শান্তির খোঁজে সিলেটে | সিলেট ভ্রমণ পর্ব - ১
হ্যালো গাইস, আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই?
ব্যস্ততার জন্য স্টিমিটে আর ঠিকমতো লেখাই হয় না। অনেকদিন ধরেই মনে একটা ইচ্ছা জমে ছিল—“একটু প্রকৃতির মাঝখানে গিয়ে দু’দিন কাটাই।” মনেই প্রথমে যেই জায়গাটা ভেসে উঠল সেটা সিলেট। কিন্তু পড়াশোনা, দায়িত্ব, ক্যারিয়ারের চাপ—এসবের ভীড়ে প্ল্যান করলেও কখনো বাস্তবায়ন করা হয় না।

কিন্তু এবার পরীক্ষা শেষ হতেই ঠিক করলাম—যাই, একটু ঘুরে আসি।
যেই কথা, সেই কাজ। ঠিক ২ তারিখ রাতে উঠে পড়লাম বাসে, সায়েদাবাদ থেকে। ব্যাগে দু-একটা কাপড়, সাথে অল্প কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস। ঢাকার জ্যামে ক্লান্তি এতটাই ছিল যে বাসে উঠেই প্রায় ঘুমিয়ে পড়লাম। ভোরে হালকা একটা ঠান্ডা হাওয়ার স্পর্শে ঘুম ভাঙলো। চোখ খুলে দেখি আমরা সিলেটে! ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সিলেটে চলে আসলাম।


আমরা চার বন্ধু মিলে গিয়েছিলাম। ভোরবেলার সেই শান্ত সিলেট শহর দেখে প্রথমেই মনে হলো, “হ্যাঁ, এটা সত্যিই প্রকৃতির এক স্বর্গ। যদিও তখন গরমটা একটু বেশিই ছিল, তবুও সিলেট শহরের পরিবেশই আলাদা। প্রচুর গাছপালার জন্য গরমটা পুরোপুরি অনুভব হয় না। মানুষের ব্যস্ততা কম, বাতাসে একটা শান্ত অনুভূতি। মনে হচ্ছিল ঢাকা শহরের শব্দ আর ধুলোবালিকে অনেক পেছনে ফেলে এসেছি। তাছাড়া সিলেটের যে যে স্পটে ঘুরলাম সেই জায়গাতে অনেক উপজাতিও ছিলো, তাদের জীবনযাপন দেখে মনটাই ভালো হয়ে গেলো। তবে সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা গুলোতেই এরা বাস করে। যদিও এদের জীবন অনেক চ্যালেঞ্জিং তবে এদের জীবনটা আসলেই সুন্দর। সবকিছু প্রাকৃতিক!
সিলেটের সুন্দর রাস্তা
হোটেলে উঠেই দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নিলাম। হোটেলের রুমটা বেশ বড়! চারজন থাকার জন্য উপযুক্ত।
জানালার বাইরে তাকাতেই দূরের পাহাড় আর সবুজের মাঝে সিলেট যেন আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছিল। ভ্রমণের প্রথম দিন, তাই উত্তেজনাও ছিল আলাদা। প্রতিটা মিনিট যেন নতুন কিছু দেখার অপেক্ষায় ছিলাম। যদিও আমি সবকিছু গুছিয়ে লিখতে পারছি না তবে সিলেটের সৌন্দর্য আসলেই অপরুপ! এই সৌন্দর্য লিখে প্রকাশ করা যাবে না৷
সিলেটে আসার সাথে সাথেই যেটা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো, সেটা হলো এখানকার প্রকৃতি। সবুজ পাহাড়, চা-বাগান, পরিষ্কার রাস্তা—সব মিলিয়ে মনটা একেবারে ফ্রেশ হয়ে গেল। মনে হচ্ছিল, এতদিন পর অবশেষে নিজেকে নিজের মতো করে সময় দিতে পারছি। ছোট সময় থেকেই আমি প্রকৃতির প্রতি আলাদা এক টান অনুভব করি। তাই সিলেট আমার জন্য একেবারেই পারফেক্ট ছিলো। সিলেট যেহেতু বর্ডার এরিয়া তাই এখানে অনেক অনেক ইন্ডিয়ান জিনিস পাওয়া যায়। সিলেট গেলে এগুলো সবাই-ই কিনে আনে।
এখানে ইন্ডিয়া চকলেট এবং কসমেটিকস সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়। তাছাড়া সিলেটের স্থানীয় ফলমূলও অনেক বেশী সুস্বাদু এবং জনপ্রিয়।
সিলেটের সবচেয়ে ভালো লাগার মধ্যে একটা ছিলো এখানের সব নদীগুলো! সরাসরি এগুলো ঝর্ণা থেকে নেমে আসায় পানি অনেক বেশী স্বচ্ছ। এই নদীগুলোতে নৌকা নিয়ে ঘুরেবেড়ানোর মজাই আলাদা।
সিলেটে যদিও খাবারদাবার নিয়ে অতটা আমেজ নেই তবে পাঁচ ভাই নামের একটা রেস্টুরেন্ট খুবই জনপ্রিয়। এটাতে দিন রাত ২৪ ঘন্টাই ভীড় লেগে থাকে। খাবারও খুবই সুস্বাদু।
এই ভ্রমণের সবচেয়ে বড় কথা হলো এই ভ্রমণ আমাকে এমন একটা অনুভূতি দিচ্ছিল যা একটা লেখায় হয়তো প্রকাশ করা সম্ভব না। তাই ভাবলাম, পুরো অভিজ্ঞতাটা দুইটা পর্বে লিখবো। আশা করি আপনাদেরও ভালো লাগবে আমার এই ছোট্ট ভ্রমণ কাহিনি।
এই ছিলো পর্ব–১। পরের পর্বে জানাবো—সিলেটে কোথায় কোথায় গেলাম, কি কি দেখলাম, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কি কি খেলাম!
আশা করি সবাই অপেক্ষায় থাকবেন। 😊
ধন্যবাদ সবাইকে!!
আমার সম্পর্কে
স্টিমিটে আমি আমার শখ, অভিজ্ঞতা ও আগ্রহের বিষয়গুলো শেয়ার করি। আশা করি, আমার এই ভালোলাগার বিষয়গুলো আপনাদেরও অনুপ্রাণিত করবে।










Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
🎉 Congratulations!
Your post has been upvoted by the SteemX Team! 🚀
SteemX is a modern, user-friendly and powerful platform built for the Steem community.
🔗 Visit us: www.steemx.org
✅ Support our work — Vote for our witness: bountyking5