শৈশবের স্মৃতি- শৈশবের শীত আর মায়ের আদর
আসসালামু আলাইকুম
*
কেমন আছেন আমার প্রিয় ও সহযাত্রী সকল ভাই ও বোনেরা। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন।আজ আবারও হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সবার অতি নিকটে। ফেলে আশা অনেক স্মৃতির মাঝ থেকে কিছু স্মৃতি নিয়ে। আমাদের চলার পথে জীবনে সুখ দুঃখ কতো স্মৃতি জড়িয়ে আছে।সেই শৈশব থেকে শুরু করে মৃতুর আগ পর্যন্ত স্মৃতিগুলো যেন চোখে ও মনের মনি কোঠায় ভেসে বেড়ায়। আর তার মধ্যে জীবনে এমন অনেক ঘটনা থাকে যা কখনও ভোলা যায় না।

প্রতিটি মানুষের জীবনে শৈশব হলো এক অনন্য সময়, এক সত্যিকারের স্বর্ণযুগ। আমরা যত বড়ই হই না কেন, আমাদের শৈশবকে কখনও ভুলতে পারি না। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে, প্রতিটি সুখ-দুঃখের মুহূর্তে শৈশব যেন ফিরে আসে মধুর স্মৃতির পরশ নিয়ে। কখনও মনে হয়, যদি আবার সেই দিনগুলোয় ফিরে যাওয়া যেত, যেখানে ছিল নিঃস্বার্থ হাসি, খেলাধুলা আর নির্ভেজাল আনন্দে ভরা দিনরাত্রি। কিন্তু সময়ের টানে, জীবনের বাস্তবতায় আমাদের সবাইকেই ফিরে আসতে হয় বর্তমানে। তবুও হৃদয়ের এক কোণে শৈশবের আলো, সেই নির্ভার সময়গুলোর স্মৃতি আজও জ্বলজ্বল করে।
আসছে শীতকাল। আর শীতের এই আগমনী বার্তায় বার বার চোখে ভাসে সেই ছেলেবেলার দিনগুলি। কতই না আনন্দ ছিল ছেলেবেলার সেই সময়। আজও মনের আনাচে কানাচে বেজে উঠে শৈশবের সেই ধনি। শীত আসার আগেই শীতের নতুন পোশাকে বেশ দারুন কিছু শীতের পোশাক চলে আসতো বাসায়। আর শীতের সেই পোশাক পেয়ে আমরাও বেশ আনন্দ পেতাম। বার বার সেই নতুন পোশাক পড়ে সবাই কে দেখাতাম। শীতের পোশাক আর সারাদিনেও সরানো হতো না গা থেকে।
যেহেতু শীতকাল আসলেই স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত, তাই শীতের সময়টা কেটে যেত বেশ দূরন্ত পানায়। সারাদিন তেমন কোন খবর থাকতো না। সারাদিন বন্ধুদের সাথে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতাম। কখন পতুলের বিয়ে নিয়ে। আর কখনও বা জোলাভাতি নিয়ে সময় পার হয়ে যেত। আর দুপুর গড়িয়ে আসলে মায়ের শুরু হয়ে যেত খোঁজাখুজিঁ। এখানে সেখানে খুঁজতে খুঁজতে মা যখন হাতের কাছে পেয়ে যেত তখন সে কিযে বকা। জোড় করে টেনে নিয়ে গোসল করার জন্য নিয়ে যেত।
আর গোসল করতে গিয়ে পড়তে হতো আর এক যন্ত্রণায়। মা নিজের হাতে সাবান আর মাঝুনী দিয়ে জোড়ে জোড়ে ডলে ডলে গোসল করিয়ে দিত। এক ডলাতে মনে হতো যেন শরীরের চামড়া আর দেহে নেই। মনে হতো যেন চামড়া ছিড়ে যেত। আর মা তখন বকা দিয়ে বলতো অসভ্য পোলাপান, প্রতিদিন গোসল করালেও গা দিয়ে ময়লার ঢেকি বের হয়। সে কি যে বকাবকি করতো মা। শীতের পানি যখন গায়ে পড়তো তখন তো শীতে কাবু হযে যেতাম। আর তখন মা কে বলতাম আর পানি দেওয়া লাগবে না। হইছে তো।
এরপর মা কতকিছু যে গায়ে মেখে দিয়ে রৌদে নিয়ে বসিয়ে দিতো। মায়ের আদরের সেই দিনগুলো আসলে জীবন থেকে কখনও মুছে ফেলার নয়। নয় ভুলে যাওয়ার। মায়ের আদর যেন শীতে ছোঁয়া। সারাদিনের ক্লান্তি ভুলে মাযের কখনওই ক্লান্ত লাগতো না। শীতের দিনের রাত ছিল বেশ মজাদার। আমদের জন্য কত রকমের পিঠা যে বানানো হতো। শীত আসলে মাকে দেখতাম বড় বড় বল ভয়ে চাল গুড়া করতো। আর সেই গুড়া চাল দিয়ে প্রায় প্রতিদিন রাতেই এক এক রকমের পিঠা বানানো হতো। আজও মনে পড়ে ছেলেবেলার সে পিঠার কথা।
নারকেল দিয়ে বানানো হতো বাপা পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, দুধকুলি পিঠা, কুলিপিঠা ভাপা, আর বড় বড় চিতই পিঠা বানিয়ে সে গুলো আবার ভিজানো হতো গুড়ের সরের মধ্যে। আমার তো সে সব কথাগুলো বারে বারে মনে পড়ে। মনে পড়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখা চিতলই পিঠা সকালের নাস্তা খাওয়ার কথা। মায়ের হাতের শীতের দিনের এমন দারুন মজাদার পিঠা আর পায়েস আজ আর ভাগ্যে জুটে না। জুটে না মায়ের ছুয়েঁ দেওয়া পিঠাগুলো।
শীত আসলে আমাদের জীবনে আসে অনেক স্মৃতি নিয়ে। ছেলেবেলায় শীতের দিন মানেই ছিল ছুটি আর আনন্দে ভরপুর। ছিল খেলাধুলা আর কিছুটা স্বস্থির দিন। ছিলনা পড়াশুনার কোন চাপ। ছিল না, কারও বারন আর শাসন। কত রকমের খেলাই না খেলতাম শীতের সেই ছুটির দিন গুলোতে। সন্ধ্যার পর মাঠে বাতি জ্বালিয়ে খেলা হতো রেকেট যাকে সবাই বলে ব্যাডমিল্টন। আরও কত রকমের ছেলেবেলার স্মৃতির দিনগুলো যে ছিল। আজ শীত আসার সময় আমার সে দিন গুলো মনে পড়ে গেল। মনে পড়ে গেল হাজারও স্মৃতি ভরা ছেলেবেলার সময়গুলো। আমার মত করে আপনাদের কার কার এমন সুন্দর ছেলেবেলাকেটেছে সেটা জানাতে ভুলবেন না যেন।
কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের শেয়ার করা ভ্রমণ পোস্ট। আশা করবো আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
আমার পরিচিতি
আমি মাহফুজা আক্তার নীলা । আমার ইউজার নাম @mahfuzanila। আমি একজন বাংলাদেশী ইউজার। আমি স্টিমিট প্লাটফর্মে যোগদান করি ২০২২ সালের মার্চ মাসে। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যোগদান করে আমি অরেনেক বিষয় শিখেছি। আগামীতে আরও ভালো কিছু শেখার ইচ্ছে আছে। আমি পছন্দ করি ভ্রমন করতে, ছবি আঁকতে, বিভিন্ন ধরনের মজার মাজার গল্পের বই পড়তে, ফটোগ্রাফি করতে, ডাই প্রজেক্ট বানাতে ও আর্ট করতে। এছাড়াও আমি বেশী পছন্দ করি মজার রেসিপি করতে। মন খারাপ থাকলে গান শুনি। তবে সব কিছুর পাশাপাশি আমি ঘুমাতে কিন্তু একটু বেশীই পছন্দ করি।



