তিন বন্ধুর পদ্মার চরে অভিযান।
বেশ কিছুদিন ধরে আমি আর আমার বন্ধু ফেরদৌস পরিকল্পনা করছিলাম একদিন চরে ঘুরতে যাওয়ার। কারণ শীতের মৌসুমে পদ্মার চর গুলো এক অন্যরকম রূপ ধারণ করে। তবে পরিকল্পনা করলেও সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছিল না। কারণ কখনো আমি ঢাকায় চলে যায় আবার কখনো ফেরদৌস ফরিদপুর থেকে বাইরে চলে যায়। এভাবে দুজনের ভেতর একটা ব্যবধান থেকে যাচ্ছিল। তবে এবার ফরিদপুর যাওয়ার পরে ফেরদৌসের সাথে আমার দুদিন পরে দেখা হয়েছিল। তখন আমরা দুজনে ঠিক করলাম আগামীকাল পদ্মার চরে ঘুরতে যাব।
তখন ফেরদৌস আমাকে বলল আমাদের আর এক বন্ধু আছে যার নাম প্রদীপ। তাকেও খবর দিতে। সে আবার এই সব ঘোরাঘুরির ব্যাপারে বেশ আগ্রহী। আমিও ফেরদৌসের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলাম। পরে তিনজন মিলে ঠিক করলাম পরদিন দুপুরের পরে আমরা পদ্মার চরে যাবো ঘুরতে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক আমি পরদিন সাড়ে তিনটার দিকে ফেরদৌসের এলাকায় উপস্থিত হলাম। সেখান থেকে আমি আর প্রদীপ মিলে নদীর ঘাটের দিকে আগাতে থাকলাম। আর ফেরদৌসকে বললাম তার বাড়ি থেকে সরাসরি যেন সে নদীর ঘাটে চলে যায়।
আমি আর প্রদীপ দুই বন্ধু মিলে ধীরে ধীরে নদীর ঘাটের দিকে হাঁটতে লাগলাম। প্রথমে আমি মনে করেছিলাম পথ খুব বেশি হবে না। পরে হাঁটতে গিয়ে টের পেলাম আমরা যেখান থেকে হাঁটা শুরু করেছি সেখান থেকে নদীর ঘাট আসলে অনেকটা দূরে। যাই হোক শেষ পর্যন্ত একটু কষ্ট করে হলেও সেখানে পৌঁছলাম। সেখানে পৌঁছে দেখি ফেরদৌস আগে থেকেই এসে বসে আছে। নদীর পাড়ে একজন মানুষ বরশী দিয়ে মাছ ধরছে। তার পাশে বসে গল্প করছিল ফেরদৌস। সে আবার বরশি দিয়ে মাছ ধরতে খুব ভালোবাসে।
যাইহোক আমরা সেখানে পৌঁছে ফেরদৌসকে ডাক দিলাম। তখন ফেরদৌস আমাদের সাথে যোগ দিলো। তবে আমরা নদীর ঘাটে পৌঁছালেও দেখতে পেলাম খেয়া নৌকাটি নদীর ওপারে দাঁড়িয়ে আছে। তাই আমি সময় পেয়ে নামাজ পড়তে চলে গেলাম। নামাজ পড়ে এসে দেখি ফেরদৌস আর বন্ধু প্রদীপ দুজন নৌকায় উঠে বসে আছে। আমি নৌকায় ওঠার পর নৌকা ছেড়ে দিল। শীতের সময় নদীর পানি ইতিমধ্যে অনেকটা কমে গিয়েছে। তাই অতি অল্প সময়ে আমরা নদীর অপর পাড়ে পৌঁছে গেলাম।
সেখানে পৌঁছে আমরা জনবসতির উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলাম। কিছুদূর আগানোর পর মানুষ চলাফেরার মতো একটি রাস্তা পেয়ে গেলাম। সেই রাস্তা ধরে তিন বন্ধু হাঁটছিলাম আর গল্প করছিলাম। আমরা এখানকার জনবসতি দেখে কিছুটা অবাক হয়েছি। কারণ কিছুদিন আগেও এখানে প্রায় তেমন কিছুই ছিল না। অল্প কয়েক বছরের ভিতরে এখানে মানুষের অনেক বাড়িঘর হয়েছে। একটা পাকা মসজিদও দেখতে পেলাম সেখানে।
তিন বন্ধু মিলে গল্প করতে করতে হাঁটছিলাম। কিন্তু আমার হাঁটতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। তাই আমরা একটি চায়ের দোকান খুজছিলাম। পরিকল্পনা ছিল একটি চায়ের দোকানে বসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেব আর চা খাব। কিন্তু বেশ খানিকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পরে চায়ের দোকান পেলাম না। তবে একটি মুদি দোকান দেখতে পেলাম। সেখানে গিয়ে আমরা সেভেন আপ আর চিপস কিনলাম। তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে তিন বন্ধু আবার হাঁটতে লাগলাম। রাস্তার দুপাশের চরের প্রাকৃতিক পরিবেশ আমরা মুগ্ধ বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখছিলাম।
এক একজন এক এক ভাবে আমাদের মনের মুগ্ধতা প্রকাশ করছিলাম। এমন চমৎকার নিরিবিলি শান্ত পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছিল। এখানে যদি একটি বাড়ি করে থেকে যেতে পারতাম। তাহলে কতই না ভালো হতো। আরো বেশ কিছুক্ষণ হাঁটার পর হঠাৎ করে আমাদের খেয়াল হলো আমরা আসলে অনেকটা দূরে চলে এসেছি। এদিক প্রায় সন্ধ্যা হয় হয় অবস্থা। তাই দ্রুত তিনজন আবার ফিরতি পথে ধরলাম। বেশ কিছুক্ষণ হেঁটে আমরা আবার খেয়া ঘাটে পৌঁছলাম। তারপর সেখান থেকে নৌকায় নদী পার হয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার চর |

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
শীতকালে পদ্মার চরগুলো জেগে উঠে।আমরা ও রাজশাহীতে পদ্মার চরে গিয়েছিলাম। যাই হোক পানি কম থাকায় খুব অল্প সময়ে পৌছে গেলেন নদীর এইপাড়ে।রাস্তার দুইপাশে প্রাকৃতিক পরিবেশ বেশ সুন্দর, আসলেই সেখানে একটা বাড়ি করলে আমরা যেয়ে আপনাদের বাসায় বেড়িয়ে আসতাম😉।তিন বন্ধু মিলে সবজি আর মাছ চাষ করতেন, আমরা যেয়ে নিয়া আসতাম। হা হা।গ্রাম্য পরিবেশের ছবিগুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
তিন বন্ধু মিলে পর্দার চরে কাটানো মুহূর্তটা সত্যিই দুর্দান্ত ছিল৷ তার সাথে প্রতিটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ যা গ্রামের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছে৷ ন বিশেষ করে ভালো লাগলো ঘোড়ার গাড়িটি এবং কি পর্দার চরে থাকা ছোট্ট কুঁড়েঘরটি৷
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি ব্লগ উপস্থাপন করার জন্য৷
বন্ধুদের নিয়ে তাহলে বেশ ঘুরাঘুরি করছেন ভাইয়া। আমার কাছেও কয়েকজন মিলে বা কাছের কাউকে নিয়ে ঘুরতে ভালো লাগে। একা একা কোথাও ঘুরতে যেতে এমনিতেই ভালো লাগেনা। চর অঞ্চলগুলোতে যখন মানুষের বসতি থাকে তখন সেইখানে বেশ দারুন একটা পরিবেশে গড়ে ওঠে। কারণ আমি অনেক আগে একবার আমার এক ফুফুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তারাও চরাঞ্চলে আর সেখানে পরিবেশ এতটা সুন্দর যে ঘুরতে ঘুরতে যেন মুগ্ধ হয়ে যাই। যদিও একদিনের জন্য গিয়েছিলাম। যতটুকু সময় পেয়েছি ততটুকু ঘুরে ছিলাম। বেশ ভালো লেগেছিল। আপনার আজকের পোস্ট দেখে সেই কথা মনে পড়ে গেল।
তিন বন্ধু মিলে পদ্মার চরে ঘুরতে গিয়েছেন ভাইয়া দেখে অনেক ভালো লাগলো। শীতকালে এই সময় যখন নদীর পানি শুকিয়ে যায় তখন নদীর মাঝে চর ভেসে ওঠে। সেই চরে ঘুরতে যেতে অনেক ভালো লাগে। আমিও কয়েকবার গিয়েছিলাম পরিবারের সাথে। আজকে আপনার ঘুরাঘুরি পোস্টটি আমাদের মধ্যে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভকামনা রইল
আপনার এবং ফেরদৌস ভাইয়ের একসঙ্গে ভ্রমণ কাহিনী অনেক পড়েছি। কিন্তু আজ আবার সঙ্গে নতুন বন্ধু প্রদীপ। এই সময়ে চর জেগে যায় চাষীরা সেখানে চাষ করে এবং সবুজ হয়ে উঠে পানিতে তলিয়ে থাকা স্থানটা। এইরকম মুক্ত পরিবেশে বেশ দারুণ সময় কাটিয়েছেন তিন বন্ধু। তবে গ্রাম তো সেজন্য হয়তো অনেক খুজেঁও চায়ের দোকান পান নাই।।
চিপস আমার খুব প্রিয়। ভালই হয়েছে চায়ের দোকান না পাওয়াতে । চা খেলেতো আর পেট ভরতো না। তবে পদ্মার চরে এখন অনেক বেশ বাড়িঘর হয়ে গেছে। বিষয়টি অবাক হওয়ার কিছুই নেই। এদেশের এখন অনেক জায়গায় এমন দৃশ্য দেখা যায়। যাই হোক আপনাদের পদ্মার পাড়ে বেড়ানোর সুযোগে যে ছবি গুলো দেখতে পেলাম তা কিন্তু মনমুগ্ধকর। বিশেষ করে ঘোড়ার গাড়ির দৃ্শ্যটি।
তিন বন্ধু মিলে পদ্মার চড়ে অনেক সুন্দর মুহুর্ত কাটিয়েছেন। পড়ে অনেক ভাল লাগলো। সাথে সাথে সবুজ প্রকৃতির ও ছবি তুলেছেন, বেশ সুন্দর লাগলো ভাইয়া। চা এর দোকান না পাওয়াতে চিপস কিনে খেলেন। সব মিলিয়ে ভাল লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।