শৈশবের স্মৃতি- শৈশবে দেখা ভূমিকম্পের কিছু স্মৃতি
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার প্রিয় ও সহযাত্রী সকল ভাই ও বোনেরা। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন।আজ আবারও হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সবার অতি নিকটে। ফেলে আশা অনেক স্মৃতির মাঝ থেকে কিছু স্মৃতি নিয়ে। আমাদের চলার পথে জীবনে সুখ দুঃখ কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে।সেই শৈশব থেকে শুরু করে মৃতুর আগ পর্যন্ত স্মৃতিগুলো যেন চোখে ও মনের মনি কোঠায় ভেসে বেড়ায়। আর তার মধ্যে জীবনে এমন অনেক ঘটনা থাকে যা কখনও ভোলা যায় না।

কয়েকদিন আগে হয়ে গেল এক বিশাল ভূমিকম্প। সেই থেকে মানুষ এখন হতাশাগ্রস্থ এবং আতংকিত। কখন যে কি হয়। আবার শোনা যাচেছ যে কয়েকদিনের মধ্যে নাকি বড় ধরনের একটি ভূমিকম্প হবে। সেই ভয়েই আমি বেশ অস্থির। খাওয়া দাওয়া কোন কিছুই ভালো লাগে না। সারাটা দিন শুধু আতংকে দিন কাটে। এই বুঝি ভূমিকম্প হলো, এই বুঝি ভূমি কম্প হলো্। যতই ভাবী যে বনের বাঘে খায় না মনের বাঘে খায়। কিন্তু তবুও কিছুতেই ভুলতে পারছি না। আর এই সময়ে বার বার মনে হযে যাচেছ ছেলেবেলার সেই ভূমিকম্পের কথা।
আমি তখন বেশ ছোট। একবার দিনের পরদিন। আমাদের দাওয়াত ছিল আমার ভাইয়ের বাসায়। পুরো পরিবার নিয়ে সেখানে যাওয়ার কথা। এই দিকে আমার আব্বা বেশ অসুস্থ। আবার অসুস্থতার জন্য আমাদের ও মন খারাপ। আব্বা ঈদের আগের দিন আমাদের নিজের বাসা থেকে আসার পথে রাস্তায় পড়ে গিয়ে অনেক ব্যথা পেয়েছে। তার হাটাচলায় বেশ কষ্ট। আর সেই কষ্টের জন্য সে হাটতে পারে না। এই দিকে দিনের পরদিন হওয়ায় ডাক্তার পাওয়াও মুশকিল।
এই দিকে দুপুরে ভাইয়ের বাসায় দাওয়াত। তো আমরা সবাই গেলাম আব্বা কে রিক্সা করে নিয়ে গেলাম। দাওয়াত খেয়ে যখন বাসায় ফিরলাম তখন যেন আমাদের বাসা শুধুই ঝুলছে। আমরাও ঝুলছি। সেই সাথে ঝুলছে আমাদের সব আসবাবপত্র। আমরা তো বেশ ভয় পেয়ে গেলাম। কি করবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। আববা বললো একটু কিনারে গিয়ে ঘরের ভিম ধরে দাড়িয়ে থাকতে। আমরা তো সবাই কান্নাকাটি। আব্বা জোড়ে জোড়ে পড়ছিল- লা ইলাহা ইল্রা আন্তা সোবহানাকা ইন্নিকুনতু মিনাজ জোয়ালেমিন। সেই সাথে আমরাও পড়তে লাগলাম। কি যে ভয় লেগেছিল সে সময়ে।
তো কিছু সমযের মধ্যে ভূমিকম্প থেকে গেল। জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে দেখি যে মানুষ আর মানুষ। রাস্তায় সব মানুষ নেমে গেছে। সবাই কেবল আল্লাহকে ডাকছে আর চিল্রাচিল্লি করছে। আমরা আর নিচে নামলাম না। কারন আব্বাকে এমন অবস্থায় ছেড়ে দিয়ে আমরা কখনওই নিচে নামবো না। যা হবার হবে। মরলে এক সাথে মরবো, আর বাচঁলে এক সাথে বাচঁবো। তাই আমরা সবাই এক সাথেই উপরে রয়ে গেলাম। কিন্তু এরকিছু সময় পর সবাই যার যার মত করে বাসায় চলে গেল।
কিন্তু বিষয় হলো সে বার সেদিনের পর প্রতিদিন প্রায় একই সময়ে ভূমিকম্প হয়েছিল। আর প্রতিদিন মানুষ দৌড়ে নিচে নেমে আসতো। আমরাও আসতাম। আর আব্বা কে সবাই মিলে কুলে করে নামাতাম। কি যে ভয়ম্কর দিন ছিল সেদিনগুলো সেটাই বুঝিয়ে বলা যাবে না। ভূমিকম্প যে এক আতংকের বিষয় সেটা আমরা সবাই জানি। আর সেই ছোট বেলা হতেই আমি ভূমিকম্পকে বেশ ভয় পাই। তাই ভাবলাম যে আমার ছোট বেলার ভূমিকম্প দেখার কিছু স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
আশা করবো আমার আজকের পোস্টটি আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে। আপনাদের মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।
কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের শেয়ার করা পোস্ট। আশা করবো আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
আমার পরিচিতি
আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।



