্রির জন্য তৈরি হয়ে গেল।

মরিচ তোলা আর বস্তাভরা শেষ হলে আমি রাস্তার ধারে গিয়ে দাঁড়ালাম এবং গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। বিকেলের মিষ্টি রোদে রাস্তার পাশে বসে থাকাটা বেশ ভালোই লাগছিল। কিছুক্ষণ পরই দেখলাম দূর থেকে একটা ঘোড়ার গাড়ি ধুলো উড়িয়ে এগিয়ে আসছে। গাড়িতে আগে থেকেই বেশ কিছু মরিচের বস্তা বোঝাই করা ছিল। গাড়িটা আমার কাছে আসতেই আমি আমাদের সব মরিচের বস্তাগুলো সেটার ওপর তুলে দিলাম। গাড়ির চালককে গন্তব্য বুঝিয়ে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হলাম এবং ঘোড়ার গাড়িটাকে বাজারের দিকে পাঠিয়ে দিলাম।

এরপর আমি দেরি না করে একটা ব্যাটারিচালিত অটো নিয়ে সোজা বাজারের দিকে রওনা হলাম। বাজারে গিয়ে আগে থেকেই আমাদের মরিচ বিক্রির আড়ৎটিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। মনে মনে ভাবছিলাম গাড়িটা পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে। কিছুক্ষণ আড়ৎ‌ এ দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক দেখার পরই দেখলাম আমাদের সেই মরিচ বোঝাই ঘোড়ার গাড়িটা আড়ৎ এর সামনে এসে থামল। এরপর শুরু হলো আসল কাজ। বস্তাগুলো গাড়ি থেকে নামিয়ে একে একে আড়ৎ এর ডিজিটাল মিটারে তোলা হলো। আমি পাশে দাঁড়িয়ে খুব সতর্কভাবে প্রতিটি বস্তার ওজন দেখে নিলাম যাতে কোনো হিসেবে ভুল না থাকে। ডিজিটাল মিটারে নিখুঁতভাবে ওজন হওয়ার কারণে মনের মধ্যে কোনো খটকা থাকল না।

সবগুলো বস্তার ওজন শেষ হওয়ার পর আড়ৎদার সাহেব আমার পাওনা টাকা বুঝিয়ে দিলেন। টাকাটা সাবধানে পকেটে নিয়ে আর খালি বস্তাগুলো হাতে ধরে যখন আড়ৎ থেকে বের হলাম, তখন শরীরটা বেশ ক্লান্ত লাগছিল। সারা দিন তেমন কিছু খাওয়া হয়নি, তাই পাশের একটা হোটেল থেকে হালকা কিছু খেয়ে নিলাম। এরপর বাড়ির জন্য বড় দেখে একটা টাটকা মাছ কিনলাম আর কিছু প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজার সেরে নিলাম। সব কাজ শেষ করে ব্যাগ গুছিয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই তাড়াহুড়ো করে বাড়ির পথ ধরলাম। সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনি শেষে হাতে নিজের ফসলের টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার প্রশান্তিটাই আলাদা।

বন্ধুরা, আজকের পোস্টটি এখানেই শেষ করছি এবং আপনাদের কাছ থেকে ভালো মন্তব্য আশা করছি। পরবর্তী ব্লগে নতুন বিষয় নিয়ে দেখা হবে। সৃষ্টিকর্তা আমাদের সকলকে সুস্থ রাখুক।

---

---

আমি আব্দুল আলীম, Steemit-এ আমার ব্যবহারকারীর নাম @alimtutorial । আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্বিত। Steemit কেবল আমার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি আমার ভালোবাসার জায়গা। এখানে মানুষ তাদের সৃজনশীলতা এবং পছন্দ-অপছন্দ একে অপরের সাথে ভাগ করে নেয়। এই প্ল্যাটফর্মটি আমাদের মতো কন্টেন্ট নির্মাতাদের জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ তৈরি করেছে, যেখানে আমরা নিজেদের প্রকাশ করতে পারি এবং অন্যদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারি। পড়া, লেখা, ব্লগিং, ফটোগ্রাফি, গান গাওয়া এবং ভ্রমণ আমার প্রিয় জিনিস। প্রতিটি কাজ আমাকে নতুন জীবনযাপন করতে শেখায়, এবং Steemit আমার এই সমস্ত শখ সকলের সামনে তুলে ধরার একটি দুর্দান্ত মাধ্যম।

ফটোগ্রাফির বিবরণ

📱 ডিভাইসের নাম	📍অবস্থান	ক্যাপচার📸 দ্বারা
Redmi note 10 pro max	Jamalpur/BD	@alimtutorial
-	-	-

---

ধন্যবাদ

---

---

@photoman
@blacks
@royalmacro
@beautycreativity
@curators
@hungry-griffin

আমার পোস্টটি দেখার জন্য

---

শুভেচ্ছান্তে
@alimtutorial

_{Posted using SteemX}