বড়শির ফাঁদে বন্ধুত্ব
আসসালামুআলাইকুম/আদাব
গ্রীষ্মের এক সকাল। গ্রামের পাশের পুকুরের ধারে হালকা কুয়াশা তখনো ভেসে আছে। পাখিদের ডাক আর পানির উপর ভেসে থাকা সূর্যের আলোয় চারদিকটা যেন রূপকথার মতো সুন্দর। সেদিন রবিন আর তার বন্ধু সোহেল ঠিক করল,আজ তারা মাছ ধরতে যাবে। দু’জনেই নতুন বড়শি, সুতা আর টোপ নিয়ে রওনা হলো পুকুরপাড়ে।রবিন বেশ আগ্রহ নিয়ে বলল, আজ দেখবি, আমি একটা বড় কাতলা তুলব!সোহেল হেসে বলল, দেখি তোর বড়াই কত দূর যায়!
দু’জনেই পুকুরের পাশে বসে বড়শিতে টোপ লাগাতে শুরু করল। রবিন একটু দূরে বসে নিজের বড়শি ছুঁড়ে দিল পানির দিকে। সোহেলও মনোযোগ দিয়ে টোপ লাগাচ্ছিল। হঠাৎ রবিন খেয়াল করল তার বড়শির সুতা একটু জট পাকিয়ে গেছে। সে দ্রুত টানতে গিয়ে বুঝতেই পারল না, পাশেই বসে থাকা সোহেলের হাতে তার বড়শি গেঁথে গেছে!সোহেল হঠাৎ চিৎকার করে উঠল, আহহ! হাতটা!রবিন হতভম্ব হয়ে গেল। দেখল, বড়শির কাঁটাটা সোহেলের হাতের তালুতে গভীরভাবে ঢুকে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে তার মুখের রঙ ফ্যাকাশে হয়ে গেল।
ভাই, ধীরে করিস, আমি খুলে দিচ্ছি, কাঁপা গলায় বলল রবিন।সোহেল ব্যথায় কাতর হয়ে বলল, না না, টানবি না! আরো ঢুকে যাবে!পুকুরপাড়ে থাকা অন্য দু’একজন লোক দৌড়ে এলো। তারা পরিস্থিতি দেখে বলল, এটা এখন টেনে তোলার মতো নয়, ডাক্তার দেখাতে হবে,রবিন ততক্ষণে চোখে জল নিয়ে সোহেলের হাত ধরে ফেলেছে। তার মনে হচ্ছিল, সব দোষ তারই।
দু’জনে মিলে গ্রামের পাশের ছোট ক্লিনিকে গেল। ডাক্তার সাবধানে বড়শিটা কেটে কাঁটাটা হাত থেকে বের করলেন। রক্ত বেরোলেও ডাক্তার ব্যান্ডেজ করে দিলেন, আর ওষুধ দিলেন ব্যথা কমানোর জন্য।রবিন তখনো গম্ভীর মুখে বসে আছে। ধীরে বলল, ভাই, আমি খুব দুঃখিত। যদি তোর কিছু হয়ে যেত, আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না।সোহেল হেসে বলল, এইটুকু ঘটনায় এমন মুখ করিস না রে! আমি জানি, তোর কোন দোষ ছিল না। দুর্ঘটনা তো হয়েই যায়।
সেদিন বিকেলে যখন তারা দু’জন আবার পুকুরপাড়ে ফিরে গেল, সূর্য তখন ডুবে যাচ্ছিল। লালচে আলোয় পানির ঢেউ ঝিকমিক করছিল। সোহেল মজা করে বলল, আজ তো তুই মাছ না, আমাকেই ধরছিস!রবিনও হেসে উঠল, হ্যা রে, আজ মাছ ধরার বদলে বন্ধুত্বটাই আরও মজবুত হলো।
সেদিনের সেই ঘটনার পর থেকে তারা যখনই বড়শি নিয়ে মাছ ধরতে যায়, রবিন প্রথমেই দেখে নেয়,চারপাশে কেউ আছে কিনা। আর সোহেল মজা করে বলে, হাত সামলে রাখিস, না হলে আবার ইতিহাস ঘটবে!
ঘটনাটা যদিও ছিল একটি ছোট দুর্ঘটনা, কিন্তু সেই দিন তাদের বন্ধুত্বে আরও গভীর এক বন্ধন তৈরি হয়। ব্যথার চেয়ে বড় হলো যত্ন, আর ভয়কে হার মানালো এক নিখাদ ভালোবাসা। বড়শির ফাঁদে সেদিন মাছ ধরা না পড়লেও, বন্ধুত্বটা চিরকালের জন্য পাকা হয়ে গেল।
ধন্যবাদ সকলকে✨💖
ফোনের বিবরণ
| ক্যামেরা | স্যামসাং গ্যালাক্সি |
|---|---|
| ধরণ | গল্প ✨ |
| মডেল | এম-৩১ |
| ক্যাপচার | @alif111 |
| অবস্থান | সিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ। |
আমার পরিচয়
আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼
সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।🌹🌻





